Thursday, April 10, 2025

Blog Archive

Total Pageviews

1,692

Disqus Shortname

designcart

Breaking News

PageNavi Results No.

Widget Random Post No.

Comments system

[blogger][disqus][facebook]

Labels Max-Results No.

Monday, 13 April 2020

করোনাভাইরাস কোভিড-১৯: ইসলামের আলোকে মুসলিম উম্মাহর দ্বীনী-দুনিয়াবী দায়িত্ব-কর্তব্য

Image result for bismillahir ramanir rahim

নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লি আলা- রসুলিহিল কারিম,
ম্মা বাদ।

أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيم

بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ

প্রথম অধ্যায়
করোনাভাইরাস কোভিড-১৯:
ইসলামের আলোকে  মুসলিম উম্মাহর দ্বীনী-দুনিয়াবী দায়িত্ব-কর্তব্য
(CoronaVirus Covid-19: Responsibilities of
Muslim Ummah in Light of the Islam)
                                                        -শেখ মুহাম্মাদ রমজান হোসেন
নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লি আলা- রসুলিহিল কারিম,
ম্মা বাদ।

আল কুরআনের আলোকে করোনাভাইরাস-COVID-19
(CORONAVIRUS-COVID-19: In light of Al Quraan)



41. ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
) [স্থলে ও পানিতে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চানযাতে তারা (আল্লাহর দিকে) ফিরে আসে]
Mischief has appeared On land and sea because Of (the meed) that the hands Of men have earned, That (God) may give them A taste of some of their Deeds : in order that they May turn back (from Evil). (Al Quran: Surah Rome: 30:41)]
وَمَا أَصَابَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ

২) [তোমাদের জীবনে যে বিপদ-আপদ ঘটে তা তো তোমাদের কৃতকর্মেরই ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তো আপনা থেকে তিনি এমনিই ক্ষমা করে দেন” (সূরাহ আশ শুরাহআয়াতঃ ৩০)]
[Whatever misfortune Happens to you, is because of the things your hands have wrought and for many (of them) He grants forgiveness (Surah as-Shura - Verse 30).

 وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ

[Be sure We shall test you with something of fear and hunger some loss in goods or lives or the fruits (of your toil) but give glad tidings to those who patiently persevere]

৩) [এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভীতি, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের" (সুরাহ বাক্বরাহঃ আয়াত ১৫৫)]

ইসলামের আলোকে  মুসলিম উম্মাহর দ্বীনী দায়িত্ব-কর্তব্য

তোমরা বাঁচ, তোমাদের আহলদেরকেও বাঁচাও (জাহান্নামের অআজাব থেকে) (আল কুরআন)

দুআঃ করোনা থেকে আত্মরক্ষার প্রথম ও প্রধান করণীয়ঃ

আল হাদীস

اللَّهمَّ إِنِّي أَعُوُذُ بِكَ مِنَ الْبرَصِ، وَالجُنُونِ، والجُذَامِ، وسّيءِ الأَسْقامِ

১) “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউ'যুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনু-নি, ওয়াল জুযা-মি, ওয়ামিন সাইয়্যিল আসক্ব-ম

হে আল্লাহ ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই শ্বেত, উন্মাদনা, কুষ্ঠ এবং সমস্ত দুরারোগ্য ব্যাধি হতে” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৫৪)

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَ الْاَدْوَاءِ
(তিরমিজি)

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুনকারাতিল আখলাক্বি ওয়াল আমালি ওয়াল আহওয়ায়িওয়াল আদওয়ায়ি।


অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার কাছে খারাপ চরিত্রঅন্যায় কাজ ও কুপ্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং অসুস্থতা ও নতুন সৃষ্ট রোগ বালাই থেকে আশ্রয় চাই।


হে আল্লাহআমাদের তাওবা কবুল করে হেফাজত করুন :


হারামাইন শারিফাইনের মুহতারাম গ্র্যান্ড ইমামের 
মহান আল্লাহতা'য়ালার নিকট হৃদয়গ্রাহী ফরিয়াদ

শায়খ ড. আব্দুর রহমান সুদাইসি। মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববির প্রধান ইমাম তিনি। দিন দিন পবিত্র ক্বাবা  ও মসজিদে নব্বী মুসল্লিহীন হয়ে যাওয়ায় আগেবপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তার আবেগমাখা নিম্নোক্ত দোয়া-মুনাজাত সবার হৃদয়কে নাড়া দিয়েছেঃ 
''হে আল্লাহ! আপনার ঘর থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করবেন না। হে আল্লাহ! আমাদের পাপের কারণে পবিত্র মসজিদের নামাজের জামাআত থেকে বঞ্চিত করবেন না। হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমাদের আবার ফিরিয়ে নিন। হে আল্লাহ! আমাদের তাওবা কবুল করুন। হে আল্লাহ! আমাদের এবং মুসলিম উম্মাহকে সব ধরনের মহামা'রি ও দু'রারো'গ্য ব্যা'ধি থেকে হেফাজত করুন।''
কাবা শরিফের প্রধান ইমাম শায়খ আব্দুর রহমান আস-সুদাইসির আবেগঘন এ আহ্বান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এভাবেই ওঠে এসেছে। আল্লাহর কাছে তিনি আরও আহ্বান করেন- ''হে আল্লাহ! মুসিবত দিন দিন ক'ঠিন থেকে ক'ঠিন হচ্ছে। চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। তুমি ছাড়া আমাদের ফরিয়াদ শোনার আর কেউ নেই হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া আর কে আছে?''
''হে আল্লাহ! যার কাছে আমরা সাহায্য চাইব। হে আল্লাহ! আমাদের এ অবস্থার ওপর দয়া করুন। আমাদের অক্ষমতাগুলো দূর করে আমাদের ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তুমিই আমাদের অভিভাবক।'' শায়খ সুদাইসি আবেগঘন সেরা যে আবেদনে মুসলিম হৃদয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে তাহলো- ''হে আল্লাহ! এ বিপদ মহামা'রির কারণে তোমার ঘরে যেতে না পারার ব্যথা আর সইতে পারছি না। হে মহান শক্তিমানদয়া করে এই মহামা'রি দূর করে দাও।''
এদিকে কাবা শরিফের আজান পরিবর্তন সম্পর্কে টুইটে তিনি আরও লেখেন, ''আজ থেকে আমরা মুয়াজ্জিনকে এ শব্দ বলতে শুনবো যে, 'সাল্লু ফি রিহালিকুম'। অর্থাৎ নিজ নিজ জায়গায় নামাজ পড়ে নাও।''
মসজিদে নব্বী (সা) এর  মিম্বর থেকে করোনা বিষয়ে শাইখ সুদাইসের বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ'র দিক-নির্দেশনামূলক মূল্যবান উপদেশাবলী
১৩ই শাবান১৪৪১ হিজরী মোতাবেক ৬ এপ্রিল২০২০ রোজঃ সোমবার পবিত্র মক্কা মুয়াজ্জিমা ও মদিনা মুনওয়ারা বিষয়ক অধিদফতরের প্রেসিডেন্ট ও মসজিদুল হারামের খতিব শাইখ ড. আব্দুর রহমান সুদাইস মদিনার মসজিদে নববীতে এশার নামাজের ইমামতি করেন। নামাজের পর তিনি বর্তমান করোনা বিপ'র্যস্ত বিশ্বের পরি'স্থিতিকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ নিম্নোক্ত কিছু বিষয়ে আলোকপাত করেন যা মুসলিম উম্মাহর জন্য দিক-নির্দেশনামূলক বটেঃ 
"বর্তমান বিশ্বের সং'কটময় পরি'স্থিতি সম্পর্কে আপনারা সকলেই অবগত আছেন। সারা বিশ্ব আজ ধেয়ে আসা একটি মহাবি'পদে আপতিত হয়েছে। নিঃস'ন্দেহে এটি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য এক মহাপরীক্ষা। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনআর অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো কিছুটা ভ'ক্ষু'ধামাল ও জানের ক্ষ'তি ও ফল-ফসল বিন'ষ্টের মাধ্যমে। (সূরা বাকারা-১৫৫)
দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছেআমাদের হারামাইনের এই পবিত্র ভূমিও আজ এ মুসিবতের অনুপ্রবেশ ও বিস্তার থেকে মুক্ত নয়। এই মুহূর্তে আমাদের সবাইকে আল্লাহর ফায়সালা ও সিদ্ধান্তের ওপর সন্তুষ্ট থাকাই বা'ঞ্ছনীয়। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেনআমি প্রত্যেক বস্তুকে পরি'মিতরূপে সৃষ্টি করেছি। (সূরা আল ক্বমার- ৪৯)
যে কোনো মুসিবত আল্লাহর নির্দে'শে আপতিত হয়। যেগুলো তার মহিমান্বিত বাণীতে সুবিদিত হয়েছেআল্লাহ্ ইরশাদ করেনপৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বি'পদ আসে নাকিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। (সূরা হাদীদ- ২২) শুনে রেখ! তারই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহবরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক। (সূরা আরাফ- ৫৪)
তাই'দ্ভূত পরি'স্থিতিতে সবার উচিত আল্লাহর প্রতি ঈমানকে দৃঢ় করা এবং তার ওপর ইতিবাচক ধারণা পোষণ করা। আল্লাহ আমাদের বরকতদাতাতিনিই মহান। সঙ্গে এই বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করা উচিত যেআল্লাহর দিকে একনিষ্ঠ রূপে ফিরে যাওয়া ব্যতীত আমাদের আর কোন গন্তব্য নেই। সমগ্র মুসলিম জাতির কর্তব্য হল এ ভাইরাস থেকে রেহাই পেতে সুর'ক্ষার যাবতীয় উপায় অবলম্বন করা এবং এটিকে প্রতিরো'ধে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া। 
হারমাইনের পবিত্র এই দেশটিও শরীয়তের মূলনীতি বিবেচনায় নানা ব্যবস্থা অবলম্বন করেছে। মনে রাখতে হবেপ্রতিকারের চেয়ে প্রতির'ক্ষাই উত্তম। সবমিলিয়ে নিজেদের সুস্থতার প্রতি সচেতন হতে হবে। কেননা আমরা আমাদের স্বাস্থ্য সুর'ক্ষার বিষয়ে প্রত্যেকই যার যার স্থানে দায়িত্বশীল। নিজেদের অধীনস্থদের বিষয়ে আমরা নিজেরা প্রশ্নের সম্মুখীন হবো। তাই প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করা উচিত। এটিই শরীয়তের দাবি।
কোয়ারেন্টিনের এই উদ্ভাবন শরীয়তের আলোকেই সাব্যস্ত। আল্লাহ বলেনআর তোমরা তোমাদের নিজেদের ধ্বং'সের দিকে ঠেলে দিও না। (সূরা বাকারা-১৯৫) অন্যত্র আল্লাহ বলেনতোমরা নিজেদের কাউকে হ'ত্যা করো না। নিঃ'সন্দেহে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা- ২৯)
আর আমরা কোনো ধরণের গু'জব ও অ'পপ্রচারে কান না দিয়ে নিজেদের মাঝে আশাবাদের জাগরণ সৃষ্টি করব। ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই এই শ'ঙ্কা কেটে যাবে। তাই আমাদের জন্য উচিত হল অধিক পরিমাণে দোয়ায় মনযোগী হওয়া। কেননা এটি মুমীনের হাতিয়ার। আল্লাহ বলেনতোমাদের পালকর্তা বলেনতোমরা আমাকে ডাকআমি তাতে সাড়া দেবো। (সূরা মুমিন-৬০)
আর আমাদের আল্লাহর কাছে অনুনয়-বিনয় করা উচিত। আল্লাহর ইরশাদআর আমি আপনার পূর্ববর্তী উম্মতদের প্রতিও পয়গাম্বর প্রেরণ করেছিলাম। অতঃপর আমি তাদেরকে অভাব-অনটন ও রোগ-ব্যাধি দ্বারা পাকড়াও করেছিলামযাতে তারা কাকুতি-মিনতি করে। এরপর তাদের কাছে যখন আমার আজাব আসলোতখন কেন কাকুতি-মিনতি করলো না? (সূরা আনআ'ম- ৪২-৪৩)

