নাহমাদুহু
ওয়ানুসাল্লি আ’লা- রসুলিহিল
কারিম,
আ’ম্মা বা’দ।
একমাত্র আল্লাহর যিকর-ই মানব মনের শান্তি
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيم
بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ
وَاذْكُر رَّبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعاً وَخِيفَةً وَدُونَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالآصَالِ وَلاَ تَكُن مِّنَ الْغَافِلِينَ
আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস ্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম; সকালে ও সন্ধ্যায়। আর বে-খবর থেকো না। [ সুরা আরাফ ৭:২০৫ ]
اتْلُ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنَ الْكِتَابِ وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ (যিকর) সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। [ সুরা আনকাবুত ২৯:৪৫ ]
যিকর আরবী শব্দ। বাংলায় এর অর্থ স্মরণ করা বা স্মরণ করানো।
যে কোন প্রকারে মনে, মুখে, অন্তরে, কর্মের মাধ্যমে, চিন্তার মাধ্যমে, আদেশ পালন করে
বা নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহর নাম, গুণাবলী,বিধিবিধান, তাঁর পুরস্কার,
শাস্তি ইত্যাদি স্মরণ করা বা করানোকে ইসলামের পরিভাষায় যিকর বা আল্লাহর যিকর বলা
হয়। ব্যাপক অর্থে ঈমান ও নেককর্ম সবই যিকর বলে গণ্য। বিশেষভাবে
মুখে বারংবার আল্লাহর নাম, গুণাবলি ইত্যাদি পাঠ যা জপ করার কুরআন-হাদীস নির্দেশিত
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহর তাকবীর, তাহলীল, প্রশংসা, গুণগান, দু'আ,
মুনাজাত, ইসতিগফার, দরুদ, সালাম ইত্যাদি সবই এই পর্যায়ের যিকর (সূত্রঃ সহীহ মাসনূন
ওযীফা: ড.খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, পিএইচডি(রিয়াদ), এম,এ(রিয়াদ),
এম,এম(ঢাকা), সহযোগী
অধ্যাপক, আল হাদীস বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, আস-সুন্নাহ
পাবলিকেশন্স, তৃতীয় পরিচ্ছেদ:যিকরের ওযীফা, পৃষ্ঠা:৩৫)।“বেলায়াতের পথের কর্ম দুই পর্যায়ের: ফরয
ও নফল । নফল পর্যায়ের যিকরকে বেলায়াতের পথে অন্য সকল নফল ইবাদতের চেয়ে অনেক বেশি
গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে হাদীস শরীফে। সর্বোপরি, আত্মশুদ্ধির জন্য কুরআন-হাদীসে
যিকরের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। “আব্দুল্লাহ
ইবনু বুসর (রা) বলেন: একব্যক্তি বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, ইসলামের বিধানাবলী আমার
জন্য বেশি হয়ে গিয়েছে। আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন-যা আমি মজবুত ভাবে আঁকড়ে ধরে
থাকব। তিনি বলেন: তোমার জিহবা যেন সর্বদা আল্লাহর যিকরে আর্দ্র (ভিজা) থাকে। (সুনানে তিরমিযী, কিতাবুদ দাওয়াত,
নং-৩৩৭৫, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/৯৬, ইবনু মাজাহ ৩৭৯৩, মুসতাদরাক হাকেম ১/৪৯৫,
হাইসামী, মাওয়ারিদুয যামআন৭/৩১২, প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৫)। অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বলেন:আমি কি তোমাদেরকে বলব
না তোমাদের জন্য সর্বোত্তম কর্ম কোনটি? তোমাদের প্রভূর নিকট সবচেয়ে পবিত্র,
তোমাদের জন্য সবচেয়ে উঁচু মর্যাদার কারণ, স্বর্ণ ও রৌপ্য দান করার চেয়েও উত্তম,
জিহাদের ময়দানে শত্রুর মুখোমুখি হয়ে শত্রু নিধন
করতে করতে শাহাদাত বরণ করার থেকেও উত্তম কর্ম কী তা-কি তোমাদেরকে বলব?
সাহাবীগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল, সেই কর্মটি কী? তিনি বললেন: আল্লাহর যিকর। মুআয ইবনু জাবাল (রা) বলেন,
আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর যিকরের চেয়ে উত্তম ইবাদত আর কিছুই
নেই। হাদীসটির সনদ হাসান। (মুসনাদ
আহমদ ৬/৪৪৬, হাইসামী,মাযমাউয যাওয়াইদ ১০/৭৩,৭৪, তিরমিযী ৫/৪৫৯, ৩৩৭৭,ইবনু মাজাহ
৩৭৯০, মুসতাদরাক হাকীম ১/৬৭৩, প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৬)। অন্য হাদীসে বলা হয়েছে: আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন
যে, বেশি বেশি আল্লাহর যিকর করার জন্য। আর আল্লাহর যিকরের উদাহরণ এমন যে, এক
ব্যক্তিকে শত্রুগণ ধাওয়া করে তার পিছে দ্রুত এগিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় লোকটি একটি
সুসংরক্ষিত দূর্গে এসে পৌঁছল এবং সে দূর্গের মধ্যে আত্মরক্ষা করল। অনুরূপভাবে
বান্দা আল্লাহর যিকর ছাড়া শয়তানের কবল থেকে রক্ষা পায় না। হাদীসটি সহীহ। (সহীহ ইবনু খুযাইমা ৩/১৯৫, মুসতাদরাক
হাকিম ১/৫৮২, আত তারগীব ২/৩৭০-৩৭১, প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৬)।
আল কুরআনের আলোকে
যিকরে ইলাহি
কাকে স্মরণ করবো? কি পরিমাণে স্মরণ
করবো? এ প্রসঙ্গে স্বয়ং আল্লাহতায়ালা ফরমানঃ “হে ঈমানদার গণ, তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে
স্মরণ কর”(সুরা আহযাব – ৪১)
কখন স্মরণ করবো? এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা
ফরমানঃ (ক)“সকাল-সন্ধ্যা তোমরা
রবের স্মরণ কর” (সুরা দাহার -২৫)।
(খ) “অতঃপর তোমরা যখন নামায সম্পন্ন
কর তখন দন্ডায়ামান, উপবিষ্ঠ
ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর” (সুরা নিসা ১৪২)।
কেন স্মরণ করবো? এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ফরমানঃ(ক) ওয়াকাব্বিরহু তাকবীরাঃ আল্লাহতায়ালার
মহানত্বকে দুনিয়াতে বুলন্দ করা, তুলে ধরা, প্রচার করা। এটাই পরম সত্য যে, আল্লাহু
আকবার, আল্লাহ সবচেয়ে বড়, সবচেয়ে মহান, আর তাঁর স্মরণও বড়।
(খ) “আল্লাহর স্মরণই (জিকির) সবচেয়ে বড়” (সুরা আনকাবুত
– ৪৫)।
(খ)“একমাত্র আল্লাহর যিকিরেই (মানুষের) ক্বলব(মন) প্রশান্তি লাভ করে”। (আল কুরআন)”
কিভাবে স্মরণ করবো? এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ফরমানঃ “তুমি স্বীয় অন্তকরণে তোমার প্রতিপালককে স্মরণ কর বিনয়ের সাথে এবং ভয়ের সাথে আরও
স্মরণ কর প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় উচ্চ স্বর ব্যতিরেকে নিন্ম স্বরে। আর গাফেলদের
অন্তর্ভূক্ত হয়ো না” (সুরা
আরাফু- ২০৫)।
কারা আল্লাহকে বেশি বেশি
স্মরণকারী?এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ফরমানঃতারাই জ্ঞানী
ব্যক্তি যারা দাঁড়ানো বসা এবং শোয়া অবস্থায় তথা সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ
করে (সুরা আল ইমরান – ১৯১)।
আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণের
জাযা (বদলা) কি?এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ফরমানঃ
(ক) তোমরা আমাকে স্মরণ করো,
আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো -১৫২”।
(খ)“আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণকারী এবং স্মরণ কারিণী, আল্লাহ তাদের জন্য মাগফিরাত ও প্রতিদানের ব্যবস্থা রেখেছেন” (সুরা আহযাব- ৩৫)।
আল হাদীসের আলোকে
যিকরুল্লাহর ফজিলত
সার্বক্ষণিক যিকরের ফজিলতঃ
(১) লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ
ছাড়া কোনো উপাস্য নেই)।–এই কালামের সংক্ষিপ্ত নাম কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ বা
তাহলীল। দ্বীন ইসলামে এটি
সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বপ্রথম যিকর।
জাবির
(রা) বলেন, “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: সর্বোত্তম যিকর লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ
এবং সর্বোত্তম দু'আ আলহামদুলিল্লাহ”। হাদীসটি সহীহ। (সুনানুত
তিরমিযী ৫/৪৬২, নং ৩৩৮৩, সুনানু ইবনু মাজাহ ২/১২৪৯,
নং ৩৮০০, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১২৬, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩২৬-৩২৯, মুসতাদরাক হাকিম
১/৬৭৬, ৬৮১।(প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৬)।।.
