নভেল প্যান্ডেমিক করোনা ভাইরাস ডিজিজ(কোভিড)-১৯
কি
নতুন ধারার বিজ্ঞানের সূচনা ঘটাতে
যাচ্ছে?
-শেখ মুহাম্মাদ রমজান হোসেন
করোনার শীত তত্ত্ব
সাধারণতঃ
ভাইরাস (সংক্রামক ব্যাধি) ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এর গতি-প্রকৃতি পাল্টে যায়। ফ্লু সাধারণত শীতকালীন ব্যাধি। । অন্যদিকে টাইফয়েড গরমকালীন ব্যাধি। সারা
বিশ্বের ৫০০টি এলাকার নমুনা নিয়ে বিশ্লেষিত এক প্রতিবেদনে জানা যায় যে, এ সব
এলাকায় ভাইরাস বিস্তারে তাপমাত্রা, বাতাসের গতি ও তুলনামূলক আর্দ্রতার সম্পর্ক আছে। ‘উইল ওয়ার্ম ওয়েদার
রিয়েলি কিল অফ কোভিড-১৯’ শিরোনামে বিবিসির প্রচারিত এই
প্রতিবেদনটিতে আরও দেখা যায় যে, সেখানে গবেষকেরা অনুমান করেছেন, বিশ্বের উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের কারণে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো করোনাভাইরাসে কম
আক্রান্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনা কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণের চীন সরকার
প্রচারিত খবর যেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম
বিশ্বব্যাপী জানা যায় সেদিন ছিল ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ অর্থাৎ পুরোপুরি
শীতকাল। ফলে অনেক ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন যে, শীতে উদ্ভূত এই ভাইরাস ঋতু
পরিবর্তনের সাথে সাথে অর্থাৎ, গ্রীষ্মকালীন গরমে কমে যাবে কিংবা এমনিতেই
চলে যাবে নিপা ভাইরাস, ডেঙ্গু কিংবা আর আট/দশটা ভাইরাসের
মতই।
"নভেল প্যান্ডেমিক করোনা ভাইরাস ডিজিজ(কোভিড)-১৯" এর ওয়েভওয়ারী বৈশ্বিক অবস্থা
উল্লেখ্য, আজ থেকে ১০ বছর আগে যুক্তরাজ্যের এডিনবরা ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজের কেট টেপ্লশেনের বিজ্ঞানীরা তিন ধরনের করোনাভাইরাসের নমুনা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। এসব নমুনা আক্রান্ত রোগীদের কাছে থেকে নেওয়া হয়েছিল। এদের সবারই শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হয়েছিল। সব ক্ষেত্রে ভাইরাসে আক্রান্তের সময় ছিল ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী কয়েকমাস অর্থাৎ শীত মৌসুমে।একটি মহামারির ওয়েভে তিনটি অংশ থাকে: আপ স্লোপ বা উন্নতির ঢাল,পিক বা চূড়া এবং ডাউন স্লোপ বা অবনতির ঢাল। প্রতিদিন যখন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকে, তখন তা ‘উন্নতির ঢাল’ তৈরি করে। এভাবে বাড়তে বাড়তে একটা সময় সংক্রমণ আর বাড়ে না,তখন গ্রাফের ওই অবস্থাকে বলা হয় চূড়া। এরপর প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা আবার কমতে থাকলে ‘অবনতির ঢাল’ তৈরি হয়। এভাবেই তৈরি হয় মহামারির একটি পূর্ণ ওয়েভ।
যুক্তরাষ্ট্র
প্রথম ওয়েভটি বিস্তৃত হয় মধ্য মার্চ থেকে মধ্য জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয় ওয়েভের শুরু হয় ১৮ জুনে এবং শেষ হয় ৯ সেপ্টেম্বর। তৃতীয় ওয়েভটি শুরু হয় অক্টোবরের শুরুতে, যা এখন চূড়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই তৃতীয় ওয়েভেই যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, সেখানে করোনার তিনটি ওয়েভ দৃশ্যমান। এযাবতকালের সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যু তিন হাজার ১০০ জন রেকর্ড করা হয় গত ৪ ডিসেম্বর।
যুক্তরাজ্য
· ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. মেহেদী আকরাম বলেন, যুক্তরাজ্যের করোনা মহামারির ওয়েভের দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রথম এবং দ্বিতীয় ওয়েভ ভালোভাবেই দৃশ্যমান। প্রথম ওয়েভটি শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চের মাঝামাঝিতে এবং শেষ হয় জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে। এরপর দ্বিতীয় ওয়েভ শুরু হয় আগস্টের শেষে, যা পিক পয়েন্টে পৌঁছে মধ্য নভেম্বরে।
এবার যুক্তরাজ্যে শীতকালীন নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাস!
যখন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ব্রিটেন গত সপ্তাহ থেকে তার বৃটিশ নাগরিকদের
করোনা টিকা দেওয়া শুরু করেছে এরই মধ্যে অতি সংক্রমক নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাস
ব্রিটেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ার সংবাদ পাওয়া গেছে । ১৯
ডিসেম্বর শনিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানান, নতুন করোনা ভাইরাস ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। তিনি
বলেন, রোববার (২০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে
লন্ডন,সাউথ ইস্ট ইংল্যান্ড এবং ইস্ট অফ ইংল্যান্ড চার স্তরের নিষেধাজ্ঞার
আওতায় আসবে। এই বিধিনিষেধ আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক
জানান, নতুন প্রজাতির এই করোনা এখন
নিয়ন্ত্রণের অনেকটা বাইরে চলে গেছে।
স্কাই নিউজকে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন,পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। দ্রুত ভ্যাকসিন প্রয়োগ
করতে না পারলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই কঠিন হবে। ব্রিটেনে করোনা ভাইরাসের
নতুন প্রজাতি দেখা দেওয়ার পর তার বিস্তার ঠেকাতে কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ইতিমধ্যে
বৃটিশগামী ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে। জার্মানি এবং ফ্রান্সও ব্রিটেনের সঙ্গে ফ্লাইট
বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে।
উল্লেখ্য, নতুন প্রজাতির ভাইরাসটি খুবই দ্রুত গতিতে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে
পড়ছে। ফলে একই প্রজাতির এই নতুন ভাইরাস ইতালী, নেদারল্যান্ডস,ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়াতেও পাওয়া গেছে ।
নতুন করোনা ভাইরাস
সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর ভাষ্য
করোনা ভাইরাসের নতুন এ
স্ট্রেইন নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। স্বাস্থ্য সংস্থা আশ্বস্ত করেছে, নতুন ধরনের ভাইরাসটির সংক্রমণের গতি
এখনো অনেকটা অনুকূলের মধ্যেই আছে। আর সেটা অনুকূলে রাখতে নতুন কিছু করার প্রয়োজন
নেই। যে পদ্ধতিগুলোতে করোনা কোভিড-১৯ এর উপশম করা গেছে, নতুন
এ ভাইরাসকেও সেই একই পদ্ধতি মেনে অনুকূলে আনা যেতে পারে। তবে, সেটা করতে হবে আরও সচেতনভাবে।
বাংলাদেশ
বর্ষ পরিক্রমায় বাংলাদেশে হেমন্ত কাল (মধ্য কার্তিক-অগ্রহায়ণ: নভেম্বর-মধ্য ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয় শীতের আগমনের প্রতিধ্বনি। সাধারণতঃ এদেশে এই সময় থেকে আস্তে আস্তে শীত জেঁকে বসে। ভাইরাসের শীত তত্ত্ব অনুসারে স্বাভাবিকভাবে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার যে কথা তারই বাস্তবতা দেখা গেছে বাংলাদেশে শীতের প্রারম্ভে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হার ক্রমেই বেড়েই চলার মধ্যে। সেই সঙ্গে বাড়েছিল মৃত্যুর হারও। গত ২০ নভেম্বর নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, যা ৭৭ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া মহামারীর ৪৬তম সপ্তাহের তুলনায় ৪৭তম সপ্তাহে (১৫ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর) সুস্থতার চেয়ে মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। এই বৃদ্ধিকে বলা হয় বাংলাদেশে সরকারীভাবে বলা হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ববর্তী সপ্তাহের তুলনায় পরবর্তী সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা, রোগী শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃত্যু- সবই বৃদ্ধি পেয়েছে। নমুনা পরীক্ষা ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগী শনাক্ত বেড়েছে ২৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। একই সময়ের ব্যবধানে সুস্থতা বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ আর মৃত্যুর হার বেড়েছে ৪২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গত ৭ ডিসেম্বর, ২০২০ নমুনা পরীক্ষা সাপেক্ষে সংক্রমণ ছিল ১৫.৩০ শতাংশ।
