করোনা কোভিড-১৯ এর উচ্চমাত্রার সংক্রমণ চাকাঃ উল্টোপানে
ঘুরলো কেন?
নভেল করোনা (কোভিড-১৯) এর শীতকালীন বৈশ্বিক অবস্থা
ডিসেম্বর ২০২০ মাসের করোনা পরিসংখ্যানরোনা কোভিড সম্পর্কে গবেষকদেরমত
নভেল করোনা কোভিড-১৯ মহামারির বিশ্ব চিত্র
আন্তর্জাতিক
সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, ১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখ, মঙ্গলবার রাত ১১টা
পর্যন্ত বিশ্বের ৭,৬৮০ মিলিয়ন প্রায় ৭৫৫ কোটি মানুষের মধ্যে এ ভাইরাসে আক্রান্ত
হয়েছে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৬ জন মানুষ। তাদের মধ্যে বর্তমানে ১ কোটি ৮০ লাখ
৬৮ হাজার ৮৬৬ জন চিকিৎসাধীন এবং এক লাখ পাঁচ হাজার ৯০৪ জন (১%) আশঙ্কাজনক অবস্থায়
রয়েছে। করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯০৭ জন। এ পর্যন্ত করোনায়
আক্রান্তের মধ্যে ৪ কোটি ৪২ লাখ ১৫ হাজার ৬৫৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র
একদিনে এক হাজার ৪৭৯ জনের মৃত্যু দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এখনো
করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে। সবমিলিয়ে দেশটিতে ভাইরাসজনিত কারণে
দুই লাখ ৪৭ হাজারের বেশি প্রাণ গেল। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে বেড়েছে শনাক্তের হার। মোট ১ কোটি ৭
লাখের বেশি সংক্রমিত।
যুক্তরাষ্ট্রে তাণ্ডব চালাবে করোনার নতুন ধরন, সতর্কবার্তা
মার্কিন রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্রিটেনে শনাক্ত হওয়ার করোনার নতুন স্ট্রেইন আরো ছড়িয়ে পড়বে। জনস্বাস্থ্য ইংল্যান্ডের-পিএইচইর সর্বশেষ গবেষণায় এসেছে, বর্তমানে ব্রিটেনের বেশির ভাগ অঞ্চলে পূর্ববর্তী স্ট্রেনের চেয়ে ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ শতাংশ বেশি সংক্রমণযোগ্য। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, করোনার নতুন ধরন মোকাবিলায় এখনকার বাজারের ভ্যাকসিন নাও কাজ করতে পারে।
বিবিসির সর্বশেষ তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি অঙ্গরাজ্যের ৭৬ জনের শরীরে নতুন ধরনের করোনা অস্তিত্ব মেলেছে, যা যুক্তরাজ্যের ধরনের সঙ্গে মিল রয়েছে। যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি, ব্রাজিল ও পর্তুগালসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে করোনার নতুন স্ট্রেন শনাক্ত হয়েছে। https://www.somoynews.tv/pages/details/258758 Dated 16.01.2021
ভারত
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৫০ জন। এদিন
করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৪৮ হাজার ২৫৮ জন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে মোট প্রাণহানির
সংখ্যা এক লাখ ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার।
ব্রাজিল
গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬৪ জনের মৃত্যু দেখেছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। দেশটিতে মোট প্রাণহানি এক লাখ ৬৩ হাজার ছাড়িয়েছে। নতুন ৪৭ হাজার সংক্রমণে মোট আক্রান্ত ৫৭ লাখ ৪৯ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে করোনার প্রকোপ কমছেই না।
বাংলাদেশ
কি আসলে করোনা কোভিড-১৯ ঝুঁকিমুক্ত দেশ?