আর এটি সুবিদিত এবং পৃথিবীর চিরাচরিত নিয়ম যেমুসিবতে আল্লাহমুখী হলে তা তিনি দূরীভূত করে দেন। আর আমরা এখন মহিমান্বিত রমজানের একেবারে দ্বারপ্রান্তে। তাওবা ও ইস্তেগফারের মধ্য দিয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া এবং আগত মাসকে বরণ করে নেয়া এখন আমাদের প্রধান কাজ''।  
শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০, ০৮:৪৬:৪৬

মহানবীর স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র নগরী মদিনাকে করোনা মুক্ত ঘোষণা

মহানবীর স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র নগরী মদিনাকে করোনা মুক্ত ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্মৃতি বিজড়িত শহর পবিত্র নগরী মদিনা মুনাওয়ারা। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ পবিত্র শহরকে কভিড-১৯ তথা করোনা ভাইরাস মুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক গণমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে এ সুখবর দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার করোনামুক্ত ঘোষণা করার আগে মদিনা মুনাওয়ারার আল-আইস শহরে ১৩ জন কভিড-১৯ রোগী ছিলেন। তারা সবাই এখন সুস্থ হয়েছেন। নবীর শহর মদিনায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করেন।

সৌদি সরকার হারামাইন ওয়াশ শরিফাইন খ্যাত পবিত্র দুই নগরী মক্কার মসজিদে হারাম তথা কাবা শরিফ এবং মদিনার মসজিদে নববির নিরাপত্তায় শুরু থেকেই ব্যা'পক কর্মসূচি গ্রহণ করে। নিরাপত্তার লক্ষ্যে এ দুই পবিত্র শহরে ওমরাহ ও জেয়ারত পুরোপুরি নি'ষি'দ্ধ করে দেয়া হয়।

তবে এখনো ব্যতি'ক্রম পবিত্র নগরী মক্কা ও মক্কার মসজিদে হারাম তথা কাবা শরিফ। এ নগরীতে এখনো চলছে কারফিউ। মহামা'রি করোনা ভাই'রাসের সং'ক্র'মণের ঝু'কি কমাতে এখনো সেখানে কারফিউ বলবৎ রয়েছে।

মহামা'রি করোনার প্রাদু'র্ভাব ঠে'কাতে সৌদি আরব সরকার এবারের হজ সীমিত পরিসরে করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বছর সৌদি আরবের বাইরে থেকে কেউ হজে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। স্থানীয় সৌদি ও সৌদি বসবাসরত বাইরের দেশের লোকজনই শ'র্তসাপেক্ষে এবার হজে অংশগ্রহণ করত পারবে।

এ ছাড়াও করোনার কারণে দীর্ঘ'দিন স্থবির থাকা সৌদি আরবের বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দেশটির সরকার নানা পরিক'ল্পনা গ্রহণ করেছে। সূত্র : গালফ নিউজ।


করোনা ভাইরাস থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সতর্কতার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জনেরও পরামর্শ সৌদির শীর্ষ আলেমদের
শনিবার, ২৭ জুন, ২০২০, ০৮:৪৪:২২

করোনা মুক্ত হলো মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র মদিনা

করোনা মুক্ত হলো মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র মদিনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) স্মৃতি বিজড়িত শহর পবিত্র নগরী মদিনা মুনাওয়ারা। সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ পবিত্র শহরকে কভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাস মুক্ত বলে ঘোষণা দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে এ সুখবর দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার করোনামুক্ত ঘোষণা করার আগে মদিনা মুনাওয়ারার আল-আইস শহরে ১৩ জন কভিড-১৯ রোগী ছিলেন। তারা সবাই এখন সুস্থ হয়েছেন। নবীর শহর মদিনায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করেন।

সৌদি সরকার হারামাইন ওয়াশ শরিফাইন খ্যাত পবিত্র দুই নগরী মক্কার মসজিদে হারাম তথা কাবা শরিফ এবং মদিনার মসজিদে নববির নিরাপত্তায় শুরু থেকেই ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। নিরাপত্তার লক্ষ্যে এ দুই পবিত্র শহরে ওমরাহ ও জেয়ারত পুরোপুরি নি'ষিদ্ধ করে দেয়া হয়।

তবে এখনো ব্যতিক্রম পবিত্র নগরী মক্কা ও মক্কার মসজিদে হারাম তথা কাবা শরিফ। এ নগরীতে এখনো চলছে কারফিউ। মহামা'রি করোনাভাইরাসের সং'ক্রমণের ঝু'কি কমাতে এখনো সেখানে কা'রফিউ বলবৎ রয়েছে।

মহামা'রি করোনার প্রাদুর্ভাব ঠে'কাতে সৌদি আরব সরকার এবারের হজ সীমিত পরিসরে করার চূ'ড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বছর সৌদি আরবের বাইরে থেকে কেউ হজে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। স্থানীয় সৌদি ও সৌদি বসবাসরত বাইরের দেশের লোকজনই শর্তসাপেক্ষে এবার হজে অংশগ্রহণ করত পারবে।

এ ছাড়াও করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্থবির থাকা সৌদি আরবের বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দেশটির সরকার নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
সূত্র- গালফ নিউজ।


ইসলাম ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘা'তি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য সুর'ক্ষায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জনেরও পরামর্শ দিয়েছেন সৌদির শীর্ষ আলেমরা। করোনা পরি'স্থিতিতে হজ-ওমরা বন্ধসহ সামগ্রিক পরি'স্থিতি নিয়ে গত ৭ এপ্রিল, ২০২০ মঙ্গলবার সৌদি আরবের শীর্ষ আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ডের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 
এতে করোনা মহামারী থেকে নিজেদের সুর'ক্ষায় মুসলমানদের প্রতি কিছু নির্দে'শনা তুলে ধরা হয়। সৌদির শীর্ষ আলেমরা বলেনসব মুসলিমদের এই মুহুর্তে করণীয় হলআধ্যাত্মিকভাবে নিজেদের শ'ক্তিশালীকরণে যাবতীয় উপায় অবলম্বন করা। পাশাপাশি নিজেদের স্বাস্থ্য সুর'ক্ষায় সত'র্কতামূলকভাবে উপায় অবলম্বন করা। যা সব মুসলমানের জন্য অবশ্য পালনীয়।
তারা বলেনআধ্যাত্মিক উপায় অবলম্বনের শুরুটা হলআল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখা এবং উ'দ্ভূ'ত যে কোন পরি'স্থিতিতে আল্লাহর সিদ্ধান্ত ও ফায়সালাকে মেনে নেয়া। তার প্রতি সুধারণা পোষণ করা। কারণমুমিনের অন্তর যখন ঈমানী আলোয় পূর্ণ থাকেতখন তার মন প্রশান্ত থাকেথাকে অবি'চল। আর সে এই বিশ্বাস রাখেযা কিছুই ঘটছেসবকিছুই আল্লাহর একক সিদ্ধান্তে ও ইচ্ছায়। 
মনে করেএসব মহামা'রী ও দুর্যো'গ আমাদের জন্য বড় এক পরীক্ষাযার উপর ধৈ'র্যধা'রণে প্রতিদান পাওয়া যায় এবং সওয়াবের আশা করা হয়। শীর্ষ আলেদের বৈঠকে আরো বলা হয়এই শ'ঙ্কা ও মুসিবত কাটিয়ে ওঠার আরেকটি উপায় হলনিজেদের সুর'ক্ষায় সত'র্ক'তামূলকভাবে যথাসম্ভব ব্যবস্থা অবলম্বনের পাশাপাশি নিয়তের স্বচ্ছতা অবলম্বন করাযা আধ্যাত্মিক উপায় অবলম্বনের অন্যতম মাধ্যম। 
এটি মূলত আল্লাহর নির্দে'শ পালনেরই অংশ বিশেষ। আমাদের নিজেদের প্রতি যত্নবান হতে শরীয়তেরও সুস্পষ্ট নির্দে'শনা রয়েছে। পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি মানুষকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দেয়া হতে সত'র্ক থাকা উচিত। সূত্র : আল আরাবিয়া

মহান আল্লাহর সাহায্য কামনার এখনিই সময়
Image may contain: one or more people, text that says "হে আল্লাহ জানিনা আর কত দিন বাঁচবো তবে জীবনের অবশিষ্ট দিন গুলো যেন তাকওয়া এবং নেক আমল করার তাওফিক দান করুন"
 
পবিত্র কুরআনের আলোকে দু'
(Dua: in light of Al Quran)

أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيم

بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ

وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ

[অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয়, ক্ষুধা এবং জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতি এবং ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে ধৈর্যধারণকারীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ (সূরাহ বাক্বরাহ, আয়াতঃ ১৫৫)]

1.[Be sure We shall test you with something of fear and hunger some loss in goods or lives or the fruits (of your toil) but give glad tidings to those who patiently persevere (Surah: Al Baqorah, Ayat # 155, Translated by Abdullah Yusuf Ali) ]


وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ 
[তোমরা আমাকে ডাকো,আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব (সূরাহ আল মুমিন, আয়াত:৬০)]  

2.[And your Lord says: “ Call on Me ; I Will answer your (Prayer) : (Surah Al Mumin, Ayat #:60)]


وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ

[আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে আমার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেতখন বলে দাও যে,আমি তাদের অতীব নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর আহবানে সাড়া দিয়ে থাকিযখন সে আমাকে আহবান করে। অতএব তারা যেন আমার আদেশ সমূহ পালন করে এবং আমার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে। যাতে তারা সুপথ প্রাপ্ত হয়। (বাকারাহ ২/১৮৬)].

3.[When my servants ask thee concerning Me I am indeed close (to them); I listen to the prayer of every suppliant when he call on Me; let them also with a will listen to My call and believe in Me; that they may walk in the right way (Surah Al Baqorah, Ayat #:186)].

আল হাদীসের আলোকে দুআ-দরুদ

(Doa: In light of Al Hadith)
الدعاء مخ العبادة
 [দোয়া ইবাদতের মগজ (তিরমিজি)]
1.     [Doa is the Brain of Worship (Tirmizi).

لَيْسَ شَىْءٌ أَكْرَمَ عَلَى اللهِ سُبْحَانَهُ مِنَ الدُّعَاءِ
[রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,মহান আল্লাহর নিকট দোয়ার চাইতে অধিক মর্যাদাপূর্ণ বিষয় আর কিছু নেই।(তিরমিযীইবনু মাজাহহাদীছ হাসানমিশকাত হা/২২৩২, 'দো'আ সমূহ)]
2.      [Rasoolullah Sawllallahu ‘Alyhi Wasallam said, "There is nothing more honorable than the blessing to Allah, the Great." (Tirmiji, Ibnu Majah, Mishkat Ha/2232)].
من لم يسئل الله يغضب عليه
 [হজরত আবু হুরায়রা (রদ্বিয়াল্লাহু আনহু.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনযে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কিছু চায় নাআল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন। (তিরমিজিখণ্ড: ৫পৃষ্ঠা: ৪৫৬হাদিস নম্বর: ৩৩৭৩)]
1.      [Narrated by Hazrat Abu Hurairah Radiallahu ‘Anhu, Rasoolullah Sawllallahu ‘Alyhi Wasallam said, Allah Ta'ala  angry with him,  who does not ask to Allah (Tirmiji, Volume: 5, Page:456. Hadith # 3373)].