উল্লেখ্য, চলতি (২০২০) সনের ৭ মার্চ পর্যন্ত করোনামুক্ত ছিল। ৮ মার্চ ইতালী ফেরত এক প্রবাসীর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শুরু হলেও বাংলাদেশে করোনা কোভিড-১৯ এর প্রথম ওয়েভের সূচনা মূলতঃ ১০ এপ্রিল, ২০২০ তারিখে। এরপর থেকে প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকে সমানুপাতিক হারে, যা পিক বা চূড়ায় পৌঁছে ২ জুলাই এবং তারপর থেকে সংক্রমণ ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। সেপ্টেম্বরের শেষে গিয়ে সংক্রমণের এই ক্রমাবনতি স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছে। আর এভাবেই প্রথম ওয়েভটি সম্পন্ন হয়। এরপর অক্টোবরের শেষ থেকে শীতের শুরুতে সংক্রমণের সংখ্যা আবার ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে এবং সূচনা করে দ্বিতীয় ওয়েভটির। ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে করোনা মহামারিটি এখন দ্বিতীয় ওয়েভের ‘উন্নতির ঢালে’ অবস্থান করছে।এদিকে যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম বলছেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ শুরু হয়ে গেছে এটা অনেকটা নিশ্চিত। করোনা সংক্রমণের গ্রাফের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মহামারির ওয়েভ বা ঢেউ হচ্ছে সংক্রমণ বিস্তারের একটি ভিজুয়াল রিপ্রেজেন্টেশন বা চিত্র। তথ্যের দিকে না তাকিয়ে শুধু গ্রাফ বা চিত্রের দিকে তাকিয়েই বলে দেয়া যায়, একটা নির্দিষ্ট সময় ভাইরাস সংক্রমণ বেড়েছে, নাকি কমছে। বাংলাদেশে প্রতিদিন ক’জন নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে এর ওপর ভিত্তি করে যে গ্রাফ অঙ্কন করা হয়, তা দিয়ে ওয়েভের ধরনটি বোঝা যায়।
শীত তত্ত্ব না মেনে যখন বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ হ্রাসঃ বিবিবিসির সংবাদ বিশ্লেষণঃ করোনা ভাইরাস: যেসব কারণে গরমকালে সংক্রমণ বাড়তে পারে
সানজানা চৌধুরী
বিবিসি বাংলা, ঢাকা৫ মার্চ ২০২১
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ফেব্রুয়ারীতে তিনশ'র ঘরে নেমে এলেও গত চারদিন ধরে তা ৬০০-এর ওপরে উঠে গেছে। আসন্ন গরমে ভাইরাসের এই প্রকোপ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৩৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ছিল ৬১৯ জন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি শনাক্তের সংখ্যা নেমে গিয়েছিল ২৯১ জনে। এই ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই টানা কয়েকদিন দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিনশ জনের নীচে ছিল।
কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরেই সংক্রমণের হার ধীরে ধীরে বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ এর টিকা চলে আসার পর স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে মানুষের শিথিলতা চলে আসায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এখনই সতর্ক না হলে টিকা আসার পরেও পরিস্থিতি আবার খারাপ হতে পারে বলে তারা মনে করছেন।
বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ৮ই মার্চ। এরপরের দুই মাস দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা তিন অংকের মধ্যে থাকলেও সেটা বাড়তে বাড়তে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। দোসরা জুলাই সর্বোচ্চ ৪০১৯ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ধারণা করা হচ্ছিল শীতকালে ভাইরাসের প্রকোপ আরও বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় উল্টো। নভেম্বরে সংক্রমণের গ্রাফ কিছুটা ওপরে উঠলেও ডিসেম্বর থেকে সেটা দ্রুত পড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সংক্রমণের হার তিন শতাংশের নীচে নেমে আসে, দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ছিল তিনশ জনেরও কম। সৌজন্যেঃ https://www.bbc.com/bengali/news-56296729
এ পর্যন্ত ভাইরাসসংশ্লিষ্ট প্রায় সব গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা মোটামুটি একমত যে, তাপমাত্রা ২১-২৫
ডিগ্রি সেলসিয়াসে করোনা ভাইরাস টিকতে পারে না। যেমন:
১. হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. প্রফেসর জন
নিকোলস বলেছেন, সূর্যের আলো,তাপমাত্রা
এবং আর্দ্রতায় করোনা টিকতে পারে না। সূর্যের আলো ভাইরাসের অর্ধেক ক্ষমতা শেষ করে
দেয়। বাকি অর্ধেক ২ থেকে ২০ মিনিট টিকে থাকে।
২. জার্মান সেন্টার ফর এক্সপেরিমেন্টাল এন্ড ক্লিনিক্যাল ইনফেকশন
রিসার্স সেন্টারের গবেষক থমাস পিচম্যান বলেছেন, সূর্যের তাপে ভাইরাসটি টিকতে
পারে না।
৩. জার্মানির জার্নাল অব হসপিটাল ইনফেকশনের প্রকাশিত রিসার্সে বলা
হয়েছে,ভাইরাসটি ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৫ দিন বাঁচতে পারে। সর্বোচ্চ
২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে-এ ভাইরাস কয়েক দিনের বেশি বাঁচে না।
৪০-৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা মরতে পারে জীবাণু, প্রাথমিক অনুমান
বিশেষজ্ঞদের। (সূত্রঃhttps://www.sangbadpratidin.in/science-and-environment/only-rise-of-temparature-and-humidity-can-kill-corona-virus-environmentalists-say
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে মহামারি আকারে
ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাস ২২ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অন্তত পাঁচ দিন
পর্যন্ত বেঁচে থাকত।
► চীনে যখন
করোনাভাইরাসের তীব্রতায় যখন ভাটা নামে তখন করোনার পূর্ণ জোয়ার শুরু হয়েছিল
ইতালীতে। ক্রমে ক্রমে ইউরোপের প্রায় প্রতিটা দেশ কোভিড-১৯–এ
আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ফলে ইতালি
ছাড়াও জার্মান, ফ্রান্স ও স্পেন এরি মধ্যেই নাজেহাল অবস্থায়
চলে গেছে। ইতালি নামক পুরো দেশটাই কার্যতঃ কোয়ারেন্টারাইনের আওতায়ভুক্ত হয়ে পড়ে। ইতালিতে
১১ মার্চ পর্যন্ত মৃত্যুহার এসে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। জার্মান চ্যান্সেলর
ঘোষণা দিয়েছেন, সামনের দিনে তাঁদের জনসংখ্যার ৭০
শতাংশ পর্যন্ত কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হতে পারে। (আপডেট ২১ মার্চ ২০২০ )।
করোনায় বিপর্যস্ত দেশ/এলাকার শুরুতে তাপমাত্রা:
১. করোনা
কোভিড-১৯ এর শুরুতে চীনের উহানের তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রির কাছাকাছি। ২.