আবু
হুরাইরা (রা) বলেন, “রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বললেনঃ তোমাদের ঈমানকে নবায়ন কর। তাঁকে প্রশ্ন
করা হলোঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ, কিভাবে আমরা আমাদের ঈমানকে নবায়িত করবো? তিনি বললেনঃ
তোমরা বেশি বেশি লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলবে”। হাদীসটির সনদ হাসান অর্থাৎ
সুন্দর বা গ্রহণযোগ্য। (মুসতাদরাক হাকীম ৪/২৮৫, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/৫২, ২/২১১,
১০/৮২, আত-তারগীব ২/৩৯৪, প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৬)।
যিকর নং- ২. সুবহা-নাল্লা-হঃ অর্থঃ আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।
যিকর নং- ৩. আলহামদুলিল্লাহঃ প্রশংসা আল্লাহর জন্য
যিকর নং- ৪. আল্লাহু আকবারঃ আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ।
“উপরের যিকর চারটি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে
প্রিয় বাক্য। এগুলি পাঠ ও জপ করার সাওয়াব ও বরকত অপরিমেয়। দুই ভাবে এই যিকরগুলি
পালন করতে হয় :
(১)
গণনাবিহীনভাবে সদা সর্বদা জপ করে এবং
(২)
নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট সংখ্যায় জপ করে।
“মুমিন সর্বদা এই বাক্যগুলি জপ করার চেষ্টা করবেন। সর্বদা না পারলে
সুযোগমত বেশি বেশি জপ করবেন। এগুলির ফযীলত অনেক সহীহ ও হাসান হাদীসে বর্ণিত
হয়েছে।
এক
হাদীসে সামুরা ইবনে জুনদুব (রা) বলেন, “রাসূলুল্লাহ
(ﷺ) বলেছেনঃ আল্লাহর নিকট
সবচেয়ে প্রিয় বাক্য চারটি: সুবহা-নাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ,
লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ
এবং আল্লাহু আকবার। তুমি ইচ্ছামতো এই বাক্য চারটির যে কোন বাক্য আগে
পিছে বলতে পার”(সহীহ মুসলিম ৩/১৬৮৫, নং
২১৩৭, প্রাগুক্তঃ ৩৭)।
আবু হুরাইরা (রা)
বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “আমি সুবহা-নাল্লা-হ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার
বলতে এত বেশি পছন্দ করি যে, এগুলি বলা আমার কাছে পৃথিবীর বুকে
সূর্যের নিচে যা কিছু আছে, সবকিছু থেকে বেশি প্রিয়” (সহীহ মুসলিম ৪/২০৭২, নং
২৬৯৫)।
আবু
হুরাইরা (রা) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “তোমরা যখন জান্নাতের
বাগানসমূহে যাবে বা তা অতিক্রম করবে তখন তৃপ্তির সাথে বিচরণ ও ভক্ষণ করবে। আমি
বললাম, হে আল্লাহর রসূল, জান্নাতের বাগানসমূহ কি? তিনি বললেনঃ মসজিদসমূহ। আমি
বললাম, বিচরণ ও ভক্ষণ কি? তিনি
বললেনঃ সুবহা-নাল্লা-হ, আলহামদুলিল্লাহ, এবং আল্লাহু আকবার”। হাদীসটি হাসান (সুনানুত
তিরমিযী ৫/৫৩২, নং ৩৫০৯, আত তারগীব ২/৪২২, নং ২৩২৩,
মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯১)।
ইবনু
মাসউদ (রা), সালমান ফারিসী
(রা), আবু হুরাইরা (রা) ও ইবনু আব্বাস (রা)
বর্ণিত বিভিন্ন হাদীসে “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন যে, এই বাক্য চারিটির
প্রতিটি বাক্য একবার বললে জান্নাতে একটি করে বৃক্ষ রোপণ করা হয়” (ইমাম মুনযিরী, আত-তারগীব
২/৪০৭-৪০৮, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৮৮-৯০)।।.