من سره ان يستجيب الله له عند الشدائد و الكرب فليكثر الدعاء فى الرخاء . ترمذى
 [যে ব্যক্তি চায় যেবিপদের সময় তার দোয়া কবুল হোকতাহলে সে যেন সুখে দুখে সর্বাবস্থায় বেশি বেশি দোয়া করে। (তিরমিজি)]
4. [If a person wants to accept his blessings in his critical times, may he always pray more and more in his happiness time (Tirmiji)].

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতোমাদের মধ্যে যার জন্য দোয়ার দ্বার খোলা হয়েছে (অর্থাৎ যার দোয়া করার তাওফিক হয়েছে)তার জন্য রহমতের দ্বার খোলা হয়েছে। আল্লাহর কাছে যেসব দোয়া চাওয়া হয়,তন্মধ্যে তাঁর কাছে সর্বাধিক পছন্দীয় হলো "আফিয়াত"অর্থাৎ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করা। (জামে তিরমিজিখণ্ড: ৫পৃষ্ঠা: ৫৫২হাদিস নম্বর: ৩৫৪৮)।
5) [Narrated from Hazrat Abdullah bin Umar Radiallahu 'Anhu, Rasulullah Sawllallahu 'Alyhi Wasallam said, “for whom have opened the door of blessing, the door of mercy has been opened for them and among the blessings that are asked to Allah, the most choose able   to Him (Allah) is “Afiyat” i.e., praying for safety and health (J’ame Tirmiji, Volume: 5, Page:552, Hadith # 3548)].

করোনার দুঃসহ এই মুহুর্তে একটি অনন্য দু'
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَسْئَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِىْ دِيْنِى وَ دُنْيَاىَ وَ اَهْلِىْ وَ مَالِىْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দ্বীনি ওয়া দুনিয়ায়া ওয়া আহলি ওয়া মালি।
[অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়আমার পরিবার ও বিষয়-সম্পদে তোমার ক্ষমা ও নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি। (আবু দাউদমিশকাত)]

ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেনআল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তেনঃ

দোয়ার উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা, ইন্নীঁ আস‌্আলুকাল 'আফ্ওয়া ওয়াল 'আ-ফিয়াতা ফিদ্ দুন্ইয়া- ওয়াল আ-খিরাহ। আল্লা-হুম্মা, ইন্নীঁ আস্আলুকাল 'আফ্ওয়া ওয়াল 'আ-ফিয়াতা ফী দীনী ওয়া দুন্ইয়াই-য়া, ওয়া আহলী ওয়া মা-লী। আল্লা-হুম্মাসতুর 'আউরা-তী ওয়া আ-মিন রাউ'আ-তী। আল্লা-হুম্মাহ্ ফায্নী মিম্ বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খ্বলফী, ওয়া 'আন ইয়ামীনী ওয়া 'আন শিমালী, ওয়া মিন্ ফাওক্বী। ওয়া আ'উ-জু বি'আজামাতিকা আন উগতা-লা মিন্ তাহতি।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট চাই ক্ষমা ও সার্বিক সুস্থতা-নিরাপত্তা  দুনিয়াতে এবং আখেরাতে হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে চাই ক্ষমা ও সার্বিক সুস্থতা নিরাপত্তা আমার দীনের মধ্যে, আমার দুনিয়াবী বিষয়ের মধ্যেআমার পরিবার-পরিজনের মধ্যে ও আমার সম্পদের মধ্যে। হে আল্লাহ, আমার দোষ-ত্রুটিগুলি গোপন করুন এবং আমার ভয়ভীতিকে নিরাপত্তা দান করুন। হে আল্লাহ, আপনি আমাকে হেফাজত করুন আমার সামনে থেকে, আমার পিছন থেকেআমার ডান থেকে, আমার বাম থেকে এবং আমি আপনার মহত্ত্বের আশ্রয় গ্রহণ করছি যে, আমি আমার নিম্ন দিক থেকে আক্রান্ত হব

[আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই সকাল হলে ও সন্ধ্যা হলে এ কথাগুলি (উপরের দু'আটি) বলতে ছাড়তেন না। হাদীসটি সহীহ। (মুসনাদ আহমদ ২/২৫, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/১২৭৩, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৯৮, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩৮১-৩৮৩, সহীহুত তারগীব ১/৩৪৩, সহীহ মাসনূন ওযীফা, ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, পৃষ্ঠাঃ ৪৯)].

Abdullah ibn Umar (ra) said that the Messenger of Allah (never forgot to say the following words when morning and evening.

[[Oh Allah, I pray for your forgiveness and security in my religion and my earthly, my family and my wealth].

O Allah, I ask forgiveness to you and overall well-being in this world and in the Hereafter. O Allah, I ask forgiveness to you and overall well-being in my religion, in my worldly affairs, in my family and in my wealth. O Allah, hide my faults and protect my fears. O Allah, preserve me from my front, from my back, from my right, from my left and I take refuge in your greatness that I will be infected from my lower side].

 করোনা থেকে হেফাজতে দোয়ায়ে ইউনুস


যখন কোনো কওমের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা তা প্রকাশ্যেও করতে শুরু করে তবে তাদের মাঝে দুর্ভিক্ষ ও মহামারি ব্যাপক আকার ধারণ করেযা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে ছিল না।’ (ইবনু মাজাহআস সুনান : ৪০১৯)।

"করোনাভাইরাস কোভিড-১৯" আজ প্রায় গোটা বিশ্বকে মানব জাতির জন্য ইউনুস আলাইহিমুস সালাম-কে গ্রাসকৃত মাছের পেটের ন্যায় ভয়াবহ অবস্থায় পরিণত করেছে। "পৃথিবী" নামক এই মৎস্য উদরে থেকে আজ প্রায় ৮০০ কোটি বিশ্ববাসী করোনাভাইরাসের প্রহর গুনছে। একে "বিশ্ববিপদ" (World Hazard)  বলা যেতে পারে। এই মহাবিপদ থেকে মুক্তির জন্য আজ ইউনুস আলাইহিমুস সালামের পদাংক অনুসরণ ব্যতিত গত্যন্তর নেই। তাই আসুন, আমরা যার যখন, যতক্ষণ সময়-সুযোগ থাকে ততক্ষণ দোয়া ইউনুস পড়ি-যতদিন দেশে একজন করোনা রোগীও অবশিষ্ট থাকে।
ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ।
দোয়ায়ে ইউনুস
DUA YUNUS A.S - YouTube
لَّا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ 
উচ্চারণ: লা- ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নী কুনতু মিনাজ জোয়ালিমীন।
অর্থ: তুমি ব্যতীত কোনো উপাস্য নেইতুমি পবিত্র,  আমি গোনাহগার। -(সূরাহ আম্বিয়া : আয়াত :  ৮৭)

এই দোয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহতায়ালা বলেন,فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ وَكَذَلِكَ نُنْجِي الْمُؤْمِنِينَ 

 অতঃপর আমি তার (সেই) আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনিভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি। -সূরা আম্বিয়া : ৮৮


বিস্তারিত


وَذَا النُّونِ إِذ ذَّهَبَ مُغَاضِبًا فَظَنَّ أَن لَّن نَّقْدِرَ عَلَيْهِ فَنَادَىٰ فِي الظُّلُمَاتِ

أَن لَّا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ



আর স্মরণ করুনযুন-নূনকে (১)যখন তিনি ক্রোধ ভরে(২) চলে গিয়েছিলেন এবং মনে করেছিলেন যেআমরা তাকে পাকড়াও করব না (৩)। তারপর তিনি অন্ধকারে (৪) এ আহবান করেছিলেন যে আপনি ব্যতীত কোন সত্য ইলাহ নেইআপনি কতইনা পবিত্র ও মহাননিশ্চয়ই আমি যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছি (৫)


And Yunus, when he went away in wrath, so he thought that We would not straiten him, so he called out among afflictions: There is no god but Thou, glory be to Thee; surely I am of those who make themselves to suffer loss.