২০১৮ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী বাংলাদেশ ১,৪৮,৪৬০ বর্গকিলোমিটার (৫৭,৩২০ বর্গমাইল) আয়তনবিশিষ্ট বিশ্বের ৯২ তম এবং জনসংখ্যা ১৬,১৩,৭৬,৭০৮(ষোল কোটি তের লক্ষ ছিয়াত্তর হাজার সাতশত আট জন) এর বিবেচনায় বিশ্বের ৮ম দেশ বৃহ্ত্তম, ঘনত্ব ১,১০৬ প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,৮৬৪.৫ প্রতি বর্গমাইল) বিবেচনায় ১০ম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় এহেন বাস্তবতা সঙ্গত কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের ক্ষেত্রে যে কোন ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়াজনিত মহামারীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হতে যথেষ্ট। এ কারণে কোভিড-১৯ এর সূচনাতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধানসহ বিশ্বের প্রখ্যাত ভাইরোলজিস্টদের আশংকা ছিল বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে সম্ভবতঃ বিশ্বের প্রধান নভেল করোনা কোভিড-১৯ আক্রান্ত দেশে।
বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় বাংলাদেশে দ্রুত রূপান্তরিত নভেল করোনা কোভিড-১৯ এর স্বরূপ
করোনার নমূনা বিশ্লেষণ করে বিসিএসআইআর, বাংলাদেশের গবেষকরা দেখেছেন, বাংলাদেশে স্পাইক প্রোটিন ৬১৪তম অবস্থানে থেকে অ্যাসপার্টিক এসিডে পরিবর্তিত হয়ে গ্লাইসিনে রূপান্তরিত হয়েছে। এতে ‘জি৬১৪’ নামক ভ্যারিয়েন্টটি শতভাগ সংক্রামণ শক্তিমত্তা লাভ করে। এ কারণে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হওয়ার কথা। তাছাড়া, ক্ষুদ্রায়তন বিশিষ্ট বিশ্বের অন্যতম প্রধান জনবহুল দেশ বাংলাদেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সঙ্গতকারণে দুরূহ হওয়ায় করোনা সংক্রমণ আরও তুঙ্গে উঠার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভবতঃ এ কারণে কার্যতঃ বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে বিশ্বের অপরাপর দেশের তুলনায় অন্ততঃ দ্বিগুণ মাত্রার করোনা কোভিড-১৯ এর প্রবাহ যা নিম্নোক্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা গেছে:
বাংলাদেশ শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) সম্প্রতি বাংলাদেশে বিদ্যমান করোনা কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্স করে জানতে পেরেছে যে, সারা বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে প্রায় দ্বিগুণ গতিতে করোনা তার রূপ বদলাচ্ছে। যার ফলে সঙ্গতকারণে প্রশ্ন উঠেছে করোনার রূপ যদি বাংলাদেশে এভাবে পাল্টাতে থাকে, তাহলে ট্রায়ালে থাকা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কি বাংলাদেশের জন্য থাকবে?
উল্লেখ্য, বিশ্বে করোনাভাইরাসের রূপান্তরের হার যেখানে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রূপান্তরের হার ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির এক দল গবেষক এ তথ্য জানিয়েছেন। গবেষকরা জানান, এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল: বাংলাদেশে SARS-CoV-2 [নভেল করোনা ভাইরাস ডিজিজ (কোভিড-১৯) এর বৈজ্ঞানিক নাম] ভাইরাসের সংক্রমণ, মিউটেশনের হার, জিনগতবৈচিত্র্য, নন-সিনোনিমাস মিউটেশন এবং জেনোমিক ফাইলোজেনি পর্যবেক্ষণ করা এবং গবেষণালব্ধ ফলকে কোভিড-১৯ মহামারি উপশমে কার্যকর ভূমিকা পালনে যথাপোযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে জিনগত বৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ করার জন্যে SARS-CoV-2 ভাইরাসের সর্বমোট ২৬৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ও ডাটা বিশ্লেষণ করা হয়।
উল্লেখ্য, করোনার কোভিড-১৯ এর স্পাইক প্রোটিনের জিনে ১০৩টি নিউক্লিওটাইড মিউটেশনের মধ্যে ৫৩টি
নন-সিনোনিমাস অ্যামিনো এসিডের প্রতিস্থাপন ঘটে—যার
মধ্যে ৫টি স্বতন্ত্র যা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
বিসিএসআইআরের বায়োলোজিক্যাল রিসার্চ ডিভিশনের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. মো. সেলিম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেনঃ আমাদের দেশে অন্য দেশের তুলনায় মিউটেশনটি খুব দ্রুত হচ্ছে। আমরা (বাংলাদেশে) মিউটেশন পেয়েছি অনেকগুলো। এই মুহূর্তে এদেশে করোনার ৫টি মিউটেশন বা ইউনিট আছে, যেগুলো বিশ্বের কোথাও ঘটেনি। এর বাইরে আরও আছে কিনা সেটা দেখতে হলে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে, কারণ সামনে শীতকাল আসছে।’(৬.১.২০২১ তারিখ, ২২ পৌষ, ১৪২৭ বাংলার প্রথম আলোর খবরে প্রকাশ, মিউটেশন বাংলাদেশে ৫ মাত্রা ছাড়িয়ে ৬ মাত্রায় পৌঁছেছে)।
যাহোক, ২৬৩টি SARS-CoV-2 জিনোম বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে, সর্বমোট ৭৩৭টি পয়েন্টে মিউটেশন হয়, যার মধ্যে ৩৫৮ নন-সিনোনিমাস অ্যামিনো এসিড প্রতিস্থাপন ঘটায়। এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত SARS-CoV-2 ভাইরাসের মিউটেশনের হার বার্ষিক ২৪ দশমিক ৬৪ নিউক্লিওটাইড। যেহেতু সারা বিশ্বে নমুনাপ্রতি মিউটেশন হার ৭ দশমিক ২৩ এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৬০ লক্ষ্য করা যায় সেহেতু এটা সুস্পষ্ট প্রতীয়মান যে, বিশ্বের অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় বাংলাদেশে SARS-CoV-2 ভাইরাসটি অনেক দ্রুতগতিতে এর রূপ পরিবর্তন করছে।
বাংলাদেশ কি করোনা কোভিড-১৯ ঝুঁকিমুক্ত দেশ?