ইরানে ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি।
৩. দক্ষিণ কোরিয়ায় ১০ ডিগ্রির অনেক নিচে। ৪. ইতালিতে ১৫ ডিগ্রির নিচে।
·
এক নজরে করোনা কোভিড-১৯ সম্পর্কিত
মন্তব্য
·
►বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডঃ
মার্গারেট হ্যারিস বলেন, "আমরা এখনো খুব
দ্রুত বাড়তে থাকা এক তীব্র এবং গুরুতর মহামারির মধ্যে আছি।"
►বিশ্বের
সব জায়গায় কোভিড-১৯ এর প্রভাব একই রকম নয়।
►আপনি
আফ্রিকান কিংবা আমাজন-সুন্দরবনের জঙ্গলে থাকুন বা সিঙ্গাপুরের আকাশছোঁয়া ভবনে
থাকুন, নয়তো মহাকাশ যানে, কিংবা ভূগর্ভস্থিত খনিতে থাকুন, কিংবা প্রশান্ত/আটল্যান্টিক
মহাসাগরে ভাসমান থাকুন যেখানে মানুষ আছে সেখানে করোনা কোভিড-১৯ আছে-এটাই যেন
বাস্তবতা।
► করোনার শুরুর দিকে
প্রতি এক লাখ মানুষের করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার হতে কয়েক সপ্তাহ লাগতো। আর এখন
মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই হতে হচ্ছে সংক্রমিত।
►মানুষ মানুষের কাছাকাছি আসলেই আসলে এই ভাইরাসের রমরমা, এই
ভাইরাস বাঁচে এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের দেহে বাসা বেঁধে। কাজেই মানুষ যত মানুষের
কাছাকাছি আসবে, তত সহজে এটি ছড়াবে। প্রথম যখন চীনে
করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল, তখন যেমন এটি সত্যি ছিল, এখনো তাই।
► ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সেন্ট জর্জেসের ডঃ এলিসাবেটা গ্রোপেল্লি বলেন, "এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে পৃথিবী নামক পুরো গ্রহ জুড়ে। এটি আমাদের সবার ওপর প্রভাব ফেলছে। এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়।
বিবিসি বাংলা
►"আমরা একে অন্যের সঙ্গে কথা বলি, এক সঙ্গে সময় কাটাই- মানুষ তো আসলে এগুলোই করে।" ►চীনে উহানের সেই বন্যপ্রাণীর বাজার, বর্তমানে যা কুখ্যাত হয়ে উঠেছে এই ভাইরাসের কারণে, সেখান থেকে বিক্রি হওয়া কোন জন্তু এই ভাইরাসের অন্তর্বর্তী আস্তানা ছিল কি না তা এখনও স্পষ্ট জানা যাচ্ছে না"। ( সূত্রঃ করোনাভাইরাস: বেজি, নেউল নাকি কচ্ছপ? হদিশ নেই কে প্রথম ছড়ালো এই ভাইরাস, https://www.bbc.com/bengali/news-52548140)
● আমরা যে মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারছি
না, তার বদলে এক 'নিউ নর্মাল লাইফ' বা নতুন স্বাভাবিক অবস্থার সন্ধানে আছি ।
নভেল প্যান্ডেমিক করোনা ভাইরাস ডিজিজ(কোভিড)-১৯ এর বিস্ময় আচরণ!
আবহাওয়া আমাদের শরীরের রোগ উপশম ক্ষমতার ওপর
প্রভাব ফেলে, এটা প্রমাণিত। আমাদের শরীরে ডি-ভিটামিন রোগ উপশমে ভূমিকা রাখে। এটা প্রমাণিত। শীতে মানুষ পারতপক্ষে বাইরে কম
বের হয়, কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থায় সূর্যের তেজস্ত্রিয়তাও বহুলাংশে কমে যায়। মানুষ তাই
সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি কম পায়। এতে রোগ উপশম ক্ষমতাও কমে যাওয়ায় মানুষ
স্বাভাবিকভাবে ভাইরাসে তুলনামূলক বেশি আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তবে গরম পড়লেই আমরা নভেল করোনা
কোভিড-১৯ থেকে মুক্তি পাব, আশা-প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন
না কোন খ্যাতনামা ভাইরাস গবেষকও।
স্টকহোমের
ক্যারোরিনসকা ইনস্টিটিউটের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জেন আলবার্ট বলছেন, ‘আমরা আশা করছি যে করোনাভাইরাস শেষ পর্যন্ত স্থানীয় একটি মহামারি হিসেবে
চিহ্নিত হবে। আর এটি যদি ঋতুর সঙ্গে পরিবর্তিত না হয়, তবে
তা হবে বিস্ময়কর।
যে কোভিড-১৯
ভাইরাসের জন্ম শীতে, যে ভাইরাস শীতের প্রারম্ভে উচ্চমাত্রা অর্জন করার কথা, সে
ভাইরাসই আবার শীতের মাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিম্নমাত্রা অর্জন সত্যিই বিস্ময়কর
বটে। উল্লেখ্য, চীনেরই পেকিং ইউনিভার্সিটির স্কুল
অফ লাইফ সায়েন্সেসের একদল গবেষক নোভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে গবেষণায় করেছেন যে, করোনা
কোভিড-১৯ এর জন্য শীত-গরম কোন ব্যাপার নয় বরং বারংবার জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে এই
নোভেল করোনাভাইরাস আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। একদল গবেষক এশিয়ার দেশগুলোতে এই
মহামারির বিস্তার নিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের কথা, উষ্ণ অঞ্চলে ছড়াবে
না বলে যে আশা করা হচ্ছে তা আসলে ক্ষীণ। তাঁরা উদাহরণ দিয়েছেন চীনেরই, যেখানে এ ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব। তাঁরা বলছেন, চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের আবহাওয়া ঠান্ডা, তাতে
সন্দেহ নেই। উহান থেকে এটি জিলিন ও হেলংজিংয়ে গেছে, সেখানেও
ঠান্ডা ছিল। কিন্তু গুয়াংজি বা সিঙ্গাপুরের মতো উষ্ণ এলাকাতেও করোনাভাইরাস
ছড়িয়েছে।
অন্ততঃ নভেল করোনা কোভিড-১৯ ভাইরাসের ব্যাপারে গরম-ঠান্ডার তত্ত্বের মধ্যে কোন আশার আলো দেখতে না পেয়ে করোনার ঠান্ডা-গরম তত্ত্বের কোন যুক্তি নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। একইভাবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, গরম বাড়লে করোনা ভাইরাস ক্ষমতা হারাবে, এমন তত্ত্বে সিলমোহর দেওয়া যাচ্ছে না।
►কোভিড-১৯ জেনোমিক্স ইউকে (কগ) নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক নিক লোম্যান বলছেন, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে বিস্ময়কর রকমের বেশি সংখ্যক মিউটেশন হয়েছে -আমরা যতটা মনে করেছিলাম তার চেয়ে অনেক বেশি।
নভেল করোনা কোভিড-১৯ বিস্ময়কর
ভাইরাসই বটে!