তাফসীর
[১] ইউনুস ইবনে মাত্তা আলাইহিস সালাম এর কাহিনী পবিত্র কুরআনের সূরা ইউনুসসূরা আল-আম্বিয়াসূরা আস-সাফফাত ও সূরা আল-কালামে বিবৃত হয়েছে। কোথাও তার আসল নাম উল্লেখ করা হয়েছেকোথাও যুননুন এবং কোথাও ছাহেবুল হূত উল্লেখ করা হয়েছে। নূন ও হূত উভয় শব্দের অর্থ মাছ। কাজেই যুন নুন ও সাহেবুল হূতের অর্থ মাছওয়ালা। ইউনুস আলাইহিস সালামকে কিছুদিন মাছের পেটে অবস্থান করতে হয়েছিল এই আশ্চর্য ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে যুন-নুন বা ছাহেবুল হূত শব্দদ্বয়ের মাধ্যমে ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিভিন্ন তাফসীরে এসেছে যেইউনুস আলাইহিস সালামকে মুসেলের একটি জনপদ নায়নুয়ার অধিবাসীদের হেদায়াতের জন্যে প্রেরণ করা হয়েছিল। তিনি তাদেরকে ঈমান ও সৎকর্ম করার দাওয়াত দেন। তারা অবাধ্যতা প্ৰদৰ্শন করে। ইউনুস আলাইহিস সালাম তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে আযাবের ভয় দেখিয়ে জনপদ ত্যাগ করেন। এতে তারা ভাবতে থাকে যে এখন আযাব এসেই যাবে। (কোন কোন বর্ণনা থেকে জানা যায় যে আযাবের কিছু কিছু চিহ্নও ফুটে উঠেছিল) তাই অনতিবিলম্বে তারা শির্ক ও কুফর থেকে তওবা করে নেয় এবং জনপদের সব আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা জঙ্গলের দিকে চলে যায়। তারা চতুষ্পদ জন্তু ও বাচ্চাদেরকেও সাথে নিয়ে যায় এবং বাচ্চাদেরকে তাদের মায়েদের কাছ থেকে আলাদা করে দেয়। এরপর সবাই কান্নাকাটি শুরু করে এবং কাকুতি-মিনতি সহকারে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে থাকে। জন্তুদের বাচ্চারা মা দের কাছ থেকে আলাদা করে দেয়ার কারণে পৃথক শোরগোল করতে থাকে। আল্লাহ্ তাআলা তাদের খাটি তাওবা ও কাকুতি-মিনতি কবুল করে নেন এবং তাদের উপর থেকে আযাব হটিয়ে দেন। এদিকে ইউনুস আলাইহিস সালাম ভাবছিলেন যেআযাব আসার ফলে তার সম্পপ্রদায় বোধ হয় ধ্বংস হয়ে গেছে । কিন্তু পরে যখন জানতে পারলেন যেআদৌ আযাব আসেনি এবং তার সম্প্রদায় সুস্থ ও নিরাপদে দিন গুজরান করছেতখন তিনি চিন্তান্বিত হলেন যেএখন আমাকে মিথ্যাবাদী মনে করা হবে। কোন কোন বর্ণনায় আছে যেতার সম্প্রদায়ের মধ্যে কেউ মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হয়ে গেলে তাকে হত্যা করার প্রথা প্রচলিত ছিল। এর ফলে ইউনুস আলাইহিস সালাম -এর প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখা দিল। তিনি সম্পপ্রদায়ের মধ্যে ফিরে আসার পরিবর্তে ভিনদেশে হিজরত করার ইচ্ছায় সফর শুরু করলেন। পথিমধ্যে একটি নদী পড়ল। তিনি একটি নৌকায় আরোহন করলেন। ঘটনাক্রমে নৌকা আটকে গিয়ে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হল। মাঝিরা বলল যেআরোহীদের মধ্যে একজনকে নদীতে ফেলে দিতে হবে। তাহলে অন্যরা ডুবে মরার কবল থেকে রক্ষা পাবে। এখন কাকে ফেলা হবেএ নিয়ে আরোহীদের নামে লটারী করা হলে ঘটনাক্রমে এখানে ইউনুস আলাইহিস সালাম এর নাম বের হল। এই লটারীর কথা উল্লেখ প্রসঙ্গে কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে লটারীর ব্যবস্থা করা হলে তার (ইউনুস আলাইহিস সালাম এর) নামই তাতে বের হয়।” [সূরা আস-সাফফাতঃ ১৪১] তখন ইউনুস আলাইহিস সালাম দাঁড়িয়ে গেলেন এবং অনাবশ্যক কাপড় খুলে নদীতে ঝাপিয়ে পড়লেন। এদিকে আল্লাহ তাআলা সবুজ সাগরে এক মাছকে আদেশ দিলে সে সাগরের পানি চিরে দ্রুতগতিতে সেখানে পৌছে যায় (ইবনে মাসউদের উক্তি) এবং ইউনুস আলাইহিস সালাম -কে উদরে পুরে নেয়। আল্লাহ তাআলা মাছকে নির্দেশ দেন যেইউনুস আলাইহিস সালাম এর অস্থি-মাংসের যেন কোন ক্ষতি না হয় সে তার খাদ্য নয়বরং তার উদর কয়েকদিনের জন্যে তার কয়েদখানা। [ইবন কাসীর] কুরআনের বক্তব্য ও অন্যান্য বর্ণনা থেকে এতটুকু জানা যায় যেআল্লাহ তাআলার পরিষ্কার নির্দেশ ছাড়াই ইউনুস আলাইহিস সালাম তার সম্প্রদায়কে ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। তার এই কার্যক্রম আল্লাহ তাআলা অপছন্দ করেন। ফলে তিনি অসন্তোষের কারণ হন এবং তাকে সমুদ্রে মাছের পেটে অবস্থান করতে হয়।
মাছের পেটের মধ্য থেকে সেখানে তো অন্ধকার ছিলইতার উপর ছিল সাগরের অন্ধকার ও রাতের অন্ধকার। [ইবন কাসীর] অথবা মাছের পেটের অন্ধকারসে মাছের পেট থেকে অপর মাছের পেটের অন্ধকার তার উপর রয়েছে সমুদ্রের অন্ধকার। [ইবন কাসীর] ইবন মাসউদ ও ইবন আব্বাস বলেনতাকে নিয়ে মাছটি সমুদ্রের গভীরে চলে গেলে সেখানে ইউনুস আলাইহিস সালাম পাথরের তাসবীহ শুনতে পেয়ে তাসবীহ পড়ার কথা স্মরণ করলেন। এবং তিনি সেই দোআটি করলেন। [ইবন কাসীর]
[৫] ইউনুস আলাইহিস সালামের দোআ প্রত্যেকের জন্যেপ্রতি যুগের ও প্রতি মকসুদের জন্যে মকবুল। হাদীসে এসেছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ মাছের পেটে পাঠকৃত ইউনুস আলাইহিস সালাম এর এই দোআটি যদি কোন মুসলিম কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যে পাঠ করেতবে আল্লাহ্ তাআলা তা কবুল করেন। ” [তিরমিযীঃ ৩৫০৫]


রোগ মুক্তিতে দোয়ায়ে আইয়ুব (আঃ)
(45
وَاسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلاَّ عَلَى الْخَاشِعِينَ

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও।’ (সূরাহ বাক্বরাআয়াত : ৪৫)
Nay, seek ((Allah)'s) help with patient perseverance and prayer.

আইউব (আঃ) ছিলেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশধর। হযরত ইসহাক (আঃ) এর  পুত্র  ঈসু ওরফে আদুম বংশে  আইউব (আঃ) এর জন্ম। 

মরু সাগর (ডেড সি বা মৃত সাগর) ও আকাবা উপসাগরের মধ্যবর্তী স্থানে আদমী জাতির বসবাস ছিল। অঞ্চলটির উত্তরে মরু সাগর ও ফিলিস্থীনদক্ষিণে আকাবা উপসাগর ও মাদইয়ানপশ্চিমে সাইনা উপত্যকাপূর্বে আরবের উত্তর সীমান্ত ও মাওয়াব’ অঞ্চল অবস্থিত।
হযরত আইউব (আঃ) আল্লাহর অত্যন্ত খাঁটি বান্দা ছিলেন। শয়তান তাকে দেখে হিংসা করতো। কারণ শয়তান বেহেশত থেকে বিতারিত হবার সময় আল্লাহর ইজ্জতের কসম খেয়ে বলেছিলেন যেআদম জাতির সকলকে সে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বে। আল্লাহ বলেছিলেন, “কিন্তু আমার প্রকৃত ঈমানদার বান্দাকে তুমি কখনও পথভ্রষ্ট করতে পারবে না। আইয়ূব (আঃ) কে দেখে শয়তান ফন্দি করে আল্লাহকে বললো, “আইয়ূব (আঃ) এর কোন অভাব নাইতাঁর শত পুত্রতিন কন্যা। আরামের জন্য তাকে তুমি অগনিত সম্পদ দিয়েছ তাইতো সে তোমার ভক্ত।

আল্লাহতায়ালা তখন আইয়ূব (আঃ) এর সমস্ত ধন-সম্পদপুত্র-কন্যা নিয়ে নিলেন। কঠিন পরীক্ষার মাঝে আইয়ূব (আঃ) পড়লেন। তাঁর সব স্ত্রী-কন্যা-পুত্রআত্মীয়-স্বজন সবাই তাঁকে ছেড়ে চলে গেলেন। শুধুমাত্র একজন স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে গেলেন না। ভীষন কষ্টের মাঝে থেকেও তিনি প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলেন। হে আল্লাহ’ উলঙ্গ অবস্থায় আমি মাতার গর্ভ হতে ভূমিষ্ট হয়েছি এবং উলঙ্গ অবস্থাতেই আবার ফিরতে হবে। আল্লাহ তুমিই সব দিয়েছআবার তুমিই সব নিয়ে নেবে। তুমি আমায় যখন যেভাবে রাখ সে অবস্থাতেই যেন ঈমান আমল ঠিক রেখে তোমার শুকরিয়া আদায় করতে পারিসে তৌফিক দিও।

শয়তান তখন বললো, “হে আল্লাহ মানুষের শরীরের উপর কষ্ট না এলে মানুষ আল্লাহকে ভোলে না। তাঁর অস্থি-মাংস বিপন্ন করো। দেখবে তখন সে তোমার অবাধ্য হবে।” আল্লাহর বিশ্বাস ছিল যেশয়তান তার খাঁটি বান্দার কখনই কিছু করতে পারবে না। তাই তিনি আইউব (আঃ) কে আবারো পরীক্ষায় ফেললেন।

এবারে আইয়ূব (আঃ) এর আপাদমস্তক ভয়ঙ্কর পোকা দ্বারা পূর্ণ করলেন। ভীষণ কষ্ট ও যন্ত্রণায় পতিত হলেন তিনি। তারপরেও আইয়ূব (আঃএক মুহুর্তের জন্যও সবর ভঙ্গ করেননি। তাঁর যত দুঃখ-কষ্ট বাড়লোতিনি তত বেশী বেশী আল্লাহকে ডাকতে লাগলেন। শত কষ্টের মাঝেও আল্লাহর বিরুদ্ধে একটি অক্ষরও তাঁর মুখ দিয়ে বের হলো না। বরংচ তিনি গভীর আশা ও বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেনঃ

رَبِّ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
উচ্চারণ- রাব্বি আন্নি মাসসানিয়ায যুররু ওয়া আনতা আরহামুর রাহিমিন।
অর্থ- হে আমার প্রভু! আমি দুঃখে কষ্টে পতিত হয়েছিতুমিইতো দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ৮৩)
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তায়াল পবিত্র কুরআনে ফরমান:
وَأَيُّوبَ إِذْ نَادَى رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ –  فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَكَشَفْنَا مَا بِهِ مِن ضُرٍّ وَآتَيْنَاهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا وَذِكْرَى لِلْعَابِدِينَ

অর্থাৎ এবং স্মরণ করুন আইউবের কথাযখন তিনি তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করে বলেছিলেনঃ আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও সর্বশ্রেষ্ট দয়াবান।  অতঃপর আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁর দুঃখকষ্ট দূর করে দিলাম এবং তাঁর পরিবরাবর্গ ফিরিয়ে দিলামআর তাদের সঙ্গে তাদের সমপরিমাণ আরও দিলাম আমার পক্ষ থেকে কৃপাবশতঃ আর এটা ইবাদত কারীদের জন্যে উপদেশ স্বরূপ। (সূরা আম্বিয়া : আয়াত ৮৩-৮৪)

 আঠারো বৎসর যাবৎ দীর্ঘ কঠিন পরীক্ষায় আইয়ূব আলাইহিমুস সালাম উত্তীর্ণ হলেন। আল্লাহর রহমত তাঁর উপর বর্ষিত হলো। আল্লাহর আদেশ অনুযায়ী তিনি যমীনে আঘাত করলেন। তৎক্ষণাৎ সেখান হতে ঝর্নাধারা বের হলো। তিনি সে পানি পান করলেন ও পানি দিয়ে গোসল করলেন। এতে মহান আল্লাহ তায়ালার ফজল, করম, রহমত এবং বরকতে আইউব (আঃ) সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে গেলেন। 


হে মেহেরবাণ আল্লাহআমাদের তাওবা কবুল করে "করোনা" থেকে আমাদিগকে হেফাজত করুন :
গুনাহ মাফের দোআঃ
Adam / Hawa Alaihi Salam ki dua jiske zariye unki tauba Qubul ki gayee thi  Bismillahirrahmanirraheem    Adam / Hawa Alaihi Salam ki dua jiske zariye unki tauba Qubul ki gayee thi ----------------- ( Humko bhi is dua ke jariye Allah subhanahu se tauba maangni chahiye) -------------   ربنا ظلمنا أنفسنا وإن لم تغفر لنا وترحمنا لنكونن من الخاسرين -------------  Rabbana Zalamna Anfusana Wa in lam taghfirlana Watarahamna Lanakoonanna Minal Khasireen      -------------  Al Quran : Eh hamare RABB humne
-رَبَّنَا ظَلَمۡنَآ أَنفُسَنَا وَإِن لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَتَرۡحَمۡنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ
উচ্চারণঃ রব্বানাজ্বলামনাআনফুসানাওয়াইল্লাম্ তাগফির লানা-ওয়াতারহামনা-লানাকূ-নান্না মিনাল্ খ্ব-সিরী-ন্।
অর্থঃ হে আমাদের রবআমরা নিজদের উপর অন্যায় করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে রহম না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।’ [সুরা রাফ : আয়াত ২৩] وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِ
আদি পিতা আবুল বাশার আদম আলাইহিমুস সালামের আল্লাহর পক্ষ  ক্ষমা প্রাপ্তির ইতিকথা