গত বছরের (২০২০ সালের) মধ্যভাগে অপরাপর দেশের চাইতে বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ তুলনামূলক কম হলেও করোনার প্রথম প্রবাহ বাংলাদেশের উপর দিয়ে মোটামুটি বিপজ্জনকভাবে বইয়ে যায়। এমতাবস্থায় লকডাউন তুলে নেয়ার উদ্দেশ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধান প্রত্যাহার করার সরকারী সিদ্ধান্ত উচ্চমাত্রার করোনা সংক্রমণের আরো প্রবল আশংকা দেখা দেয়। বিশেষ করে আসন্ন শীত মৌসুমে বাংলাদেশে শীতকালীন করোনা কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় প্রবাহের প্রবল আশংকায় বাংলাদেশ আগাাম সতর্কতা হিসাবে কঠোর করোনা বিধি জারী করে No Mask No Service নামে। এতে ধর্মমন্ত্রণালয় হতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মসজিদে মসজিদে বাধ্যতামূলক নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখার নিম্মোক্ত নির্দেশনা জারী করা হয়: "আপনার নিরাপত্তার স্বার্থে মাস্ক পরিধান করে মসজিদে আসুন"পজিশন প্রাপ্ত। তার মানে এটা বাংলাদেশে প্রিভিলেজড রেঞ্জ যা সৌভাগ্যক্রমে আমাদের লাভ হলো।
কিন্ত্ত বাংলাদেশে রহস্যজনকভাবে করোনার উচ্চ সংক্রমণের চাকা উল্টোপানে ঘোরার ফলে এদেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আশংকার চেয়ে ধারণাতীত এতই বিপরীত যে, স্কুল-কলেজ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে করোনামুক্ত দেশ ঘোষণা যেন এখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে যা নিম্নের পরিসংখ্যানে সহজেই অনুমেয়ঃ
বাংলাদেশে করোনা-রাত কেটে যাচ্ছে?