আবু
যর (রা) ও আয়েশা
(রা) বর্ণিত বিভিন্ন হাদীসে “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: এই বাক্যগুলির
প্রত্যেক বাক্য একবার যিকর করা একবার আল্লাহর ওয়াস্তে দান করার সমতুল্য” (সহীহ মুসলিম ১/৪৯৮, নং ৭২০, ২/৬৯৭,
নং ১০০৬)।
আবু
সালমা (রা) থেকে বর্ণিত
হাদীসে “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ এই বাক্যগুলি কিয়ামতের দিনে বান্দার আমলনামায়
সবচেয়ে বেশি ভারী হবে (নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা
৬/৫০, মুসনাদ আহমদ ৩/৪৪৩, ৪/২৩৭, ৫/৩৬৫, তাবারানী,
আল-মুজামুল
কাবীর ২২/৩৪৮, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/৪৯, ১০/৮৮)।
আবু
হুরাইরা (রা) বর্ণিত হাদীসে
“রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ এই বাক্যগুলিই জাহান্নামের আগুন থেকে মুমিনের
ঢাল” (মুসতাদরাক হাকিম ১/৭২৫, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/২১২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৮৯, আত তারগীব ২/৪১৬ প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৭-৩৮)।.
আনাস
রাঃ বর্ণিত হাদীসে “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ গাছের ডালে ঝাকি দিলে যেমন পাতাগুলি
ঝরে যায় অনুরুপভাবে এই যিকরগুলি বললে বান্দার গোনাহ ঝরে যায়”।(মুসনাদু আহমদ ৩/১৫২, আত
তারগীব ২/৪১৮, প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৮)
আবু
হুরাইরা (রা) ও আবু সাঈদ (রা) উভয়ে “নবীয়ে
আকরাম (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেঃ আল্লাহ এই চারটি বাক্যকে
বেছে পছন্দ করে নিয়েছেন। এই বাক্যগুলির যে কোনো একটি বাক্য একবার বললে আল্লাহ
২০টি সাওয়াব প্রদান করবেন এবং ২০টি গোনাহ ক্ষমা করবেন। আর এভাবে যে বেশি বেশি
যিকর করবে সে মুনাফিকী থেকে মুক্তি লাভ করবে”।(নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/২১০, মুসনাদ আহমদ
২/৩১০, ৩/৩৫, ৩৭, মুসান্নাফু ইবনু আবী শাইবা ৬/১০৪, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১০৪, আত
তারগীব ২/৪১০, নং ২২৯৯,)।
আব্দুল্লাহ
ইবনু উমার রাঃ বর্ণিত হাদীসে “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ এই চারটি বাক্য যিকরকারী প্রতিটি
বাক্যের প্রতিটি অক্ষরের জন্য ১০টি করে সাওয়াব লাভ করবে”।(তাবারানী, আল-মু'জামুল আউসাত ৬/৩০৯, আল-মু'জামুল কাবীর
১২/৩৮৮, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯১, আত-তারগীব ২/৪২১)।
সাহাবীগণও
এ সকল বাক্য বেশি বেশি করে যিকর করতে
উৎসাহ প্রদান করেছেন। “আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাঃ
বলেনঃ সুবহা-নাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার বলা আমার নিকট আল্লাহর রাস্তায়
সমসংখ্যক স্বর্ণমুদ্রা ব্যয় করার চেয়েও বেশি প্রিয়”(মুসান্নাফু ইবনি আবী শাইবা ৬/৯২, ৭/১৭৬, ১৭৭, বাইহাকী, শুআবুল ঈমান ১/৪৪৭,