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশে দেখা যাচ্ছে কোভিড শীত
তত্ত্ব মেনে সংক্রমণ বৃদ্ধি করেছে, কিন্ত্ত গ্রীষ্ম তত্ত্ব না মেনেই সংক্রমণ
বৃদ্ধি ঘটিয়েছে পুরো গ্রীষ্মকাল জুড়ে। এটি কেবল যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র বলে
কথা নেই। কোন দেশকেই এই ভর গ্রীষ্মে কোভিড-১৯ ছাড় দেয়নি বরং সমানহারে সংক্রমণ
করে যাচ্ছিল একের পর এক ধনী-গরীব, শিল্পোন্নত, অনুন্নত নির্বিশেষে। কিন্ত্ত
অর্থাভাব, দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি, মুর্মূষ রোগির হাহাকারে মনে হয় করোনার করুণার
উদ্রেক ঘটে! লডডাউন প্রত্যাহার মানেই যেখানে ছিল সামাজিক দূরত্ব উঠে যাওয়া, আর
সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ছিল তখনকার সময়ের সবচেয়ে উত্তম কোভিড থেকে সুরক্ষার মহৌষধ।
সবার দুয়ারে কোভিড হানা না দিলেও সবার দুয়ার “ক্ষুধা” নামক কোভিড হানা দেয়া ইতিমধ্যে শুরু
হয়ে যাওয়ায় সংগত কারণে প্রশ্ন দেখা দেয়ঃ জীবন না জীবিকা? ক্ষুধার্তদের দুয়ারে। তাই
সামাজিক দূরত্ব ঘুচে আরও আক্রান্ত, আরও মৃত্যুর অনেকটা আশংকা নিয়ে No Risk
No gain-প্রবাদ বাক্যের এই বাস্তবতা মেনেই বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার অআপত্তি সত্ত্বেও লকডাউন তুলে নেয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়। বড়ই বিস্ময়কর
ব্যাপার হচ্ছে, লকডাউন তুলে নেয়ার পর পরই কোভিড-১৯ অন্যান্য ভাইরাসের মতই গ্রীষ্ম
তত্ত্ব মানতে শুরু করে অর্থাৎ উচ্চমাত্রার সংক্রমণের পরিবর্তে নিম্নমাত্রায় ক্রমেই
নেমে এসে অল্প দিনের মধ্যেই করোনাক্রান্ত পৃথিবীকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখ
পূর্ববর্তী (৩০ ডিসেম্বর) স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেয় যাকে বলা হচ্ছে New
Normal Life (নতুন স্বাভাবিক জীবন)।
যুক্তরাষ্ট্র
প্রথম ওয়েভটি বিস্তৃত হয় মধ্য মার্চ থেকে মধ্য জুন
পর্যন্ত। দ্বিতীয় ওয়েভের শুরু হয় ১৮ জুনে এবং শেষ হয় ৯ সেপ্টেম্বর। তৃতীয় ওয়েভটি
শুরু হয় অক্টোবরের শুরুতে, যা
এখন চূড়ার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই তৃতীয় ওয়েভেই যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকালে দেখা
যাচ্ছে, সেখানে করোনার তিনটি ওয়েভ দৃশ্যমান।
এযাবতকালের সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যু তিন হাজার ১০০ জন রেকর্ড করা
হয় গত ৪ ডিসেম্বর।
উপরোক্ত তথ্য মতে, দেখা যাচ্ছে, প্রথম ওয়েভে
যুক্তরাষ্ট্রে আপ স্লোপ বা উন্নতির ঢাল, পিক বা চূড়া, মধ্য (১৫) জুনে
পৌঁছার পর মাত্র কয়েকদিন ডাউন স্লোপ বা অবনতির ঢাল বিদ্যমান রেখে ১৮ জুনে আবার দ্বিতীয়
ওয়েভে শুরু হয় আপ স্লোপ বা উন্নতির ঢাল এবং অব্যাহত থাকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
মাঝখানে কয়েক সপ্তাহ পরে অক্টোবরের শুরুতে আবারও শুরু হয় তৃতীয় ওয়েভের আপ স্লোপ বা
উন্নতির ঢাল। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যতিক্রম কয়েকদিন ছাড়া ২০২০ সালের পুরো বছরে
চলছে কোভিড সংক্রমণ । তাতে না মানা হচ্ছে শীত তত্ত্ব, না মানা হচ্ছে গ্রীষ্ম
তত্ত্ব।
যুক্তরাজ্য
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে করোনা কোভিডের প্রথম ওয়েভটি শুরু হয় ২০২০ সালের মার্চের
মাঝামাঝিতে এবং শেষ হয় জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে। এরপর দ্বিতীয় ওয়েভ শুরু হয় আগস্টের
শেষে, যা পিক পয়েন্টে পৌঁছে মধ্য নভেম্বরে।
উপরোক্ত পর্যালোচনায় যুক্তরাজ্যের বেলায়ও দেখা
যাচ্ছে যে, কোভিড-১৯ গ্রীষ্ম তত্ত্ব না মেনে দেশটিকে মধ্য মার্চ থেকে মধ্য জুলাই
পর্যন্ত ভরা গ্রীষ্ম মৌসুমেই প্রচন্ডভাবে সংক্রমিত করেছে। মাঝখানে অন্ততঃ প্রায়
দেড়মাস (মধ্য জুলাই-আগষ্টের শেষের দিক) গ্রীষ্মতত্ত্ব মেনে বৃটেনে ডাউন স্লোপ
বা অবনতির ঢাল বিরাজমান রেখে আগষ্টের শেষ সপ্তাহ থেকে মধ্য নভেম্বরে শীত তত্ত্ব
মেনে আপ স্লোপ বা উন্নতির ঢাল, পিক বা চূড়ায় পৌঁছে। এতে সুস্পষ্ট
প্রতীয়মান যে, নভেল করোনা কোভিড সকল মৌসুমী তাত্ত্বিকতার উর্ধ্বে এক পরম
বিস্ময়কর ভাইরাস!
নভেল করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯
কেন বিস্ময়কর-আদৌ জবাব পাওয়া যাবে কি?
মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, আপনি পৃথিবীর যেখানেই থাকুন, করোনাভাইরাসের বিস্ময়কর আচরণই আসলে ব্যাখ্যা করবে সেখানকার পরিস্থিতি। আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তার উত্তরও নিহিত এর মধ্যে।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) ভাইরোলজি ল্যাবরেটরির প্রধান মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্বের সব ভাইরোলজিস্ট বলছেন, এটা নভেল ভাইরাস। সেখানে তাপমাত্রা কোনো বিষয় না। এখানে তাপমাত্রা কোনো ভূমিকা রেখেছে কি না, তা বলা এখন অসম্ভব।
ফ্রান্সের ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চের পরিচালক ভিক্টোরিয়া কোলিৎজা বলেন, ‘ভিন্ন মৌসুমে ভিন্ন আচরণ করবে কোভিড-১৯; তা বলার মতো এখনো সময় আসেনি।
নভেল করোনা কোভিড-১৯:
নানা জনের নানান মত
পরিবেশ বিজ্ঞানী:
·
পরিবেশ বিপর্যয় কি করোনা কোভিড-১৯সংক্রমণের কার্যকারণ? সং
· নভেল করোনা কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণের পিছনে কি বিশ্ব উষ্ণায়নের কোনো প্রভাব আছে কি? সেই করোনার উষ্ণায়ন তত্বও উড়িয়ে দিচ্ছেন না পরিবেশবিদরা। বিজ্ঞানী অর্ক চৌধুরী বলছেন, “২০ বছর আগে থেকে মেরু অঞ্চলের বরফ গলা শুরু হয়েছে। আর তারপরে ওখানে প্রচুর প্রাণীর ফসিল দেখতে পাওয়া গিয়েছে, যাদের দেহে তখনো পচন ধরেনি। এদের বলা হয় – ফ্রোজেন ফসিল। ওইসব প্রাণীদেহ থেকে এতদিন পর হয়ত ভাইরাসগুলি সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যা থেকে এই সংক্রমণ।” বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধানেরও আশংকা, হয়তো পরিবেশ বিপর্যয় থেকে করোনা কোভিড-১৯ ভাইরাসের উদ্ভব ঘটতে পারে।
নভেল প্যান্ডেমিক করোনা ভাইরাস ডিজিজ(কোভিড)-১৯ কি
নতুন ধারার বিজ্ঞানের সূচনা ঘটাতে যাচ্ছে?
মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, মহাবিশ্বে এমন প্রশ্নও নাকি রয়েছে যার উত্তর অত্যাধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির এই ডিজিটাল পৃথিবীতেও পাওয়া যাওয়ার মত নয়। কারণ, মহাবিশ্বে তথ্যজ্ঞানের যে ভান্ডার রয়েছে তা থেকে বড়জোর ২০% (বিশ শতাংশ) এই পৃথিবীর তথ্য-প্রযুক্তিতে আয়ত্ব করা সম্ভবপর। বৈজ্ঞানিকদের মতে, বাকী জ্ঞান-ভান্ডার নাকি মহাকাশের ডার্ক ম্যাটারে লুকায়িত। অর্থাৎ বর্তমান প্রচলিত জৈব-রসায়ন-পদার্থ বিজ্ঞানে অনেক প্রশ্নের জবাব নেই। তাই বিগত বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগেই বিজ্ঞানীরা অনুভব করেছিলেন বর্তমান প্রচলিত “School Thought of Science” এর প্রতিস্থাপক হিসাবে “Frontier Science” নতুন এক বিজ্ঞানের যার নামকরণ করেছেন। নতুন বিজ্ঞানে কি “নভেল প্যান্ডেমিক সার্স-২ করোনা (কোভিড)-১৯” কেন রহস্যময়, বিস্ময়কর তার আদৌ জবাব পাওয়া যাবে কি?
পৃথিবীতে
এ যাবৎ কালের বিদ্যমান অন্যান্য ভাইরাস অনেকটা নিয়ম নীতিতে সীমাবদ্ধ ছিল
এবং আছে। করোনা কোভিড-১৯ তার ব্যতিক্রম। এটি কোন নিয়ম নীতিতেই যেন আবদ্ধ নয়। কোন
বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব, সূত্র কিংবা চিরাচরিত কোন ধারণা-বিশ্বাস যেন কোভিড-১৯ এর
বেলায় খাটছেনা। এমনকি করোনার সমগোত্রীয় কোন ভাইরাসের সাথে কোভিড-১৯ এর মিল
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে
অন্যান্য কোভিড এর তুলনায় করোনা কোভিড-১৯ এর মিউটেশন (রূপান্তর) অনেকটাই
ব্যতিক্রম। তাই বিশ্বে এতটা হৈচৈ, আলোড়ন, ভ্যাকসিন আবিস্কারে গলদঘর্ম। ডিজিটাল
যুগীয় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে যেন অচল। ডিসেম্বরে যা-ও ভ্যাকসিন প্রয়োগ
শুরু হয়েছিল সেই সপ্তাহেই করোনা রাতারাতি নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে, আরও উচ্চ সংক্রমণ
শক্তি নিয়ে ভ্যাকসিন আবিস্কারক দেশ যুক্তরাজ্যে হামলে পড়েছে। এক কথায় বলা যায়,
করোনা কোভিড-১৯ সর্বপ্রকার মানব জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিগত সকল দিক থেকে বাইরে।
বলা যেতে পারে.করোনা কোভিড-১৯ অনেকটা ইমানিসনিজম (Emanisnim) জাতীয় বিষয়। ইংরেজী ‘Emanisnism’শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ‘Emanare’ শব্দ থেকে যার অর্থ To flowfrom...to pour fourth or out
of অর্থাৎ কোন উৎস
হতে বয়ে আসা, প্রবাহিত
বা আগত, উৎসারিত ইত্যাদি। ইমানিজমের ধারণা-বিশ্বাস হচ্ছে,
সব সৃষ্টির, সব বস্তুর উদ্ভব হয়েছে First
Reality বা First Principle বা Perfect God থেকে। ইমানিশনিজম হচ্ছে Transcendental
Principle অর্থাৎ অলৌকিক
বা মানুষের জ্ঞানে কুলায় না-এমন একটি বিষয় (Beyond
human knowledge: Source: A Student Dictionary)
সায়েন্স ফিকশনের নভোতরী কী হতে যাচ্ছে আগামীদিনের ফ্রন্টিয়ার সায়েন্সের ভিত্তি?:
বলা হয়ে থাকে মানব মনে যেদিন থেকে সত্যকে জানার আগ্রহ জন্মেছিল ঠিক সেদিন থেকে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল। যার কারণে প্রকৃতি বিষয়ক ব্যাপক গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা-পর্যালোচনা-পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের সত্য থেকে সত্যান্তরে পৌঁছার প্রয়াস-প্রচেষ্টায় অন্ত ছিল না সত্য তবে বার বার আবহমানকাল থেকে সংঘটিত কিছু অলৌকিক ঘটনাকে নিছক টেলিপ্যাথি (Telepathy), হ্যালুচিনেশন বলে উড়িয়ে দেয়াকে বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানের সত্যান্বেষী নীতিবিরুদ্ধ বলে ভাবতেন। যতই আপেক্ষিকতা তত্ত্বের গভীর থেকে গভীরে প্রবেশ করে বিশেষ আপেক্ষিকতা পেরিয়ে কোয়ান্টম বলবিদ্যা ছাড়িয়ে স্টিফেন হকিং এর বিগ ব্যাং তত্ত্ব প্রবেশ করলো বিজ্ঞান তখন অস্বাভাবিক যতসব কর্মকান্ডকে বিজ্ঞানীরা আর মোটেও ভুতুড়ে কান্ড বলে উড়িয়ে দিতে প্রস্ত্তত নয় । তাঁরা চিরাচরিত প্রথাগত বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উর্ধ্বে উঠে গত বিংশ শতাব্দীর শেষপাদে বিশেষ বিজ্ঞানের অন্বেষায় সচেষ্ট হন। প্রস্তাবিত বিশেষ বিজ্ঞানের নামকরণও করা হয় “ফ্রন্টিয়ার সায়েন্স”। অআশা করা যায় অদম্য নভেল করোনা কোভিড-১৯ এর প্রকৃতি, অন্তর্নিহিত রহস্য ফ্রন্টিয়ার সায়েন্স প্রকাশিত হবে ইনশাআল্লাহ।
·
وَمَا تَوْفِيقِي
إِلَّا بِاللَّـهِ ۚ
·
ওয়ামা
তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহঃ অর্থ: আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি এবং তাঁরই প্রতি ফিরে যাই
(সূরাহ হুদ, আয়াতঃ ৮৮, [তাফসীরে
মাআ’রেফুল কোরআন, প্রথম খন্ড, চতুর্দশ
সংস্করণ-২০১১, মূল: মুফতী মুহাম্মদ শফী (রহ.), অনুবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রহ.),
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ,
·
And my success (in my task) Can only come
from Allah.