‘ময়মনসিংহে করোনাভাইরাসের
(কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্তের পর এই প্রথমবার সংক্রমণবিহীন একটি দিন পার করেছে
ময়মনসিংহবাসী। আজ ৬ জানুয়ারি, ২০২১ বুধবার প্রাপ্ত নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে জেলায়
নতুন করে একজনও করোনা পজিটিভ শনাক্ত হননি।’ (প্রথম আলো
ডটকম, ৬ জানুয়ারি ২০২১।)
প্রথম আলো লিখেছে, বাংলাদেশে তিন সপ্তাহ ধরে রোগী শনাক্তের হার হাজারের নিচে। ৬ জানুয়ারির খবর, বাংলাদেশে আগের ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে মৃত্যু ১৭। এর আগের দিন ছিল ২০। আমরা যে আশঙ্কা করেছিলাম, শীতে করোনা সংক্রমণ বাড়বে ভয়াবহভাবে, কোভিডে মৃত্যু বেড়ে যাবে ভয়ংকর রকম, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ তা বলছে না। বরং বাংলাদেশের গ্রাফের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশ তার ভৌগোলিকসহ বিভিন্ন অবস্থানগত কারণে বিশ্বের সবচেয়ে করোনা কোভিড-১৯ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও যে একাধিক কারণে এদেশ তুলনামূলক করোনা কোভিড-১৯ ঝুঁকিমুক্ত হয়েছে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিম্নরূপঃ
বাংলাদেশ যে কারণে করোনা কোভিড-১৯ ঝুঁকিমুক্ত দেশ
বৈজ্ঞানিক কারণঃ
জনসচেতনতাঃ
١١- لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِّن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ
يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّـهِ ۗ إِنَّ اللَّـهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ
حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ ۗ وَإِذَا أَرَادَ اللَّـهُ بِقَوْمٍ
سُوءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُ ۚ وَمَا لَهُم مِّن دُونِهِ مِن وَالٍ ◯
►আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্য ততক্ষণ পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না সে জাতি নিজে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে সচেষ্ট হয়
। (সূরায়ে রাদ, আয়াতঃ ১১)
“For each (such person) There are (angels) in succession, Before and behind him: They guard him by command Of Allah. Verily never Will Allah change the condition Of a people until they Change it themselves (With their own souls). But when (once) Allah willeth A people’s punishment, There can be no Turning it back, nor Will they find, besides Him, Any to protect”. Sūra 13: Ra’d, Ayat: 11,Verses 43 — Madani; Revealed at Madina — Sections 6, Translation by Abdullah Yusuf Ali About QuranYusufAli.com
' জনসচেতনতাঃ মানুষ তার জীবনকে কত ভালবাসে, কত গুরুত্ব দেয় তার প্রমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারী জরুরী স্বাস্থ্য নির্দেশনা এবং লকডাউনকালীন স্বেচ্ছায় বেকারত্ব বরণ করে অআর্থিক ক্ষতি স্বীকার করে হোম কোয়ান্টারাইনের বিধানাবলী বিনা বাক্যে মেনে চলা। এমনকি মানব মনের সবচেয়ে স্পর্শকাতর যে ধর্মবোধ তা-ও জীবনের বৃহত্তর স্বার্থে ধর্মীয় নির্দেশনার আলোকে স্ব- স্ব ধর্মাবলম্বীরা মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ইত্যাদি উপাসনালয় পর্যন্ত সাময়িক বন্ধ রাখতে দ্বিধাবোধ করেন নি।
সরকারী দায়িত্ববোধঃ সরকারও যে আপন আপন প্রজাসাধারণের জীবন সমস্যার সমাধানে কত আন্তরিক তারও প্রমাণ রয়েছে স্ব-স্ব দেশের স্ব-স্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মুর্হঃমুর্হ করোনা সতর্কতা বার্তা জারীসহ লকডাউনকালীন হোম কোয়ান্টারাইনে থাকা জনগণের জন্য আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ, আর্থিক অনুদান প্রদানের মধ্য দিয়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO): অন্যদিকে বিশ্ব মানব স্বাস্থ্যের প্রতিনিধিত্বশীল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কর্তৃক অতি দ্রুত করোনা ভাইরাস সনাক্ত করে তাকে অতিমারি কিংবা মহামারীরূপে (World Pandemic) তাৎক্ষণিক ঘোষণা এবং ক্ষণে ক্ষণে বিশ্বব্যাপী দেশে দেশে জরুরী স্বাস্থ্য নির্দেশনা প্রদান করে WHO আন্তর্জাতিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধের যে প্রমাণ দিয়েছে তা অনস্বীকার্য। অন্যথায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিলম্বিত পদক্ষেপ বর্তমানে বিদ্যমান নভেল করোনা (কোভিড-১৯) হয়তো বা স্পেনিজ প্লেগের চাইতেও ভয়ংকর রূপ ধারণ করতো।