وَقُلْنَا يَا آدَمُ اسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ وَكُلاَ مِنْهَا رَغَداً حَيْثُ شِئْتُمَا وَلاَ تَقْرَبَا هَـذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ الْظَّالِمِينَ

এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যেতুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাওযেখান থেকে চাওপরিতৃপ্তিসহ খেতে থাককিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে। [ সুরা বাকারা ২:৩৫ ]


আদম আলাইহিমুস সালাম যখন গাছের নিকটবর্তী হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালার ঐ নিষেধাজ্ঞা ভুলে গিয়ে নিকটবর্তী হলে অআল্লাহ নারাজ হলেন এবং বললেনঃ আমি কি তোমাদের উভয়কে এ গাছ সম্পর্কে নিষেধ করিনি এবং তোমাদেরকে বলিনি যে নিশ্চয় শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু ” -সূরা আরাফ: আয়াত-২২
তখন আদম (আঃ) আল্লাহ পাকের কাছে খুবই লজ্জিত, অনুতপ্ত, অনুশোচিত হলেন  এবং আল্লাহ পাকের কাছে কিভাবে ক্ষমা চাইবেন  সে পন্থাই মনে মনে খুঁজছিলেন।
মহান আল্লাহ পাক তাঁর মনের অবস্থা বুঝতে পেরে  নিজেই আদম (আঃ) কে ক্ষমা চাওয়ার বাক্য শিখিয়ে দিলেন । এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ফরমানঃ 
فَتَلَقَّى آدَمُ مِن رَّبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
অতঃপর আদম তাঁর প্রতিপালকের নিকট থেকে কিছু বাণী শিখে নিল । তারপর তিনি ক্ষমাপরবশ হলেন তার প্রতি নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল অসীম দয়ালু ।”-সূরা বাকারা ৩৭ নং আয়াত।
(Then learnt Adam from his Lord words of inspiration, and his Lord Turned towards him; for He is Oft-Returning, Most Merciful).
তাহলে আমরা জানতে পারলাম যে আদম (আঃ) এর ক্ষমা চাওয়ার বাক্য আল্লাহ পাক নিজে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। কি ছিল আল্লাহ পাকের শিখানো সেই বাক্য যার মাধ্যমে আদম (আঃ) ক্ষমা করা হয়েছিল এবং অআমরাও তাওবাহ ইস্তিগফার করে ক্ষমার অধিকারী হতে পারি? । আসুন তা জেনে নিইঃ
সেই বাক্যটি ছিলঃ  
رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحرَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنْ الْخَاسِرِينَ
(রব্বানা- জ্বলামনা- আফুসিনা-ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা- ওয়া তার হামনা- লানা- কূ-নান্না মিনাল খ্ব-সিরী---)

 – হে আমাদের প্রতিপালক ! আমরা আমাদের নিজেদের উপর যুলুম করেছি অতএব আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল হয়ে যাব” সূরা আরাফ:- আয়াত-২৩
দু'আ-দরুদ (১) পড়া (২) শিখা এবং (৩) শিখানোর এখনই সঠিক কাল(সময়)
আরবী দু'আ
উচ্চারণ
বাংলা অর্থ
রেওয়াত (বর্ণনা)
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ
উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহ
(এ বাক্যটি তিন বার পাঠ করতে হয়। -সহীহ মুসলিম: ১৩৬২)
অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি
https://youtu.be/BdAFJk04xxo
 সাওবান রাদ্বয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনামতে রাসূলুল্লাহ () সালাত শেষে ৩(তিন) বার ইস্তিগফার করতেন। (সহীহ মুসলিম ১/৪১৪, নং ৫৯১, সহীহ মাসনূন ওযিফা, পৃষ্ঠা: ৪১)
اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ



উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতাস সালা-মওয়া মিন‌্কাস্ সালা-মতাবা-রক‌্তা ইয়া-জাল‌্ জালা-লি ওয়াল ইকরাম।

অর্থ: হে আল্লাহ, আপনিই সালাম (শান্তি), আপনার থেকেই শান্তি, হে মহাসন্মানের অধিকারী ও মর্যাদা প্রদানের অধিকারী, আপনি বরকতময়।
রেওয়াত (বর্ণনা):সাওবান রাদ্বয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ () সালাত শেষে ৩(তিন) বার ইস্তিগফার বলে এরপর আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম....বলতেন (সহীহ মুসলিম ১/৪১৪, নং ৫৯১)।
اَللَّهُمَّ أَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ-  
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা আজিরনী মিনান্ না-র।
হে আল্লাহ আমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন।
হারিস ইবনু মুসলিম (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ ()  আমাকে বলেছেন,  তুমি ফজরের সালাতের পরেই (দুনিয়াবী) কথা বলার আগেই এই দু'আ (আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান্ না-র ) ৭বার বলবে। যদি তুমি ঐ দিনে   মৃত্যুবরণ কর তাহলে আল্লাহ তোমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন। অনুরূপভাবে মাগরিবের সালাতের পরে কথা বলার আগেই এই দুআ ৭বার বলবে। যদি তুমি ঐ রাত্রে মৃত্যু বরণ কর তাহলে আল্লাহ তোমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।অধিকাংশ মুহাদ্দিস হাদীসটিকে গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য করেছেন।
(নাসাঈ, আস্ সুনানুল কুবরা ৬/৩৩, সুনানু আবু দাউদ ৪/৩২০, নং ৫০৭৯, সহীহ ইবনু হিব্বান ৫/৩৬৭, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩৬১-৩৬৫, নাবাবী, আযকার, পৃ: ১১৫, যাকারিয়্যা, আল ইখবার, পৃ: ৬৫, সহীহ মাসনূন ওযিফা, পৃ: ৪১)।
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ اَللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِىَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ


উচ্চারণ: লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া'হদাহু লা- শারীকা লাহু। লাহুল মুলক, ওয়া লাহুল্ 'হামদু। ওয়া হুয়া 'আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদী-র। আল্লা-হুম্মা লা-মা-নি'আ লিমা- আ'অত্বাইতা, ওয়ালা- মু'অত্বিয়া লিমা- মানা'অ্তা, ওয়ালা- ইয়ানফা'উ যাল্ জাদ্দি মিন‌্কাল‌্ জাদ্দু।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো মা'বুদ নেই,তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ, আপনি যা দান করেন তা ঠেকানোর ক্ষমতা কারো নেই। আর আপনি যা না দেন তা দেওয়ার ক্ষমতাও কারো নেই। কোনো পরিশ্রমকারীর পরিশ্রম আপনার ইচ্ছার বাইরে কোনো উপকারে লাগে না।
রেওয়াত (বর্ণনা):মুগীরা ইবনু শু'বা (রা) বলেন: রাসূলুল্লাহ () প্রত্যেক সালাতের সালামের পরেই এই যিকরটি বলতেন
(সহীহ বুখারী:১/২৮৯, নং ৮০৮, ৫/২৩৩২, নং ৫৯৭১, সহীহ মুসলিম, ১/৪১৪-৪১৫, নং ৫৯৩, সহীহ ইবনু হিব্বান, ৫/৩৪৫-৩৪৮, ৫/৩৪৯) (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা: ৪২)


اللَّـهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
[আল্লাহু লা- ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বিয়্যুম
লা- তাখুজুহু সিনাতু ওয়ালা-নাউম। লাহু মা –ফিছছামা-ওয়াতি ওয়ামা- ফিল আরদ্। মান্ যাল্লাযী ইয়াশ‌্ ফা'উ ইন দাহু- ইল্লা-বি ইজনিহ্ । ই'য়ালামু মা-বাইনা আইদিহিম ওয়ামা-খ্বলফাহুম ওয়ালা-ইউহিতু-না বিশাই ইম্ মিন 'ইলমিহী- ইল্লা-বিমা শা-আ ওয়াসি'য়া কুরসিইউ হুস‌্ ছামা -ওয়াতি ওয়াল্ আরদ্, ওয়ালা -ইয়া উদুহু- হিফ‌্জুহুমা- ওয়াহুয়াল 'আলিয়্যুল 'আজী-ম (আয়াতুল কুরসি: সূরা বাকারা :২৫৫ নং আয়াত]

আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি শাশ্বত, চিরঞ্জীব। বিশ্বপ্রকৃতির সর্বসত্তারধারক। তিনি তন্দ্রা-নিদ্রাহীন   সদাসজাগ। মহাকাশও পৃথিবীর সবকিছুর মালিক। তাঁর সদয় অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করার সাধ্য কারো নেই। দৃশ্যমান বা অদৃশ্যঅতীত বা ভবিষ্যৎসৃষ্টির সবকিছুই তিনি জানেন। তিনি যতটুকু জানাবেনএর বাইরে তাঁর জ্ঞানের সীমানা সম্পর্কে ধারণা করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তাঁর আসন,তাঁর কর্তৃত্ব পৃথিবী ও নভোমণ্ডলের সর্বত্র বিস্তৃত। আর তা সংরক্ষণে তিনি অক্লান্ত। তিনি সর্বোচ্চ সুমহান।
আবু উমামাহ (রা:) বলেন, "রাসূলুল্লাহ () বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক সালাতের পরে আয়াতুল কুরসী (সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত) পাঠ করবে তাঁর জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না"

(হাদীসটি হাসান। সূত্র: নাসাঈ, আস সুনানুল কুবরা ৬/৩০,হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১৪৮, ১০/১০২, মুনাযিরী আত্-তারগীব ২/৪৪৮)

অন্য হাদীসে হাসান (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ () বলেছেন: যে ব্যক্তি ফরয সালাতের শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে সে পরবর্তী সালাত পর্যন্ত আল্লাহর জিম্মায় থাকবে (হাদীসটি হাসানসূত্র: তাবারানী, কাবীর ৩/৮৩। হাইসামী, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১৪৮, ১০/১০২, মুনযিরী, আত তারগীব ২/৪৪৮ (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা: ৪২)

উবাই ইবনু কা'ব (রা) বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে,"যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত জ্বিন থেকে হেফাযতে থাকবে এবং যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত জ্বিন থেকে হেফাযতে থাকবে। হাদীসটি সহীহ (সূত্র: তাবারানী, আল-মু'জামুল, কাবীর ১/২০১, মুসতাদরাক হাকীম ১/৭৪৯, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১১৭, সহীহুত তারগীব ১/৩৪৫ (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা: ৪২).
بِسۡمِ ٱللهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِِ

1. قُلْ هُوَ اللَّـهُ أَحَدٌ
Say: He is God, The One and Only ;
2. اللَّـهُ الصَّمَدُ
God, the Eternal, Absolute ;
3. لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
He begetteth not, Nor is He begotten ;
4. وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
And there is none Like unto Him.


بِسۡمِ ٱللهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِِ
1. قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ
Say: I seek refuge With the Lord of the Dawn,
2. مِن شَرِّ مَا خَلَقَ
From the mischief Of created things;
3. وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ
From the mischief Of Darkness as it overspreads ;
4. وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ
From the mischief Of those who practice Secret Arts ;
5. وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
And from the mischief Of the envious one As he practices envy.