·
THE HOLY QUR’AN Sūra 11: Hūd (The Prophet
Hūd), Ayat No. 88, Makki; Revealed at Makka — Sections 10, Translation by
Abdullah Yusuf Ali About QuranYusufAli.com
https://brainberries.co/gadgets-and-science/8-things-that-will-happen-if-an-asteroid-hits-earth/2
ওয়ার্মহোল কী হতে যাচ্ছে আগামীদিনের নভোতরী?
ওয়ার্মহোল হল তাত্ত্বিকভাবে মহাবিশ্বের যেকোনো দুটি স্থানের বা স্থান-কালের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপক টানেল স্বরূপ। এর মাধ্যমে মহাবিশ্বের একটি স্থান থেকে অন্য একটি স্থানে অতি কম সময়ের মধ্যেই ভ্রমণ (Travel) কল্পনা করা যায়। সম্ভাব্য এই ট্যানেল কয়েক বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে থাকা মহাবিশ্বের এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে অবস্থিত দুটি বিন্দুকে মাত্র কয়েক মিটারের একটি টানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত করে দিতে পারে!! আমরা জানি যে, আলো সর্বদা সরল পথে চলে। তাই ওই দুই বিন্দুর একস্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে সাধারণ আলোকতত্ত্ব অনুসারে ১,৮৬,০০০ বেগে আলোর কয়েক বিলিয়ন বছর সময় লাগলেও, প্রস্তাবিত ওয়ার্মহোল ব্যবহার করে হয়তো আমরা অতি সহজেই মাত্র কয়েক মুহূর্তেই এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে চলে যেতে পারবো। ব্যাপারটা অনেকটাই আলোর চেয়ে বেশী বেগে চলার মতো। http://openspace.org.bd/%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A4/
ওয়ার্মহোলের
ধারণাটি মূলত আমেরিকান গণিতবিদ এডওয়ার্ড কাসনার এর কাসনার মেট্রিক্স ব্যবহার করে
আইন্সটাইনের ক্ষেত্র সমীকরণের সমাধানের মাধ্যমে এসেছিল এবং পরবর্তীতে তাত্ত্বিক
পদার্থবিদ পল এহরেনফেস্ট এর এহরেনফেস্ট প্যারাডক্স এর গঠনের উপর দাঁড়িয়ে আজকের
অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। ব্ল্যাকহোলের মতোই আইন্সটাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব
সমাধানের মাধ্যমেই ওয়ার্মহোলের মূলত: উৎপত্তি।
“সময় ভ্রমণের ভাবনা বহুকাল থেকেই পৃথিবীর সাহিত্য, দর্শন এবং বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে চলেছে। ভাবনার প্রথম পর্যায়ে সময়
ভ্রমণের ধারণাটি ছিল অনেকাংশে বিজ্ঞানবিবর্জিত এবং কল্পনাময়। পরবর্তী
সময়ে কুড়ি শতকের প্রথমার্ধে আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের আবিষ্কার এ সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ক্রমশ যুক্তিনির্ভর করে
তুলেছে”। শুধু তা-ই নয়;
অধিকন্ত্ত বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মাঝে মাঝে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্তভাবে সংঘটিত কিছু
অবোধগম্য বিষয় যাকেTranscendental Principle (অর্থাৎ অলৌকিক বা মানুষের জ্ঞানে কুলায় না-এমন একটি বিষয়) বলা হয়। সাধারণ মানুষ এ সব বিষয়কে ১. অদ্ভূত ব্যাপার ২.
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য ৩. ভূতুড়ে কান্ড ৪. দৈবক্রমে ৫. ভাগ্যক্রমে ৬.অতিপ্রাকৃতিক
ইত্যাদি চিরাচরিত কিছু শব্দ/বাক্যে এবং পদার্থ বিজ্ঞানীরা টেলিপ্যাথি (Telepathy), চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা হ্যালুচিনেশন (Hallucination) ইত্যাদি শব্দে উড়িয়ে দিলেও সত্যান্বেষী বিজ্ঞানীরা এর
মধ্যে অন্তনির্হিত কোন রহস্য রয়েছে কিনা তা তলিয়ে দেখতে বরাবরের মতই উদগ্রীব।
ইসলামী সংস্কৃতিতে টাইম ট্রাভেলঃ (ক) বনি ইসরাইলিদের (ইহুদী-খৃষ্টান) বাদশাহ সোলায়মান আলাইহিমুস সালাম আল্লাহ তায়া’লার একজন নবী ছিলেন। আল্লাহর নবী দাউদ আলাইহিমুস সালামের পুত্র তিনি। সোলায়মান আলাইহিমুস সালামের জামানায় সংঘটিত ট্রাইম ট্রাভেলের ঐতিহাসিক ঘটনাঃ
সাবার রাণী
বিলকিসের প্রতি সোলাইমান আলাইহিমুস সালামের পত্র:
এ সম্পর্কিত
কোরআনের আয়াতসমূহ-
(শেবার
রানী বিলকিস) বলল, ‘পরিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র
দেয়া হয়েছে, সোলাইমানের কাছ থেকে। আর তা এই-
পরম করুণাময়, পরম দয়াময় আল্লাহর নামে-
অহংকার করে আমাকে
অমান্য করো না, আনুগত্য
স্বীকার করে আমার কাছে উপস্থিত হও।
নির্দেশমতে “সাবার রানী বিলকিসের উট বহর জেরুজালেমের উপকন্ঠে
এসে পৌঁছিল। তার আগমনের কথা জানার পর তার বিশাল সিংহাসনের কথা মনে পড়ল সোলাইমান আলাইহিমুস
সালামের।
এ সম্পর্কিত কোরআনের আয়াতসমূহ-
“সোলাইমান আরও বলল, ‘হে
আমার পরিষদবর্গ! তারা আমার কাছে আত্মসমর্পন করতে আমার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার
সিংহাসন আমাকে এনে দেবে?”