৪৪৮)।
“তিনি আরো বলেনঃ যে ব্যক্তি সম্পদ ব্যয়
করতে কৃপণতা বোধ করে, শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে ভয় পায় এবং রাত জেগে ইবাদত করতে
আলসেমি অনুভব করে, সে যেন বেশি বেশি করে লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল-হামদুলিল্লাহ
এবং সুবহা-নাল্লাহ বলতে থাকে। হাদীসটির সনদ সহীহ”(তাবারানী, আল-মু'জামুল কাবীর, ৯/২০৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯০, আত-তারগীব
২/৪২০-৪২১)।
যিকর নং ৫: লা-হাওলা ওয়ালা-ক্কুওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ।
“কোনো অবলম্বন নেই,
কোনো ক্ষমতা নেই আল্লাহ ছাড়া বা আল্লাহর সাহায্য ছাড়া”।
“এই বাক্যের বেশি বেশি যিকর বা জপ করার নির্দেশ অনেক হাদীসে বর্ণিত
হয়েছে।
এক
হাদীসে আবু সাঈদ খুদরী (রা) বলেন, “রাসূলুল্লাহ
(ﷺ) বলেছেন: তোমরা
বেশি বেশি করে 'চিরস্থায়ী নেককর্মগুলি' কর। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেনঃ এগুলি কি? তিনি
বললেনঃ তাকবীর (আল্লাহু আকবার), তাহলীল (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ), তাসবীহ
(সুবহা-নাল্লাহ), তাহমীদ (আল হামদু লিল্লাহ) এবং 'লা-হাওলা ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা
বিল্লাহ'। হাদীসটির সনদ হাসান”(মুসনাদ আহমদ ৩/৭৫, ৪/২৬৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১২১, মুসতাদরাক হাকিম
১/৬৯৪, ৭২৫, মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/২৪৭, ৭/১৬৬, ১০/৮৬, ৮৭, ৮৯, মাওয়ারিদুয যামআন
৭/৩৩৭-৩৩৯ প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৮)।
আবু
মুসা (রা), আবু হুরাইরা (রা), আবু যার (রা), মু'আয ইবনু জাবাল (রা), সা'দ ইবনু
উবাদাহ (রা) প্রমুখ সাহাবী থেকে বর্ণিত অনেকগুলি হাদীসে “রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমরা লা-হাওলা ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা
বিল্লাহ বলবে, কারণ এ বাক্যটি জান্নাতের ভান্ডারগুলির মধ্যে একটি ভান্ডার ও
জান্নাতের একটি দরজা” (সহীহ
বুখারী ৪/১৫৪১, ৫/২৩৪৬, ৫/২৩৫৪, ৬/২৪৩৭, ২৬৯০, সহীহ মুসলিম ৪/২০৭৮,মুনযিরী, আত
তারগীব ২/৪৩২-৪৩৬, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯৭-৯৯)
আবু আইউব আনসারী (রা) বলেন, “রাসূলুল্লাহ
(ﷺ)বলেছেন, মে'রাজের
রাত্রিতে ইবরাহীম (আঃ) আমাকে বলেনঃ আপনার উম্মতকে নির্দেশ দিবেন, তারা যেন বেশি
করে জান্নাতে বৃক্ষ রোপন করে......। জান্নাতের বৃক্ষ রোপন লা-হাওলা
ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলা”। হাদীসটির সনদ হাসান (মুসনাদে আহমদ ৫/৪১৮, আত তারগীব ২/৪৩৫,
মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯৭, প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৯)
আব্দুল্লাহ
ইবনু আমর (রা) বলেন, “রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বলেছেন, পৃথিবীতে যে কোনো ব্যক্তি যদি বলে:লা-ইলা-হা
ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার, ওয়া লা-হাওলা ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ (আল্লাহ
ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, আল্লাহ মহান, কোনো অবলম্বন নেই এবং কোনো ক্ষমতা নেই, আল্লাহর সাহায্য
ছাড়া), তবে তার সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়”। হাদীসটি
হাসান। (সুনানুত তিরমিযী ৫/৫০৯, নং ৩৪৬০, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৮২, তারগীব ২/৪১৮, নং
২৩১৪,প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৯)।
(৬) যিকর নং ৬: (সর্বদা পালনীয় ইসতিগফার)
“রাব্বিগ্ ফিরলী, ওয়া
তুব 'আলাইয়্যা, ইন্নাকা আনতাত তাওয়াবুল গাফূর”।
অর্থঃ “হে আমার প্রভু, আপনি
আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী ও
ক্ষমাকারী”(প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৯)। “সদা সর্বদা ও বেশি বেশি ইসতিগফার করতে বা
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে কুরআন ও হাদীসে বারংবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে”(প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৯)।
“রাসূলুল্লাহ
(ﷺ)বলেছেন, হে
মানুষেরা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবাহ কর। নিশ্চয় আমি একদিনের মধ্যে ১০০ বার আল্লাহর
নিকট তাওবা (ইস্তিগফার) করি”(সহীহ মুসলিম,
৪/২০৭৫, নং ২৭০২, প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৯)।
“আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (রা) বলেন, আমরা
গুণে দেখতাম, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এক মাজলিসেই (একবারের যে কোন বৈঠকের মধ্যে)
মাজলিস ত্যাগ করে উঠে যাওয়ার আগে ১০০ বার এই বাক্যটি (রাব্বিগ্ ফিরলী...গাফূর)
বলতেন” (সুনানুত তিরমিযী
৫/৪৯৪, নং ৩৪৩৪, সহীহ ইবনু
হিব্বান ৩/২০৬, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/১১৯। তিরমিযী হাদিসটিকে হাসান সহীহ
বলেছেন প্রাগুক্ত পৃঃ ৩৯)।
(৭) যিকর নং ৭ : (মাসনূন ইসতিগফার)
“আসতাগফিরুল্লা-হাল ('আযীমাল্)লাযী
লা-ইলা-হা ইল্লা হুআল হাইউল কাইউমু ওয়া আতুবু ইলাইহি”।
অর্থঃ “আমি মহান আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি, যিনি ছাড়া কোনো মা'বুদ নেই,
তিনি চিরন্জীব ও সর্ব সংরক্ষক এবং তাঁর কাছে তাওবা করছি”।
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা) বলেন, “রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বলেন, যদি কেউ এই
কথাগুলি তিনবার বলে, তাহলে তার গোনাহসমূহকে ক্ষমা করা হবে, যদি সে জিহাদের ময়দান
থেকে পালিয়ে আসার মতো কঠিন পাপও করে থাকে”। হাদীসটিকে হাকিম ও যাহাবী সহীহ বলেছেন” (মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৯২, ২/১২৮, সুনানু আবী দাউদ, ২/৮৫, নং