بِسۡمِ ٱللهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِِ

 قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
1. Say: I seek refuge
With the Lord

مَلِكِ النَّاسِ
2. The King (or Ruler)
Of Mankind,

إِلَـٰهِ النَّاسِ
3. The Allah (or Judge)
Of Mankind,

مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ
4. From the mischief
Of the Whisperer
(Of Evil) who withdraws
(After his whisper),

الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ
5. (The same) who whispers
Into the hearts of Mankind,

 مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
6. Among Jinns
And among Men.
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

কুল ওয়াল্লাহু আহাদ
আল্লাহুস‌্ স্বমাদ
লাম‌্ ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুয়ান‌্ আহাদ।
















  বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম



কুল আ'উযু বিরাব্বিল ফালাক্ব
মিন‌্ শাররি মা-খলাক্ব।
 ওয়ামিন শাররি গ-সিকিন ইযা- ওয়াকাব।
ওয়া মিন‌্ শাররিন নাফ্‌ফাচা-তি ফিল্‌ উকাদ।

ওয়া মিন শাররি হা-সিদিন ইযা-হাসাদ।

















বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

কুল আ'উযু বিরাব্বিন না-স।
মালিকিন্না-স। ইলাহিন্না-স। মিন শাররীল ওয়াস ওয়া-সিল খন্না-স।
আল্লাযি ইউওয়াস্ উইসু ফী- সুদূ-রিন্না-স। মিনাল‌্ জিন্নাতি ওয়ান্ না-স।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

১) বলুন,  তিনি আল্লাহ  এক ৷
২) আল্লাহ কারোর ওপর নির্ভরশীল নন এবং সবাই তাঁর ওপর নির্ভরশীল ৷
৩) তাঁর কোন সন্তান নেই এবং তিনি কারোর সন্তান নন৷
৪) এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই৷
























বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

(হে নবী! আপনি) বলুনআমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের স্রষ্টার। আশ্রয় গ্রহণ করছি তাঁর সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে,রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকেগ্রন্থিতে ফুৎকারদানকারী ডাইনিদের অনিষ্ট থেকেহিংসুকের হিংসার অনিষ্ট থেকে।

















বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

বলুনআমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালনকর্তার।
মানুষের অধিপতির,
মানুষের মা'বুদেরতার অনিষ্ট থেকেযে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্মগোপন করে,
যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে,
জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।























سُبْحَانَ اللهِ


ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ


الله أكبر

:সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার


:আলহামদুলিল্লাহ ৩৩বার

:আল্লাহু আকবার ৩৪ বার

অর্থঃসুবহানাল্লাহ: আল্লাহ পবিত্র।
অর্থঃ আলহামদুলিল্লাহ: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
আল্লাহু আকবার:আল্লাহ মহান।
এই যিকরগুলির বিষয়ে বিভিন্ন সহীহ হাদীসে বিভিন্ন সংখ্যা বলা হয়েছে।   (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা: ৪৩)।
سبحان الله و بحمده  

সুবহা-নাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী
অর্থঃ আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা (বা প্রশংসাময় পবিত্রতা) ঘোষণা করছি।

আবু তালহা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ ()  বলেছেন:"যদি কেউ ১০০ বার 'সুব'হা-নাল্লাহি ওয়াবি'হামদিহী বলে, তাহলে আল্লাহ তাঁর জন্য ১,২৪,০০০ (এক লক্ষ চব্বিশ হাজার) সাওয়াব লিখবেন। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, তাহলে তো আমাদের কেউই বিপদে পড়বে না (জাহান্নামে কাউকেই যেতে হবে না) তিনি বলেন: হাঁ। তোমাদের অনেকেই এত বেশি সাওয়াব নিয়ে কিয়ামতের দিন হাজির হবে যে, পাহাড়ের উপরে দিলেও পাহাড় ভেঙ্গে যাবে, কিন্তু এরপর আল্লাহ তাঁকে যে নিয়ামত দিয়েছিলেন তা এসে সব নিয়ামত নিয়ে চলে যাবে। এরপর মহাপ্রভূ রহমত নিয়ে এগিয়ে আসবেন। হাদীসটি সহীহ"। (মুসতাদরাক হাকীম ৪/২৭৯) (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা: ৪৫)।
سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ

ইসলামের আলোকে  মুসলিম উম্মাহর দুনিয়াবী দায়িত্ব-কর্তব্য
মহামারীতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার (ঘরে বসে থাকার) ফজিলত
·         যারা মহামারির সময় কোয়ারেন্টাইন তথা ঘরে অবস্থান করবে তাদের জন্য রয়েছে মহা সুসংবাদ। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ মুসনাদে আহমদ এর বর্ণনায় এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন
কোনো বান্দা যদি মহামারি আক্রান্ত এলাকায় অবস্থান করে। আর নিজ বাড়িতে ধৈর্য সহকারে সাওয়াবের নিয়তে এ বিশ্বাস নিয়ে (ঘরে) অবস্থান করে যেআল্লাহ তাআলা তাকদিরে যা চূড়ান্ত করে রেখেছেনতার বাইরে কোনো কিছু তাকে আক্রান্ত করবে নাতাহলে তার জন্য রয়েছে একজন শহীদের সমান সাওয়াব। (মুসনাদে আহমদ)

সহীহ হাদীস মোতাবেক সংক্রামক ব্যাধি এলাকায় মুসলিম উম্মাহর  করণীয়ঃ

 রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো এলাকায় মহামারি (সংক্রামক ব্যাধি) ছড়িয়ে পড়ে তখন যদি তোমরা সেখানে থাকোতাহলে সেখান থেকে বের হবে না। আর যদি তোমরা বাইরে থাকো তাহলে তোমরা আক্রান্ত এলাকায় যাবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)


The Messenger of Allah (Sawllallahu A’lyhi Wasallaam) said, "When an epidemic (infectious disease) spreads in an area, if you are there, you will not get out from that area." And if you are outside, you will not go to the affected area.”(Bukhari and Muslim)]


আমির উল মুমিনিন ওমর ইবনে খাত্তাব (রা) এর শাসনামলে ঘটে যাওয়া
প্লেগ মহামারির ইতিকথা

৬৩৯ ঈসাব্দ মোতাবেক ১৮ হিজরি সাল। হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তখন ইসলামি খেলাফতের আমির-উল-মুমিনিন। সে সময় সিরিয়া-প্যালেস্টাইনে দেখা দেয় মহামারী প্লেগ। খলিফা ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে জানতে পারেন সিরিয়ায় মহামারী প্লেগ দেখা দিয়েছে।
সে সময় হজরত ওমর ছিলেন প্রায় অর্ধ জাহানের খলিফা। তাই সিরিয়া-প্যালেস্টাইনে   ওমর রদ্বিয়াল্লাহ আনহুর এটি ছিল রাষ্ট্রীয় সফর। সফরের উদ্দেশ্যে তিনি মদিনা থেকে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে সারগ’ নামক অঞ্চলে পৌছলে সেনাপতি আবু উবায়দাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু জানান যেসিরিয়ায় প্লেগ তথা মহামারীর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইসলামে ইতিহাস এ ঘটনা তাউন আম্মাউস (طاعون عمواس) নামে পরিচিত।
ঘটনাটি এমনঃ সিরিয়ায় মহামারী প্লেগ-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় হজরত ওমর প্রবীণ সাহাবাদের কাছে এ মর্মে পরামর্শ চান যেতিনি সিরিয়া সফর করবেন নাকি মদিনায় ফিরে যাবেনসাহাবাদের মধ্য থেকে দুটি মতামত জানানো হয়-
প্রবীণ সাহাবাদের পরামর্শ: কিছু সাহাবা মতামত দিলেন যেআপনি যে উদ্দেশ্যে বের হয়েছেনসে উদ্দেশে সফর অব্যাহত রাখেন। অর্থাৎ সিরিয়ায় যাওয়ার পক্ষে মত দেন। আবার কিছু সাহাবা বললেন, ‘খলিফার সিরিয়া যাওয়া উচিত হবে না।
আনসার ও মুহাজিরদের পরামর্শ সভা: হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রবীণ সাহাবাদের কাছ থেকে দুইটি মতামত পাওয়ায় পুনরায় পরামর্শের জন্য আনসার ও মুহাজির সাহাবাদের ডাকলেন। তারাও মতপার্থক্য করলেন।
প্রবীন কুরাইশদের পরামর্শ সভা: খলিফা ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সবশেষে প্রবীণ কুরাইশদের ডাকলেন। তারা কোনো মতানৈক্য না করে সবাই এ মর্মে মতামত ব্যক্ত করলেন যে-সিরিয়ার সফর স্থগিত করে আপনার মদিনায় প্রত্যাবর্তন করা উচিত। আপনি আপনার সঙ্গীদের মহামারী প্লেগের দিকে ঠেলে দেবেন না।
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রবীণ কুরাইশদের মতামত গ্রহণ করে সিরিয়ার সফর স্থগিত করে মদিনায় ফিরে গেলেন।
খলিফার মদিনায় ফেরত যাওয়া দেখে সেনাপতি হজরত উবায়দাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হে আমিরুল মুমিনিন! আপনি কি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত তাকদির থেকে পলায়ন করে ফিরে যাচ্ছেন?’
সেনাপতি হজরত আবু উবাইদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছ থেকে এ কথা শুনে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু কষ্ট পেলেন। প্রিয় মানুষের কাছে যেভাবে আপনজন কষ্ট পায়। কেননাহজরত আবু উবায়দাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন খলিফার অনেক পছন্দ ও ভালোবাসা পাত্র। তাছাড়া সেনাপতি আবু উবায়দাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবাদের অন্যতম একজন।
তখন হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হে আবু উবায়দাহ! এ কথাটি তুমি না বলে যদি অন্য কেউ বলতো! তিনি সেনাপতির কথার উত্তরে বললেন- হ্যাঁ’, আমরা আল্লাহর এক তাকদির থেকে আরেক তাকদিরের দিকে ফিরে যাচ্ছি।
হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সেনাপতি আবু উবায়দাহকে এ কথা বুঝাতে একটি উদাহরণ তুলে ধরেন এবং বললেন-
তুমি বলতোতোমার কিছু উটকে তুমি এমন কোনো উপত্যকায় নিয়ে গেলে যেখানে দুইটি মাঠ আছে। মাঠ দুইটির মধ্যে একটি মাঠ সবুজ শ্যামলে ভরপুর। আর অন্য মাঠটি একেবারে শুষ্ক ও ধূসর। এখানে উট চরানো নিয়ে বিষয়টি কি এমন নয় যে, ‘তুমি সবুজ-শ্যামল মাঠে উট চরাও। আর তা আল্লাহর নির্ধারিত তাকদির অনুযায়ীই চরিয়েছ। আর যদি শুষ্ক মাঠে চরাওতা-ও আল্লাহর তাকদির অনুযায়ী চরিয়েছ।
এ উপমায় হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সেনাপতিকে এ কথাই বলতে চাচ্ছেন যেহাতে সুযোগ থাকতে ভালো গ্রহণ করার মানে এই নয় যেআল্লাহর তাকদির থেকে পালিয়ে যাওয়া।
সে সময় হজরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি হাদিস বর্ণনা করেন। সে হাদিসের বর্ণনায় হজরত আবু উবায়দাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুর জিজ্ঞাসার পরিপূর্ণ সমাধান ওঠে এসেছে।
হজরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি হাদিস শোনালেন। আর তাহলো-
তোমরা যখন কোনো এলাকায় মহামারী প্লেগের বিস্তারের কথা শুনোতখন সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোনো এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসেআর তোমরা সেখানে থাকোতাহলে সেখান থেকে বেরিয়েও যেও না।’ (বুখারি)


হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু'র মাহামারী আক্রান্ত অঞ্চলে যাওয়া না যাওয়ার সমাধান এভাবে এ হাদিসের মাধ্যমে লাভ করেছিলেন। 



 দরিদ্র্যের পর্ণকুঠিরে করোনা ভাইরাসঃ 

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে বৈশ্বিক জীবন ব্যবস্থার অভাবনীয়ভাবে ওলট-পালট হয়ে গেছে। থেকে গেছে কাজ-কর্মের, আয়-রুজীর সব সেক্টরের সব উপায় অবলম্বন। হাতগুটে ঘরে বসে থাকাই এখন আত্মরক্ষার উত্তম কার্যকর ব্যবস্থা। কারণ, বাইরে বইছে "করোনা" নামক টর্ণেডো, টাইফুন, আইলা বা  কাল বৈশাখীর ঝড়-তুফান। কিন্তু যাই হোক না কেন, পেটের ক্ষিধে যথাসময়ে, যথা নিয়মে ঠিকই সন্চারিত হবে দৈহিক নিয়মাবলী মেনে। এতে ঘটে যেতে পারে অভাবে স্বভাব নষ্টের মত যতসব কারণাদি।

"দারিদ্রতা মানুষকে কুফুরীর নিকটবর্তী করতে পারে" (আল হাদীস)।


বিশ্ব সংস্থার বিশ্লেষণ মতে, করোনা সংশ্লিষ্ট কারণে বিশ্বের অন্ততঃ ৫০ কোটি মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়তে পারে।

ইসলামের আলোকে মানব সেবার এখনিই সুযোগ

আল কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দান-সাদাকাহ'র গুরুত্ব ও ফজিলত

وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ ১৯الذاريات


তাদের সম্পদে অধিকার রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতদের। (যারিয়াত- ১৯)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেনপূর্ব ও পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোনো পুণ্যতা নেইকিন্তু পুণ্যতা আছে কেউ আল্লাহপরকালফিরিশতাগণসমস্ত কিতাব এবং নবীগণের ওপর ইমান আনয়ন করলে এবং আল্লাহর প্রেমে আত্মীয়স্বজনপিতৃহীন অভাবগ্রস্তমুসাফির সাহায্য প্রার্থীগণকে এবং দাস মুক্তির জন্য অর্থ দান করলেসালাত আদায় করলে ও জাকাত প্রদান করলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূর্ণ করলেঅর্থ সংকটে দুঃখ ক্লেশে যখন দুঃখ আসে ধৈর্য ধারণ করলে। এরাই তারা যারা সত্যপরায়ণ এবং তারাই মুত্তাকি। (সূরা বাকারা : ১৭৭)
সূরা বাকারাতে ইরশাদ হচ্ছে : পূণ্যবান তারা- যারা ঈমান এনেছে আল্লহার ওপরেআখেরাতফেরেশতাও সকল কিতাবের ওপরে যারা সম্পদের প্রতি ভালবাসা সত্ত্বেও অর্থ দান করে আত্মীয় স্বজনইয়াতীমমিসকীনমুসাফিরসাহায্য প্রার্থী ও দাস মুক্তির জন্য এবং সালাত কায়েম করে।
মানব সেবার গুরুত্ব প্রসঙ্গে রসুল (সা.) বলেনকওমের নেতা সফরের অবস্থায় তাদের খাদিম থাকবে। যে ব্যক্তি খিদমতের মাধ্যমে তাদের মধ্যে অগ্রগামী হবে কেউ তাকে আমলের মাধ্যমে পেছনে ফেলতে পারবে না। (মিশকাত : ৩৪০),
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কষ্টসমূহ থেকে কোনো কষ্ট দূর করবে কিয়ামতের কষ্টসমূহ থেকে আল্লাহ তার একটি কষ্ট দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীকে দুনিয়াতে ছাড় দেবে আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে ছাড় দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দোষ গোপন রাখবেআল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আর আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্য করে যায়। (মুসলিমআবু দাউদতিরমিজি)।                        

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছেতিনি বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনবিধবা ও অসহায়কে সাহায্যকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।  (সহিহ বোখারি,সহিহ মুসলিম)।
হাল জাযাউল ইহসানে ইল্লাল ইহসান (সূরাহ আর রহমান)

ইসলামে দান খয়রাত বোঝাতে ইহসান শব্দও ব্যবহৃত হয়েছে। ইহ্সান শব্দেরও প্রয়োগভেদে বিভিন্ন অর্থ রয়েছে। তবে দানের ক্ষেত্রে এই ইহ্ সান শব্দের অর্থ হচ্ছে সৎকর্ম করাসদ্ব্যবহার করানিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা পরোপকার করা বা বদান্যতা। হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত আছে যেপ্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : দানশীল ব্যক্তি (আস সাখী) আল্লাহর সন্নিকটে জান্নাতের কাছাকাছি এবং মানুষেরও নিকটবর্তীআর বখীল আল্লাহ থেকে দূরেজান্নাত থেকে দূরেমানুষ থেকে দূরে এবং দোযখের কাছে (তিরমিযী শরীফ)।
কুরআন মজীদে ইনফাক ফী সাবিলিল্লাহ- আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় অর্থাৎ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দান করার মাহাত্ম্য সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে : যারা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় (ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহ) করে তাদের উপমা হচ্ছে একটি শস্যবীজের মতো যা সাতটি শীষ উৎপাদন করেপ্রত্যেক শীষে একশ’ শস্যদানা। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন তাকে বহুগুণে দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় সর্বজ্ঞ। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৬১)।
হযরত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে না আল্লাহও তার প্রতি রহমত করেন না। (তিরমীযি শরীফ)।
কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : আর যা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে ও নিজেদের আত্মা বলিষ্ঠ করবার খাতিরে ধনৈশ্বর্য ব্যয় করে তাদের উপমা কোনো উচ্চ ভূমিতে অবস্থিত একটি উদ্যানযাতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়ফলে তাতে দ্বিগুণ ফলমূল জন্মেযদি মুষলধারে বৃষ্টি না হয় তাহলে অল্পবৃষ্টিই যথেষ্ট। তোমরা যা করো আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৬৫)।
কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : যে ধন সম্পদ তোমরা ব্যয় (দান) করো তা তোমাদের নিজেদের জন্য এবং তোমরা তো শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে ব্যয় করে থাকো। যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় (দান) করো তার পুরস্কার তোমাদের পুরোপুরিভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৭২)। দান করতে হবে দুর্গতদুর্দশাগ্রস্তনিঃস্ব মানুষের দুর্গতিঅসহায়ত্ব ও দারিদ্র্য বিমোচন করবার লক্ষ্য স্থির করে। কুরআন মজীদে সম্মানজনকউত্তম ও পছন্দসই জিনিস দান করার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ হয়েছে :
তোমরা যা ভালবাসো তা হতে ব্যয় (দান) না করা পর্যন্ত তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করবে না। তোমরা যা কিছু ব্যয় (দান) করো আল্লাহ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। (সূরা আল-ইমরান : আয়াত ৯২)।
হযরত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমার ভাইয়ের সামনে তোমার হাসি তোমার জন্য সাদাকাসৎ কাজের আদেশ দেয়া ও অসৎ কাজে নিষেধ করাও সাদাকাপথ হারিয়ে ফেলেছে এমন ব্যক্তিকে পথ দেখিয়ে দেয়াও সাদাকাদৃষ্টিহীনকে পথ দেখানোও সাদাকারাস্তা থেকে পাথরকাঁটাহাড্ডি (অর্থাৎ যে কোনো ধরনের কষ্টদায়ক প্রতিবন্ধকতা) সরিয়ে দেয়াও তোমার জন্য সাদাকাতোমার বালতি থেকে তোমার ভাইয়ের বালতিতে পানি ঢেলে দেয়াও তোমার জন্য সাদাকা। (তিরমিযী শরীফ)।
কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো সেটাও ভাল আর যদি গোপন করো এবং অভাবগ্রস্তকে দাও সেটা তোমাদের জন্য আরও ভাল। (সূরা বাকারা: আয়াত ২৭১)যে নিজের সম্পদ দান করে আত্মশুদ্ধির জন্য এবং কারও প্রতি অনুগ্রহের প্রতিদানে নয়কেবল তার মহান রবের সন্তুষ্টির প্রত্যাশায়সে তো অচিরেই সন্তোষ লাভ করে। (সূরা লায়ল: আয়াত ১৮-২০)।
হযরত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহ্ পৃথিবী সৃষ্টি করলে তা টলতে লাগলো। তখন তিনি পাহাড় সৃষ্টি করে পৃথিবীর ওপর বসিয়ে দিয়ে অটল থাকতে বললেন। পৃথিবী স্থির হয়ে গেলো। ফেরেশ্তারা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো : হে রব্! আপনার সৃষ্টিতে এর থেকে শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : হ্যাঁলোহা। তারা বলল : লোহার চেয়ে আপনার সৃষ্টির মধ্যে অধিক শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : আগুন। তারা বলল : আগুনের চেয়ে অধিক শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : বাতাস। তারা বলল : বাতাস থেকে অধিক শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : মানুষের সেই দান-যা সে ডান হাতে প্রদান করে কিন্তু তার বাম হাত তা জানতে পারে না। (তিরমিযী শরীফ)।
হযরত আবূ হুরায়রা রাদি আল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত আছে যেহযরত রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেনআল্লাহ্ জাল্লা শানুহু কিয়ামতের দিন বলবেন : হে আদম সন্তান (মানুষ)! আমি অসুস্থ ছিলাম কিন্তু তুমি আমার খোঁজ-খবর রাখনিসে বলবে : আমি কেমন করে আপনার খোঁজ-খবর রাখবোআপনি যে রব্বুল আলামীন। আল্লাহ্ বলবেন : তুমি কি জানতে না যেআমার অমুক বান্দা অসুস্থ ছিলো অথচ তুমি তাকে সেবা করোনি তাকে সেবা-শুশ্রষা করলেই তুমি তার কাছে আমাকে পেতে। আল্লাহ্ বলবেন : হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলামকিন্তু তুমি আমাকে খেতে দাওনি। সে বলবে : হে আমার রব্! আমি কি করে আপনাকে খাওয়াতে পারিআপনি তো রব্বুল আলামীন। তিনি বলবেন : তুমি কি জানতে না যেআমার অমুক বান্দা তোমার কাছে আহার চেয়েছিলোতুমি কি তাকে আহার করাওনি। তুমি যদি তাকে আহার করাতেতাহলে অবশ্যই তার কাছে আমাকে পেতে। আল্লাহ্ বলবেন : হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পানি চেয়েছিলামকিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি। সে বলবে : হে আমার রব্ আমি কেমন করে আপনাকে পানি পান করাবোআপনি তো রব্বুল আলামীন। আল্লাহ্ বলবেন : আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিলোতুমি যদি তাকে পানি পান করাতে তাহলে আমাকে তার কাছে পেতে। (মুসলিম শরীফ)
হযরত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলছেনদান আল্লাহর ক্রোধ বা রাগ উপশম করেমৃত্যুযন্ত্রণা দূরীভূত করে। (তিরমিযী শরীফ)।
কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : আর যা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে ও নিজেদের আত্মা বলিষ্ঠ করবার খাতিরে ধনৈশ্বর্য ব্যয় করে তাদের উপমা কোনো উচ্চ ভূমিতে অবস্থিত একটি উদ্যানযাতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়ফলে তাতে দ্বিগুণ ফলমূল জন্মেযদি মুষলধারে বৃষ্টি না হয় তাহলে অল্পবৃষ্টিই যথেষ্ট। তোমরা যা করো আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৬৫)।
কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : যে ধন সম্পদ তোমরা ব্যয় (দান) করো তা তোমাদের নিজেদের জন্য এবং তোমরা তো শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে ব্যয় করে থাকো। যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় (দান) করো তার পুরস্কার তোমাদের পুরোপুরিভাবে প্রদান করা হবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৭২)।
 দান করতে হবে দুর্গতদুর্দশাগ্রস্তনিঃস্ব মানুষের দুর্গতিঅসহায়ত্ব ও দারিদ্র্য বিমোচন করবার লক্ষ্য স্থির করে। কুরআন মজীদে সম্মানজনকউত্তম ও পছন্দসই জিনিস দান করার নির্দেশ দিয়ে ইরশাদ হয়েছে :
তোমরা যা ভালবাসো তা হতে ব্যয় (দান) না করা পর্যন্ত তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করবে না। তোমরা যা কিছু ব্যয় (দান) করো আল্লাহ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। (সূরা আল-ইমরান : আয়াত ৯২)।