নভেল প্যান্ডেমিক সার্স-২ করোনাকালীন বিশ্ব
ধর্মসমূহের অবস্থান
খৃষ্টান
ধর্মঃ নভেল করোনা কোডিভ-১৯ এর প্রাদুর্ভাবকালীন সময়ে রোমের ভ্যাটিকানের দেয়ালে পরিবেষ্টিত এবং বাইরের দুনিয়া থেকে আলাদা পোপ এমন একটি ধর্মীয়
আচার উদযাপন করেছেন, যা করার কথা ছিল সমগ্র ইটালিতে। লকডাউনকালীন খৃষ্টান বিশপ ও চার্চ প্রধানরা একের পর এক তাঁদের ধর্মীয় সম্মিলনগুলো বাতিল করেছেন ৷ চার্চ কিংবা অন্য উপাসনালয়গুলোতে ধর্ম মূলত নির্দিষ্ট
সম্প্রদায় ও তাদের সংবেদনশীলতার ওপর নির্ভর করে৷ যেমন, পবিত্র
পাথরে, তোরাহ বা অন্য পবিত্র গ্রন্থে অনেক
মানুষের চুমু খাওয়া কিংবা একই পেয়ালা থেকে সবাই পান করা ৷ লকডাউনকালীন সময়ে রোমের সেইন্ট পিটারস ক্যাথিড্রাল
পুরোপুরি বন্ধ ছিল৷ এছাড়া আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চার্চ যেমন, ভিয়েনায় সেইন্ট স্টেফেনসে প্রবেশ একদম কড়াকড়ি করা হয়েছে৷
সংকট গবেষক ফ্রাঙ্ক রোজেলিয়েব মনে করেন চার্চগুলো সঠিক
সিদ্ধান্তই নিয়েছে৷ তিনি বলেন, ধর্মাবলম্বীদের প্রতি চার্চের কর্তব্য
আছে ৷ রোজেলিয়েব আশা করেন, সেইন্ট পিটার'স চত্বরের সানডের সমাবেশও বাতিল করা হবে৷
দক্ষিণ কোরিয়াতে খ্রিস্টানদের একটি সংঘ সরকারি নির্দেশ মানেনি এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে৷ যুক্তরাষ্ট্র ও ইটালির অনেক দক্ষিণপন্থি ক্যাথলিকের মাঝেও একরকমের অজ্ঞতা দেখা গেছে৷ এই মানুষগুলো করোনা প্রশমনের বিধি-নিষেধগুলো নিয়ে অহেতুক ঝামেলা করেছেন৷ যখন ইটালিজুড়ে এপ্রিলের প্রথমভাগ পর্যন্ত চার্চ বন্ধের ঘোষণা আসে, তখন তারা আন্ডারগ্রাউন্ড চার্চ তৈরির চেষ্টা করেন, যেমনটি কমিউনিজমের যুগে করা হয়েছিল ৷
ইয়াহুদী ধর্মঃ করোনা কোডিভ-১৯ এর সংক্রমণকালীন যুক্তরাষ্ট্রে ইয়াহুদীদের অসংখ্য উপাসনালয় সিনাগগ বন্ধ ছিল। এই সময় ইহুদিদের পুরিম উৎসব কোনমতে পালিত হয়েছিল৷ অথচ এটি কার্নিভালের মত মহাসমারোহে পালন করেন তারা৷ ইসরায়েলে সিনাগগগুলোতে দর্শনার্থীর সংখ্যা একেবারে কমিয়ে দেয়া হয়েছে৷ মানুষ পবিত্র বস্তুগুলোতে চুমু খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন৷
হিন্দু ধর্মঃ ভারতে আর্য হিন্দুদের হোলি উৎসবও নানান বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে উদাযাপিত হল ৷
ইসলাম ধর্মঃ নভেল প্যান্ডেমিক করোনা কোভিড-১৯ এর প্রারম্ভকালীন সময়ে জার্মানির মুসলিমদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল বলেছিল, যদি স্বাস্থ্যগত কারণে বা কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এমন সন্দেহ হয় তাহলে কোনো মসজিদ জুম্মা বা অন্য নামাজের জামাত বাতিল করতে পারবে ৷
মুন্সটার থেকে ইসলাম গবেষক ও শিক্ষক মুহামাদ খোরশিদ
সম্প্রতি মক্কায় ওমরাহ পালন আপাতত বন্ধ রাখার উদাহরণ দিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা সবচেয়ে সঠিক ও দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত এবং এতে বোঝা যায়, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ৷’’ ইউরোপের ইমামরা এদিক
থেকে অনেকটা এগিয়ে ৷ খোরশিদ মনে করেন তাঁরা ‘অত্যন্ত
ইতিবাচক ভূমিকা' পালন করতে পারেন৷ করোনাকালীন সময়ে
সবচেয়ে স্পর্শকাতর (সেন্সেটিভ) পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল খাদেমুল হারামাইন সৌদী আরবের
বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ-কে। সৌদী ধর্ম এবং ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে
বাদশাহ একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও গুটি কয়েক মুসল্লি ব্যতিরেকে মসজিদুল হারাম
(বায়তুল্লাহ) এবং মসজিদ নব্বীতে সাময়িকভাবে সর্ব সাধারণের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজ,
সাপ্তাহিক জুমার নামাজ পবিত্র রমজান মাসের তারাবী (খতমে কুরআনসহ) এবং ১৪৪১ হিজরী
মোতাবেক ২০২০ সালের হজ্ব পালন বাতিল করেছিলেন।
সব মিলিয়ে এটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, চার্চ,
সিনাগগ, মসজিদ, মন্দির সসব জায়গাতেই ধর্মীয় আচার পালনে কিছুটা খাপ খাইয়ে নিতে হচ্ছে ৷(সূত্রঃhttps://www.dw.com/bn/%E0%A6%95%E0%A6%
ক্রিস্টোফ স্ট্র্রাক/জেডএ
পবিত্র ইসলামে রোগ-শোক বিপদমুক্তি
ও সৎ কামনা-বাসনা পূরণে দোয়া-কালামের গুরুত্ব
সকাল সন্ধ্যায় জিকির প্রসংঙ্গে পবিত্র কোরানে ইরশাদ হয়েছে, يا ايها الذين آمنوا اكروا الله ذكرا كثيرا ، وسبحوه بكرة واصيلا. (احزاب অর্থ : হে মুমিনগণ ! তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। (আহযাব-৪১)
সুখে-দুঃখে দোয়া সব সময়ের দোয়ার ফজিলতঃ দোয়া দ্বারা যেমন মুসিবত দূর হয়, তেমনি মুসিবত আসাও বন্ধ হয়। তাই দোয়া কেবল বিপদ-আপদের সময় নয়, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ও করা উচিত। অর্থাৎ শোকর গোজারি করা উচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তির কাছে এটা পছন্দ হয় যে আল্লাহ তাআলা বিপদ-আপদের সময় তার দোয়া কবুল করবেন, তবে সে যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়ও দোয়া করে। তিনি আরও বলেন, দোয়া মুমিনের হাতিয়ার বা অস্ত্র, দীনের খুঁটি এবং আসমান ও জমিনের নূর। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে দুঃখের সময় যেন আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করেন, তবে সে যেন সুখের সময় অধিক পরিমাণে দোয়া করে।’ (জামে তিরমিজি, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৪৬২, হাদিস নম্বর: ৩৩৮২)।
মুমিনের কোনো
দোয়া বিফলে যায় না
করোনা কোভিড-১৯ মহামারী থেকে নাজাতের সহীহ হাদিসভিত্তিক মাসনুন দোয়া-কালাম
· Hadith Based Dua for safe & Sound from CORONAVIRUS-COVID-19
اَللَّاَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَ الْجُنُوْنِ وَ الْجُذَامِ وَمِنْ سَىِّءِ الْاَسْقَامِ
اَل
·
(Allahumma
Innee A’ujubika Minal Barosi, Wal Zunooni, Wal Zujaami Wa Syeil Asqo-m).
·
বাংলা উচ্চারণ “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউ'যুবিকা মিনাল বারাসি,
ওয়াল জুনু-নি, ওয়াল জুযা-মি, ওয়ামিন সাইয়্যি ইল আসক্ব-ম”।
আয় আল্লাহ ! আমি
আপনার কাছে আশ্রয় চাই শ্বেত, উন্মাদনা,
কুষ্ঠ এবং সমস্ত দুরারোগ্য ব্যাধি হতে” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৫৪)।
·
Oh Allah, I seek refuge to you
from Vitiligo , Madness, Leprosy and all Non-curable diseases ”(Sunan Abu
Dawood, Hadith No. 1554)
·
اللَّهُمَّ إِنِّي
أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَ
الْاَدْوَاءِ
·
(Allahumma
Innee A’uzubika Min Munkaro-til Ahlaaqi Wal A’maali Wal Ahwaai Wal
Adwaai-Tirmiji Hadith)
·
উচ্চারণ: [আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুনকারাতিল আখলাক্বি
ওয়াল আ’মালি ওয়াল আহওয়ায়ি, ওয়াল
আদওয়ায়ি (তিরমিজি)]
·
অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার কাছে খারাপ চরিত্র, অন্যায় কাজ ও
কুপ্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং অসুস্থতা ও নতুন সৃষ্ট রোগ বালাই থেকে আশ্রয় চাই।
· [Meaning :Oh Allah, Surely I seek refuge to you from bad character, badness of wrongdoing and misconduct, and sickness and newly born disease (Tirmiji Hadith)]


No comments:
Post a Comment