১৫১৭, প্রাগুক্ত পৃঃ ৪০) ।
(৮) যিকর নং ৮: সদা সর্বদা পালনের বিশেষ দু'আ
“আল্লা-হুম্মাগ্
ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, 'ওয়া আফিনী, ওয়ারযুকনী”।
অর্থঃ “হে আল্লাহ, আমাকে
ক্ষমা করুন, আমাকে দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমাকে সার্বিক নিরাপত্তা
ও সুস্থতা দান করুন এবং আমাকে রিযিক দান করুন (প্রাগুক্ত পৃঃ ৪০) ।
“সাহাবী আবু মালিক আশ'আরী (রা) তাঁর পিতা
সাহাবী আসিম (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন, কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁকে উপরের বাক্যগুলি (আল্লা-হুম্মাগ ফিরলী....ওয়ারযুকনী)
দিয়ে বেশি বেশি দু'আ করতে শেখাতেন”(সহীহ মুসলিম ৪/২০৭৩, নং ২৬৯৭, প্রাগুক্ত পৃঃ ৪০)।
سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ عَدَدَ
خَلقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ |
উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহী, 'আদাদা খ্বলক্বিহী, ওয়া-রিদ্বা নাফসিহী, ওয়া যিনাতা 'আরশিহী ওয়া মিদা-দা- কালিমা-তিহী। -সহিহ মুসলিম শরিফ : ৭০৮৮
|
অর্থ: আমি আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা ঘোষণা করছি, তাঁর সৃষ্টির সম সংখ্যক, তাঁর নিজের সন্তুষ্টি পরিমাণে,তাঁর আরশের ওজন পরিমাণে এবং তাঁর বাক্যের কালির সমপরিমাণ।
ফজিলতঃ উম্মুল মুমিনীন জুআইরিয়্যা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফজরের সালাতের পরে তাঁকে তাঁর সালাতের স্থানে যিকর রত অবস্থায় দেখে বেরিয়ে যান। এরপর তিনি অনেক বেলা হলে দুপুরের আগে ফিরে এসে দেখেন তিনি (উম্মুল মুমিনীন) তখনও ঐ অবস্থায় তাসবিহ তাহলিলে রত রয়েছেন। তিনি [রাসূলুল্লাহ (ﷺ)] বলেন: তুমি কি আমার যাওয়ার সময় থেকে এই পর্যন্ত এভাবেই যিকরে রত রয়েছ? তিনি বললেন: হাঁ। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন: আমি তোমার কাছ থেকে বেরিয়ে চারটি বাক্য তিনবার করে বলেছি (উপরের বাক্যগুলি)। তুমি সকাল থেকে এই পর্যন্ত যত কিছু বলেছ সবকিছু একত্রে যে সাওয়াব হবে, এই বাক্যগুলির সাওয়াব সেই একই পরিমাণ হবে।
(সহীহ মুসলিম ৪/২০৯০-২০৯১, নং ২৭২৬, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১১০, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ১/৪০২, ৬/৪৮-৪৯) (প্রাগুক্ত পৃঃ ৪৬)
ইমাম তিরমিযী অনুরূপ ঘটনা উম্মুল মুমিনীন সাফিয়্যাহ (রা) থেকেও বর্ণনা করেছেন। সাফিয়্যাহ (রা) বললেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার কাছে এসে দেখেন আমার সামনে চার হাজার বিচি রয়েছে যা দিয়ে আমি তাসবীহ বা সুবহানাল্লাহর যিকর করছি। তিনি বললেন: তুমি কি এতগুলির সব তাসবীহ পাঠ করেছ? আমি বললাম: "হাঁ"। তখন তিনি তাঁকে উপরের যিকরের অনুরূপ বাক্য শিখিয়ে দেন। (সুনানুত তিরমিযী ৫/৫৫৫, নং ৩৫৫৪। মুসতাদরাক হাকিম ১/৭৩২, প্রাগুক্ত পৃঃ ৪৬)।
(একেই বলে:অল্প আমলে বেশী নেকী!)