হযরত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : তোমার ভাইয়ের সামনে তোমার হাসি তোমার জন্য সাদাকাসৎ কাজের আদেশ দেয়া ও অসৎ কাজে নিষেধ করাও সাদাকাপথ হারিয়ে ফেলেছে এমন ব্যক্তিকে পথ দেখিয়ে দেয়াও সাদাকাদৃষ্টিহীনকে পথ দেখানোও সাদাকারাস্তা থেকে পাথরকাঁটাহাড্ডি (অর্থাৎ যে কোনো ধরনের কষ্টদায়ক প্রতিবন্ধকতা) সরিয়ে দেয়াও তোমার জন্য সাদাকাতোমার বালতি থেকে তোমার ভাইয়ের বালতিতে পানি ঢেলে দেয়াও তোমার জন্য সাদাকা। (তিরমিযী শরীফ)

কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো সেটাও ভাল আর যদি গোপন করো এবং অভাবগ্রস্তকে দাও সেটা তোমাদের জন্য আরও ভাল। (সূরা বাকারা: আয়াত ২৭১)

 কুরআন মজীদে আরও ইরশাদ হয়েছে : যে নিজের সম্পদ দান করে আত্মশুদ্ধির জন্য এবং কারও প্রতি অনুগ্রহের প্রতিদানে নয়কেবল তার মহান রবের সন্তুষ্টির প্রত্যাশায়সে তো অচিরেই সন্তোষ লাভ করে। (সূরা লায়ল: আয়াত ১৮-২০)।

হযরত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহ্ পৃথিবী সৃষ্টি করলে তা টলতে লাগলো। তখন তিনি পাহাড় সৃষ্টি করে পৃথিবীর ওপর বসিয়ে দিয়ে অটল থাকতে বললেন। পৃথিবী স্থির হয়ে গেলো। ফেরেশ্তারা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো : হে রব্! আপনার সৃষ্টিতে এর থেকে শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : হ্যাঁলোহা। তারা বলল : লোহার চেয়ে আপনার সৃষ্টির মধ্যে অধিক শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : আগুন। তারা বলল : আগুনের চেয়ে অধিক শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : বাতাস। তারা বলল : বাতাস থেকে অধিক শক্তিশালী আর কি কিছু আছেতিনি বললেন : মানুষের সেই দান-যা সে ডান হাতে প্রদান করে কিন্তু তার বাম হাত তা জানতে পারে না। (তিরমিযী শরীফ)।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘পূর্ব ও পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোনো পুণ্যতা নেইকিন্তু পুণ্যতা আছে কেউ আল্লাহপরকালফিরিশতাগণসমস্ত কিতাব এবং নবীগণের ওপর ইমান আনয়ন করলে এবং আল্লাহর প্রেমে আত্মীয়স্বজনপিতৃহীন অভাবগ্রস্তমুসাফির সাহায্য প্রার্থীগণকে এবং দাস মুক্তির জন্য অর্থ দান করলেসালাত আদায় করলে ও জাকাত প্রদান করলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূর্ণ করলেঅর্থ সংকটে দুঃখ ক্লেশে যখন দুঃখ আসে ধৈর্য ধারণ করলে। এরাই তারা যারা সত্যপরায়ণ এবং তারাই মুত্তাকি।’ (সূরা বাকারা : ১৭৭)

অন্য আয়াতে এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে, ‘সে তো বন্ধুর গিরিপথ অবলম্বন করেনিতুমি কি জান বন্ধুর গিরিপথ কিতা হচ্ছে দাস মুক্তি অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে আহার্যদানএতিম আত্মীয়কে অথবা দরিদ্র নিষ্পেষিত নিঃস্বকে। (সূরা বালাদ১১-১৬)

মানব সেবার গুরুত্ব প্রসঙ্গে রসুল (সা.) বলেন, ‘কওমের নেতা সফরের অবস্থায় তাদের খাদিম থাকবে। যে ব্যক্তি খিদমতের মাধ্যমে তাদের মধ্যে অগ্রগামী হবে কেউ তাকে আমলের মাধ্যমে পেছনে ফেলতে পারবে না। (মিশকাত : ৩৪০),
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কষ্টসমূহ থেকে কোনো কষ্ট দূর করবে কিয়ামতের কষ্টসমূহ থেকে আল্লাহ তার একটি কষ্ট দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীকে দুনিয়াতে ছাড় দেবে আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে ছাড় দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দোষ গোপন রাখবেআল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আর আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্য করে যায়।’ (মুসলিমআবু দাউদতিরমিজি)।                       

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছেতিনি বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘বিধবা ও অসহায়কে সাহায্যকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।’ (বর্ণনাকারী বলেন,) আমার ধারণা তিনি আরো বলেন, ‘এবং সে ওই সালাত আদায়কারীর ন্যায় যার ক্লান্তি নেই এবং ওই সিয়াম পালনকারীর ন্যায় যার সিয়ামে বিরত নেই।’ (সহিহ বোখারি,সহিহ মুসলিম)।

মানুষের সেবার মাধ্যমে অতি সহজে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়

 হজরত আবু হুরায়রা ( রা) হতে বর্ণিততিনি বলেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কেয়ামত দিবসে নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘হে আদম সন্তানআমি অসুস্থ হয়েছিলাম,কিন্তু তুমি আমার শুশ্রূষা করোনি।’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক। আপনিতো বিশ্বপালনকর্তা কীভাবে আমি আপনার শুশ্রূষা করব?’ তিনি বলবেন, ‘তুমি কী জানতে না যেআমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিলঅথচ তাকে তুমি দেখতে যাওনি। তুমি কী জান নাযদি তুমি তার শুশ্রূষা করতে তবে তুমি তার কাছেই আমাকে পেতে।’ ‘হে আদম সন্তানআমি তোমার কাছে আহার চেয়েছিলামকিন্তু তুমি আমাকে আহার করাওনি।?’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার রবতুমি হলে বিশ্ব পালনকর্তাতোমাকে আমি কীভাবে আহার করাব?’ তিনি বলবেন, ‘তুমি কী জান না যেআমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাদ্য চেয়েছিলকিন্তু তাকে তুমি খাদ্য দাওনি। তুমি কি জান না যেতুমি যদি তাকে আহার করাতে তবে আজ তা প্রাপ্ত হতে।?’ ‘হে আদম সন্তানতোমার কাছে আমি পানীয় চেয়েছিলামঅথচ তুমি আমাকে পানীয় দাওনি।’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার প্রভুতুমি তো রাব্বুল আলামীন তোমাকে আমি কীভাবে পান করাব?’ তিনি বলবেন, ‘তোমার কাছে আমার অমুক বান্দা পানি চেয়েছিল কিন্তু তাকে তুমি পান করাওনি। তাকে যদি পান করাতে তবে নিশ্চয় আজ তা প্রাপ্ত হতে।’ (মুসলিম : ৬৭২১সহীহ ইবন হিব্বান : ৭৩৬)

ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনবিধান। ইসলামের সঙ্গে চলতে হলে ইসলামে দেখানো প্রতিটি বিষয় মেনে চলতে হয়। তাই কেউ যদি মানুষের সেবা অথবা সাহায্য সহযোগিতা করার ব্যাপারে উদাসীন থাকে তবে সেক্ষেত্রে তার আমল পরিপূর্ণ হবে না। মানবসেবার জন্য পুকুর খননরাস্তাঘাট ও বাঁধ নির্মাণসহ নানা জনকল্যাণ মুলক কাজ করাও বিশেষ সাওয়াবের কাজ।

মানব সেবায় ইসলাম এতো উৎসাহ দিয়েছে যে রাস্তা ও চলার পথ হতে সামান্য পাথর সরিয়ে ফেলার জন্যেও রয়েছে সাওয়াব। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিতমহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘ইমানের ৭২টি শাখা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি হলো রাস্তা থেকে কোনো কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেওয়া।’ (মুসলিম শরিফ)।

মানুষের জন্যে যার মনে কোনো দয়া নেই আল্লাহ তায়ালার রহমতও তার ওপর নেই। হাদিস শরীফে এসেছে- যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে না আল্লাহও তার প্রতি রহমত করেন না।’ (তিরমিযী শরীফ)।

আল্লাহ তায়ালা সূরা বাকারার ২৬১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করেতাদের উপমা একটি বীজের মতোযা উৎপন্ন করল সাতটি শিষপ্রতিটি শিষে রয়েছে ১০০ দানা। আর আল্লাহ যাকে চানতার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়সর্বজ্ঞ।’ 

গরীবদুঃখীঅসহায়সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে কাজ করলে একটি সমাজ সুন্দর হয়ে ওঠে। হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেছেনরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনে কখনো কোনো সাহায্য প্রার্থীকে না বলেননি। 
নেক কাজের মধ্যে গরিব দুঃখীদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন ও তাদের কল্যাণে ধন-সম্পদ ব্যয়কে আল্লাহ বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেন এবং এ কারনেই কোরআনের অনেক যায়গায় নামাজের পাশাপাশি দরিদ্রকে অন্ন দানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সূরা বাকারাতে ইরশাদ হচ্ছে : পূণ্যবান তারা- যারা ঈমান এনেছে আল্লহার ওপরেআখেরাতফেরেশতাও সকল কিতাবের ওপরে যারা সম্পদের প্রতি ভালবাসা সত্ত্বেও অর্থ দান করে আত্মীয় স্বজনইয়াতীমমিসকীনমুসাফিরসাহায্য প্রার্থী ও দাস মুক্তির জন্য এবং সালাত কায়েম করে।
 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা স্বীয় সাহাবাদের উদ্দেশ্যে জিজ্ঞাসা করলেনতোমাদের মধ্যে আজ কে রোজা রেখেছেহযরত আবুবকর (রা.) জওয়াব দিলেনআমি। হুযুর আবার জিজ্ঞাসা করলেনতোমাদের মধ্যে কে আজ জানাজার অনুসরণ করেছেআবুবকর (রা.) জওয়াব দিলেনআমি। হুযুর আবার জিজ্ঞাসা করলেনতোমাদের মধ্যে কে আজ দরিদ্রকে খাদ্য দান করেছেএবারও হযরত আবুবকর জওয়াব দিলেনহুযুরআমি। এবার বললেনএতগুলো নেক কাজের সমাবেশ যার মধ্যে ঘটেছেসে অবশ্যই বেহেশতে প্রবেশ করবে।

DUA YUNUS A.S - YouTube





No comments:

Post a Comment

Designed By Published.. Blogger Templates