“এক শক্তিশালী জ্বীন বলল, ‘আপনি আপনার স্থান থেকে ওঠার আগেই আমি তা এনে দেব। এ ব্যাপারে আমি এমনই
শক্তি রাখি। আর আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন”।
“কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বলল, ‘আপনি চোখের পলক ফেলার আগেই আমি তা এনে দেব। যখন তা সামনে রাখা দেখল তখন
(শলোমন) বলল, ‘এ আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ যেন তিনি আমাকে
পরীক্ষা করতে পারেন, আমি কৃতজ্ঞ না অকৃতজ্ঞ। যে কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করে সে তা নিজের জন্যে করে, আর যে অকৃতজ্ঞ সে জেনে
রাখুক যে, আমার প্রতিপালকের অভাব নেই, তিনি মহানুভব”।(২৭:৩৮-৪১)
(খ) পবিত্র মিরাজুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামঃ খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ অধ্যাপক কে. আলী লিখেছেন, "৪০ বছর বয়সে (৬১০ খ্রিষ্টাব্দে) ইসলামের নবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়তপ্রাপ্ত হন এবং ৫১ বছর বয়সে নবুয়তের ১১ তম বর্ষের ৬২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ রজব রাতের একাংশে মক্কা মুয়াজ্জিমায় অবস্থিত মসজিদুল হারাম থেকে ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে অবস্থিত মসজিদুল আকসা পর্যন্ত বুরাক নামক বিশেষ বিদ্যুৎযানে করে সফর করেছিলেন।
١- سُبْحَانَ الَّذِي
أَسْرَىٰ بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ
الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا ۚ إِنَّهُ هُوَ
السَّمِيعُ الْبَصِيرُ ◯
·
পরম
পবিত্র ও মহিমাময় সত্বা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন
মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার চারিদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি-যাতে
আমি তাকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও
দর্শনশীল। [সূরাহ
বনী ইসরাঈল, আয়াত নং-০১, ৮৮, তাফসীরে
মাআ’রেফুল কোরআন, ৫ম খন্ড, চতুর্দশ
সংস্করণ-২০১১, মূল: মুফতী মুহাম্মদ শফী (রহ.), অনুবাদ: মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (রহ.),
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ]
“Glory to (God) Who did
take His Servant For a Journey by night From the Sacred Mosque To the Farthest
Mosque, Whose precincts We did Bless,—in order that We Might show him some Of
Our Signs : for He Is the One Who heareth And seeth (all things)”.
(Source: Sūra 17: Al-Isrā (Night Journey) or
Bani Isrā-īl (the Children of Israel), Ayat: 1, Makki; Revealed at Makkah — Sections 12, translation
by Abdullah Yusuf Ali About QuranYusufAli.com
ওয়ার্মহোল – আন্তঃমহাজাগতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা
আধুনিক সাহিত্য-সংস্কৃতিতে
টাইম ট্রাভেলঃ
আধুনিক কৃষ্টি-সাহিত্য-সংস্কৃতি তথা গল্প কবিতা, উপন্যাসেরও কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে এই টাইম ট্রাভেল বা সময় যাত্রার ধারণা।[৩] ১৭৩৩ খ্রিষ্টাব্দে লেখা আইরিশ লেখক স্যামুয়েল ম্যাদেনের 'মেমরিজ অব টোয়েণ্টিয়েথ সেঞ্চুরি' তে সময় ভ্রমণের হাল্কা আভাস পাওয়া যায়।[৪] ফরাসী লেখক ল্যুই সেবাস্তিয়ান মারসিয়ারের L'An 2440, rêve s'il en fut jamais উপন্যাসে আমরা পাই প্যারিসের এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সময় ভ্রমণের বৃত্তান্ত। ১৭৭০ সালে লেখা এই উপন্যাসটি তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে ১৮১৯ খ্রিষ্টাব্দে রচিত মার্কিন লেখক ওয়াশিংটন আরভিংয়ের ' রিপ ভান উইঙ্কল ' ছোটগল্পটিও সময় ভ্রমণের একটি সুন্দর কাল্পনিক আখ্যান।[৫] রুশ সাহিত্যিক আলেকজান্ডার ফরমিচ ভেল্টম্যান ১৮৩৬ এ রচনা করেন 'প্রেদকি কালিমেরোসাঃ আলেকজান্ডার ফিলিপোভিচ ম্যাকেডনস্কি '।[৬] গল্পে গল্পকথক পক্ষীরাজের ঘোড়ায় প্রাচীন গ্রীস ভ্রমণ এবং সম্রাট আলেকজান্ডারের সঙ্গে সমুদ্রযাত্রার অনুষঙ্গে রুশ সাহিত্যে সম্ভবত সর্বপ্রথম সময় ভ্রমণের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন। ১৮৬১ সালে লেখা ফরাসী উদ্ভিদবিদ এবং ভূতত্ত্ববিদ পিয়ের বইটার্ডের 'প্যারিস অ্যাভোঁ লেসোম্ব' রচনাটিতে কাহিনীর মূল চরিত্রের প্রাগৈতিহাসিক প্যারিস নগর ভ্রমণের এক সুন্দর বর্ণনা ফুটে উঠেছে। এ ছাড়াও চার্লস ডিকেন্সের 'আ ক্রিসমাস ক্যারল'[৭],'নিউ মান্থলি ম্যাগাজিন' এ প্রকাশিত স্বনামধন্য মার্কিন লেখক এডওয়ার্ড হেলের 'হ্যান্ডস অফ' এবং আরও অসংখ্য গল্প উপন্যাসে আমরা সময় ভ্রমণের উল্লেখ পাই। (সূত্র: https://bn.wikipedia.org/wikiসময়_ভ্রমণ)
প্রচলিত বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ধারায়
আশা-নিরাশার দোলায় সায়েন্স ফিকশনের নভোতরী:
মহাকাশ কত বড়? এর উত্তর হয়তো এই পৃথিবীতে কখনও পাওয়া যাবে না। তবে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এতটুকু বলেই ক্ষ্যান্ত হন যে, জানা মহাকাশের চেয়ে অজানা মহাকাশ অ-নে-ক, অ-নে-ক বড়। কত বড়? তা অনুভব-উপলদ্ধি করতে হলে নিম্নোক্ত কিছু পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা যেতে পারেঃ যেমন, গড় দূরত্বে ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরবর্তী সূর্য থেকে আলো পৃথিবীতে আসতে যদি ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড সময় নেয় তাহলে সূর্যের পরের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টুরাইতে যেতে ৪ দশমিক ৩৭ আলোক বর্ষ, আমাদের অদূরবর্তী নিজস্ব ছায়াপথ বা (মিল্কিওয়ে) এর একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত ঘুরে বেড়াতে পাড়ি দিতে ১০ লাখ আলোক বর্ষ। আর গোটা মহাবিশ্ব যার আনুমানিক পরিধি কল্পনা করা হয়েছে কমপক্ষে যে ৪৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন আলোক বর্ষ তার মাইলেজ কিংবা কিলোমিটার বা কত?-এই অচিন্তনীয় দূরত্ব বৈজ্ঞানিক কল্পলোকে মুহুর্তের মধ্যে পাড়ি দিয়ে আবার পৃথিবীতে ফিরে আসতে কত দ্রুতগতি সম্পন্ন নভোতরী বা নভোভেলার প্রয়োজন তা সহজেই অনুমেয়। এ কারণে সায়েন্স ফিকশনিস্টরা কোন ভেলা বা তরীতে নয় শর্টকাট বিকল্প পথে মহাবিশ্ব মুহর্তের মধ্যে পাড়ি দিয়ে মুহুর্তের মধ্যে ফিরতে চান। শর্টকাট এই বিকল্প পথের নামকরণও করা হয়েছে “ওয়ার্ম হোল” নামে।
“বিজ্ঞানীদের ধারণা, একটি ওয়ার্মহোলের ভেতরের পথ যদি চারপাশের স্থানের চেয়ে সংক্ষিপ্ত হয়, তাহলে একে স্থান-কালের মধ্যে একটি শর্টকাট পথ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব”(সূত্র: বিজ্ঞানচিন্তা, মে-২০১৯, বর্ষ: ৩, সংখ্যা-৮, পৃষ্ঠা: ৬৮)।
প্রস্তাবিত ওয়ার্ম হোল-কে দুই প্রান্ত বিশিষ্ট এক প্রকার সুড়ঙ্গ (টানেল) যা মহাবিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের অকল্পনীয় দূরত্বের মধ্যে যোগসূত্রক হিসেবে কাজ করবে। ওয়ার্মহোলের ধারণাটা এসেছিল কার্যতঃ ত্রিমাত্রিক স্থান কীভাবে সময়ের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে চতুর্মাত্রিক স্থান-কাল তৈরি করে তার ব্যাখ্যা সমম্বলিত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের বিখ্যাত ক্ষেত্র সমীকরণের বিশেষ একটি গাণিতিক সমাধান থেকে। (সূত্রঃ প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা ৬৮) ওয়ার্ম হোল-কে আইনস্টাইন-রোজেন ব্রিজও বলা হয়।
বস্ত্ততঃ মহাবিশ্বে যাতে আইনস্টনীয় আলোর গতির (১,৮৬,০০০ মাইল) চাইতে বেশি দ্রুতগতিতে মহাবিশ্বের মহা দূরত্ব সহজে অতিক্রম করা যায় তাত্ত্বিকভাবে ওয়ার্ম হোল দিয়ে তা-ই নির্দেশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, কৃষ্ণ গহ্বরের আয়ুস্কাল শেষ হওয়ার পূর্বাবস্থায় মহাকর্ষের প্রভাবে চুপসে গিয়ে অতি শক্তিশালী মহাকর্ষীয় বলের সৃষ্টি করে। তাতে কৃষ্ণ গহ্বরের অআগের নক্ষত্রের পদার্থগুলো চুপসে গিয়ে অসীম ঘনত্বের একটি সিঙ্গুলারিটি বা পরম বিন্দুর সৃষ্টি করে যার বহিঃপ্রান্তকে বলা হয় ইভেন্ট হরাইজন বা ঘটনাদিগন্ত। পরম বিন্দু থেকে বহুদূরে দুইটি কৃষ্ণ গহ্বর তাদের ঘটনাদিগন্তের কাছে যুক্ত হয় অর্থাৎ এই অন্চলের চারপাশের বক্র ও মসৃণ স্থান-কাল থেকে সৃষ্টি হয় এক প্রকার সেতুবন্ধ বা যোগসূত্র যাকে বলা হয় “আইনস্টাইন-রোজেন ব্রিজ” বা সেতু (সূত্রঃ প্রাগুক্ত পৃঃ ৬৮)।
বলা যায় এখান থেকেই ওয়ার্ম হোল ধারণার বুৎপত্তি। ঘটনা দিগন্ত অন্চলের এই “আইনস্টাইন-রোজেন ব্রিজ” ব্যবহার করেই অসীম বিশ্বের অসীম দূরত্ব পাড়ি দেয়ার আশা-প্রত্যাশায় প্রহর গুনছেন সায়েন্স ফিকশনিস্টরা। এই ওয়ার্ম হোলের মাধ্যমে যেমন এক কৃষ্ণ গহ্বর থেকে আরেক কৃষ্ণ গহ্বরে অনেকটা ট্যানেল অআকারে গমণাগমনে সন্দেহ নেই পরম স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেবে বৈকি। এটি হচ্ছে সায়েন্স ফিকশনিস্টদের জন্য সুসংবাদ, অন্ততঃ নিউট্রিনো অআলোর গতির উর্ধ্বে উঠার তত্ত্ব বানচাল হয়ে যাওয়ার পর যে হতাশা দেখে দিয়েছিল তাতে ওয়ার্ম হোল একপ্রকার আশার আলো দেখাচ্ছে তাতে কম কী? তবে অআশা যেমন ওয়ার্ম হোলে রয়েছে তেমনি নিরাশাও। কারণ, ওয়ার্ম হোল কৃষ্ণ গহ্বরের যতই কাছাকাছি যাওয়া যাবে ততই মহাকর্ষের টান বাড়তে থাকবে।
একসময় আন্তনাক্ষত্রিক অভিযাত্রীসহ ওয়ার্ম হোল নামক নভোতরী পরমাণুতে পরিণত হয়ে একাকার হয়ে যেতে পারে অসীম মহাকাশের গভীরান্তরে।তাছাড়া কৃষ্ণ গহ্বর দ্বিমুখ বিশিষ্ট হবে এবং অপর প্রান্ত বেয়ে অআরেক কৃষ্ণগহ্বরে যাওয়া যাবে এমন নিশ্চয়তার অবকাশ নেই। যদি তাই হয় তাহলে এই অন্চলের চারপাশের বক্র ও মসৃণ স্থান-কাল থেকে সৃষ্ট “আইনস্টাইন-রোজেন ব্রিজ” নামক সেতুবন্ধ বা যোগসূত্র অকার্যকর হয়ে পড়বে না-এমন নিশ্চয়তা বিজ্ঞানীরা দিতে অপারগ।
পদার্থবিদেরা গতানুগতিক কৃষ্ণ গহ্বরগুলোর মধ্যে তাত্ত্বিক সেতুগুলোকে অতিক্রম অযোগ্য ওয়ার্মহোল বলে মন্তব্য করেছেন। ফলে বলা যায়, সায়েন্স ফিকশনিস্টরা নিউট্রিনোর মতই ওয়ার্ম হোলের ব্যাপারেও এক প্রকার আশাহত। এতেও দমে নেই ফিকশনিস্টরা। তাঁদেরকে আশার আলো দেখাচ্ছেন ২০১৭ সালে নোবেল বিজয়ী ক্যালটেকের তাত্ত্বিক পদার্থবিদ কিপ থার্ন। (পৃঃ৬৮)। তিনি মনে করেন যে, দুটি প্রান্তে থাকা সুড়ঙ্গ তাদের চারপাশের ‘বিশেষ ধরনের পদার্থের’ বিস্ফোরণে পরিবর্তন করা সম্ভব। নেগেটিভ বা ঋণাত্মক শক্তিসম্পন্ন বিশেষ ধরনের এই পদার্থকে বলা হয় ‘এক্সোটিক ম্যাটার’।
তাত্ত্বিকভাবে থার্নের ‘এক্সোটিক ম্যাটার’ বিস্ফোরণে প্রতিটি কৃষ্ণ গহ্বরের জ্যামিতি পাল্টে দিয়ে আইনস্টাইন-রোজেন সেতুর প্রান্তগুলো ঘটনাদিগন্তের বাইরে নিয়ে আসে। আর তাতে সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে এক প্রান্ত থেকে আলোর চেয়ে বেশি দ্রুত অআরেক প্রান্তে পৌঁছা সম্ভবপর হতে পারে।
►বিজ্ঞানীদের ধারণা, অতি উন্নত কোন সভ্যতা হয়তো কোয়ান্টাম কণাকে এমনতর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে এবং তা দিয়ে তাদের পক্ষে একটা ওয়ার্মহোল তৈরি করা সম্ভবপর হবে। এমন ধারণা সায়েন্স ফিকশনিস্টদের জন্য সুসংবাদ বটে (অসমাপ্ত ইনশাআল্লাহ)।
No comments:
Post a Comment