|
দরুদে ইব্রাহিম
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ
|
উচ্চারণ:: আল্লাহুম্মাঁ সল্লিআ’লা- মুহাম্মাঁদিউ ওয়া আ’লা- আ-লি মুহাম্মাঁদ, কামা- সল্লাইতা আ’লা- ইব্রাহিমা ও আ’লা- আ-লি ইব্রাহিম, ইন্নাঁকা হামিদুম্মাজী-দ। আল্লাহুম্মাঁ বা-রিক আ’লা- মুহাম্মাঁদিউ ওয়া আ’লা আ-লি মুহাম্মাঁদ, কামা বা-রকতা আ’লা- ইব্রাহিমা ও আ’লা- আ-লি ইব্রাহিম, ইন্নাঁকা হামিদুম্মাঁজিদ।
|
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (ﷺ) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর এই রূপ রহমত নাজিল করো, যেমনটি করেছিলে ইব্রাহিম ও তার বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (ﷺ) এবং তার বংশধরদের ওপর বরকত নাজিল করো, যেমন বরকত নাজিল করেছিলে ইব্রাহিম ও তার বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়।
|
حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيهِ تَوَكَّلتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ
الْعَظِيمِ
(দু:চিন্তা মুক্তির দু'আ-৭ বার)
|
হাসবিয়াল্লা-হু, লা- ইলাহা ইল্লা হুআ, 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়া হুয়া রাব্বুল 'আরশিল 'আযীম।
|
অর্থ : আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোনো মা'বুদ নেই, আমি তাঁরই উপর নির্ভর করেছি, তিনি মহান আরশের প্রভূ।
|
উম্মু দারদা (রা) বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে, "যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ৭ (সাত) বার এই আয়াতটি পাঠ করবে আল্লাহ তাঁর সকল চিন্তা, উৎকন্ঠা ও সমস্যা মিটিয়ে দেবেন। হাদীসটির সনদ মোটামুটি গ্রহণযোগ্য"। (সূত্রঃ সুনানু আবী দাউদ ৪/৩২১, নং ৫০৮১, তারগীব ১/২৫৫, নাবাবী, আল-আযকার, পৃ. ১২৭-১২৮, হিসনুল মুসলিম, পৃ. ৬১, প্রাগু্ক্ত পৃ. ৪৭)
|
رضيت بالله ربا وبالإسلام دينا وبمحمد نبيا
(আনন্দ লাভের দু'আ-৩ বার)
|
রাদীতু বিল্লা-হি রাব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যান"।
|
অর্থঃ "আল্লাহকে প্রভূ হিসাবে, ইসলামকে দীন হিসাবে ও মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে নবী হিসাবে গ্রহণ করে আমি সন্ত্তষ্ট ও খুশি হয়েছি"।
|
মুনাইযির (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি সকালে এই বাক্যগুলি বলবে, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করছি যে, তার হাত ধরে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব"। হাইসামী হাদীসটির সনদকে হাসান বলেছেন (সূত্রঃ মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১১৬, যাকারিয়্যা, আল-ইখবার ফীমা লা ইয়াসিহু) ।
অন্য হাদীসে অআবু সাল্লাম (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: "যদি কোনো ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় (বা সকালে বিকালে) এই বাক্যগুলি (৩বার) বলে, তবে আল্লাহর উপর হক্ব (নিশ্চিত) হয়ে যায় যে, তিনি উক্ত ব্যক্তিকে সন্ত্তষ্ট ও খুশি করবেন"। ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন (সূত্রঃ মাসনাদু আহমদ ৩৩৭, সুনানুত তিরমিযী ৫/৪৬৫, নং ৩৩৮৯, সুনানু ইবনু মাজাহ ২/১২৭৩, নং ৩৮৭০, বুসীরী, যাওয়াইদু ইবনি মাজাহ, পৃ. ৪৯৯, আলবানী, যয়ীফু সুনানি ইবনু মাজাহ, পৃঃ ৩১৬, মাজামাউয যাওয়াইদ ১০/১১৬, প্রাগুক্ত পৃঃ ৪৮)।
একটি সহীহ হাদীসে আবু সাঈদ খুদরী (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: "যে ব্যক্তি (রাদীতু বিল্লাহি..........)বলবে, তার জন্য জান্নাত পাওনা হয়ে যাবে"। এই হাদীসে এই বাক্যগুলি বলার জন্য কোনো সময় নির্ধারণ করা হয়নি। সর্বদা বা যে কোনো সময় আমরা এই দু'আ পাঠ করতে পারব। যাকিরের উচিত সকালে ও সন্ধ্যায় ৩ বার এবং অন্যান্য সময়ে সুযোগমত এই বাক্যগুলি বলা (সূত্রঃ সহীহ মুসলিম ৩/১৫০১, নং ১৮৮৪, সুনানু আবী দাউদ ২/৮৭, নং ১৫২৯, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৯৯, মাওয়ারিদুয যামঅআন ৭/৩৯৮-৪০০)।
|
No comments:
Post a Comment